শুটিংয়ের ফাঁকে দেব-পাওলি
সোমবারের নিস্তরঙ্গ দুপুর। তবে সল্টলেকের বিখ্যাত মিষ্টির দোকানের সামনে ভিড় দেখে তা বোঝার উপায় নেই। উর্দি পরা পুলিশ বাহিনীর ভিড়, আশপাশের বাড়ির ব্যালকনি থেকে মহিলাদের উঁকিঝুঁকি, সব বয়সের মানুষ ঠায় দাঁড়িয়ে সুপারস্টার দেবকে দেখার জন্য। তবে দেবের এই লুকে তারকার জৌলুস নেই। সাধারণ শার্ট আর জিন্স, পাট করে আঁচড়ানো চুল, অভিনেতার হাতে ধরা বালতি, যার মধ্যে ঘর পরিষ্কারের যাবতীয় সরঞ্জাম! তিনিও চারপাশে চোখ ঘুরিয়ে জরিপ করছেন তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা।
লীনা গঙ্গোপাধ্যায় ও শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত ‘সাঁঝবাতি’র শুটিং চলছে। দেবের সঙ্গে প্রথম বার এই ছবিতে কাজ করছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। সল্টলেকের একটি পার্কে প্রাতঃভ্রমণের দৃশ্যের শট চলছিল। দৃশ্য শুরুর আগে পরিচালক লীনার তত্ত্বাবধানে কয়েক বার সংলাপ রিহার্স করে নিলেন দু’জনেই। প্রথম বার যখন সৌমিত্রর সঙ্গে শট দিয়েছিলেন, নার্ভাস ছিলেন? ‘‘হ্যাঁ, ছিলাম। খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি দৃশ্য ছিল। আমার পারফরম্যান্স খারাপ হলে উনিও সেরাটা দিতে পারবেন না। তাই একটা বড় দায়িত্বও ছিল,’’ শট দেওয়ার পরে বললেন দেব।
পার্কে যখন শুট চলছে, তখনও আশপাশে উৎসুক চোখের ভিড়। এক সময়ে আকাশের মুখ ভার হয়ে কয়েক ফোঁটা বৃষ্টিও পড়ল। ছাতা মাথায় শুট চলল কিছুক্ষণ। পরে আলাপচারিতার জন্য সৌমিত্র ও দেবকে যখন একসঙ্গে পাওয়া গেল, দেবের প্রশংসায় উচ্ছ্বসিত প্রবীণ অভিনেতা, ‘‘মানুষ হিসেবে ওর ব্যবহার সুন্দর, উষ্ণ, সৌজন্যমূলক।’’ দেবের ছবি দেখেছেন কখনও? ‘‘গোটা ছবি দেখার অবসর হয়নি। স্নিপেট দেখেছি। দেবের চেহারা আমার পছন্দের। ওর নাচটাও দেখেছি,’’ বললেন সৌমিত্র।
দেব-সৌমিত্র
এই ছবিতে শুধু দেব নয়, পাওলিও সাধারণ চরিত্রে। ‘‘কেরিয়ারের এই পর্যায়ে এমন একটা চরিত্র আমার কাছে বড় সারপ্রাইজ়, আবার চ্যালেঞ্জও। এই চরিত্রটি যা করে সবই হৃদয় দিয়ে, মাথা খাটিয়ে নয়,’’ বললেন অভিনেত্রী।
মিষ্টির দোকানের সামনে দেবের সঙ্গে শুট চলছিল পাওলি ও সোহিনী সেনগুপ্তের। ‘‘আমার চরিত্রটি এমন এক জনের যে এই বাড়ির কর্ত্রীর জায়গা পেতে পারত, কিন্তু পায়নি। তবে ন্যারেটিভে গুরুত্বপূর্ণ,’’ বললেন সোহিনী।
নুডল-ব্রেক
ঘুরে ঘুরে রাস্তায় শুটিং। তাই ইউনিট-প্রোডাকশনকে একসঙ্গে জড়ো করতে সময় একটু বেশিই লাগছিল। তবু দেব-পাওলিকে একসঙ্গে দেখতে দর্শকের ভিড় হালকা হয়নি। পার্কের সামনে বসে থাকা ঠেলা গাড়ি থেকে চাউমিনের প্লেট হাতে পোজ় দিলেন দুই তারকা। সেই দোকানির চোখেমুখে যতটা খুশি, ততটাই উচ্ছ্বল তাঁরাও। আর শুধু পোজ় দেননি, দু’-চার চামচ চেখেও দেখেছেন। আগাম রোলের অর্ডারও দিয়ে রাখলেন দেব।
ছবি: অর্পিতা প্রামাণিক