Director Aniruddha Roy Chowdhury Interview

অন্য কোনও পরিচালককে নয়, হিংসে করি ভাল রাঁধুনি এবং গায়ককে: অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী

দীর্ঘ বিরতির পর আবার হিন্দি ছবি পরিচালনা করলেন অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী। ‘লস্ট’ মুক্তির আগে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে আড্ডায় পরিচালক।

Advertisement

অভিনন্দন দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:০১
Share:

চলতি বছরেই বাংলা ছবি পরিচালনা করবেন অনিরুদ্ধ। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: প্রথমেই জানতে চাই, ‘পিঙ্ক’-এর পর হিন্দি ছবি পরিচালনা করতে ৭ বছর সময় লাগল কেন?

Advertisement

অনিরুদ্ধ: কেউ যদি আমার ছবি অনুসরণ করেন, তা হলে তিনি জানেন যে, প্রতিটা ছবির মধ্যেই একটু বিরতি থাকে। ভাল মাংস রান্না করতে হলে ম্যারিনেশনের সময় প্রয়োজন। আমার ক্ষেত্রে সিনেমার চিত্রনাট্যও অনেকটা সে রকম। ভাল গল্প দানা বাঁধতে সময় লাগে।

প্রশ্ন: ‘লস্ট’-এর শুটিং তো আতিমারির আবহে করেছিলেন।

Advertisement

অনিরুদ্ধ: গল্পটা লেখার পর প্রায় ৩ বছর সময় নিয়েছি। এর মধ্যে বেশ কিছু চিত্রনাট্য লিখেছি। ওয়েবসিরিজ় পরিচালনা করেছি। হিন্দি ছবিটার শুটিং শেষ করলাম। সিনেমা কোনও ব্যবসা নয়, এটা একটা শিল্প। আর শিল্প তৈরি করতে গেলে সময় প্রয়োজন।

সম্প্রতি কলকাতায় ‘লস্ট’ ছবির প্রিমিয়ারে পরিচালক অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর সঙ্গে ইয়ামি গৌতম। — নিজস্ব চিত্র।

প্রশ্ন: ‘পিঙ্ক’ আপনাকে জাতীয় স্তরে পরিচিতি দিয়েছিল। ‘লস্ট’ থেকে প্রত্যাশা কী রকম?

অনিরুদ্ধ: দর্শকের ভালবাসা পাওয়া। তাঁদের যদি ছবিটা ভাল লাগে, তা হলে সেটাই শেষ কথা। তাঁদের একটা সহজ প্রতিক্রিয়াই যথেষ্ট, যে ছবিটা ভাল হয়েছে। বা আর একটু ভাল হতে পারত। আমরা ছবি করি গল্প বলার তাগিদে। তার পর সেটা মানুষের কাছে পৌঁছলে পরিচালকরা সব থেকে খুশি হন।

প্রশ্ন: ‘লস্ট’ ওটিটিতে মুক্তি পাচ্ছে। ‘পিঙ্ক’-এর মতো ছবিটা বড় পর্দায় মুক্তি পেলে কি বেশি খুশি হতেন?

অনিরুদ্ধ: আমি মূলত বড় পর্দাকে মাথায় রেখেই ছবি তৈরি করি। এ ক্ষেত্রেও তাই। অতিমারি পেরিয়ে এলাম। এতগুলো টাকা জড়িয়ে রয়েছে। প্রযোজকের কথাও তো ভাবতে হবে। বড় পর্দায় ছবি মুক্তি পেলে আমি সব থেকে খুশি হতাম। কিন্তু আজকে ওটিটির মাধ্যমে দেশের বাইরেও ছবিটা দর্শকের কাছে পৌঁছে যাবে।

‘লস্ট’ ছবির একটি দৃশ্যে ইয়ামি। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: ‘পিঙ্ক’-এর সিক্যুয়েল তৈরির কোনও পরিকল্পনা নেই?

অনিরুদ্ধ: দেখুন, আমি ব্যবসাদার নই! আমি কোনও প্রস্তাব থেকে ছবি করি না, করি তাগিদ থেকে। কোনও দিন সে রকম ভাবনা এলে তখন নিশ্চয়ই ভেবে দেখব।

প্রশ্ন: ‘বুনো হাঁস’ ছবিতে দেবকে নতুন ভাবে হাজির করেছিলেন। তার পর বাংলা ছবি থেকেও দীর্ঘ বিরতি। কোনও বিশেষ কারণ আছে?

অনিরুদ্ধ: সঠিক সময়ের অপেক্ষায় ছিলাম। এ বার থেকে বছরে একটা করে বাংলা ছবি পরিচালনার ইচ্ছে রয়েছে। ‘ক্যাফে কিনারা’ বলে একটা চিত্রনাট্য রয়েছে। লিখছেন শ্যামল সেনগুপ্ত (‘লস্ট’-এর চিত্রনাট্যকার)। হয়তো কয়েক মাসের মধ্যেই ফ্লোরে যাব।

প্রশ্ন: কিন্তু এই বিরতির জন্য কখনও মনে হয় না যে বাকিরা অনেকটা এগিয়ে গেল?

অনিরুদ্ধ: মানে হিংসে হয় কি না, তাই তো? দেখুন, আমি দু’জন মানুষকে হিংসে করি— যিনি দুর্দান্ত রান্না করেন এবং যদি যিনি ভাল গান গান কিংবা বাদ্যযন্ত্র ভাল বাজাতে পারেন। সে দিন শান্তনুর (মৈত্র) বাড়িতে এল সুব্রহ্মণ্যমের ছেলে, অসাধারণ বেহালা বাজাল। এই ক্ষমতাগুলো তো আমার নেই। বড্ড হিংসে হয়। সিনেমা কোনও প্রতিযোগিতার জায়গা নয়। আমি কারও সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেই। এটা তো রেসের মাঠ নয়, যে জেতাটাই একমাত্র লক্ষ্য!

প্রশ্ন: বিজ্ঞাপন থেকে ছবি, মুম্বইতে আপনার ব্যস্ততার কথা অনেকেই জানেন। হালের বাংলা ছবি দেখার সময় পান?

অনিরুদ্ধ: ‘টনিক’ আর ‘অপরাজিত’ দেখেছি। সাধারণত আমি প্রচুর ছবি দেখি। কিন্তু নিজের ছবি তৈরির সময় তার মধ্যে এতটাই ঢুকে থাকি যে অন্য কিছু দেখি না। গান শুনি কিন্তু ছবি বা সিরিজ় দেখি না। গত ছ-সাত মাস এটাই করেছি। আসলে হিন্দি ছবিটার প্রস্তুতি নিতে হত।

প্রশ্ন: পঙ্কজ ত্রিপাঠি এবং জয়া আহসানকে নিয়ে হিন্দি ছবিটা (কড়ক সিংহ) শেষ করলেন। ছবিটার মুক্তির কী পরিকল্পনা?

অনিরুদ্ধ: বাবা এবং মেয়ের সম্পর্ক নিয়ে খুব সুন্দর একটা গল্প। নামটা এখনও চূড়ান্ত নয়। সম্পাদনার কাজ চলছে। দেখা যাক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement