বলিউডে তাঁকে পরভিন ববির সঙ্গে তুলনা করা হয়। ছোট এবং বড় পর্দায় একসঙ্গে কাজ করে চলেছেন আজও। জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর আর্থিক অবস্থা যথেষ্ট স্বচ্ছল।
কিন্তু এই বলিউড অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবনের একটি ঘটনা সকলকে অবাক করে তুলেছিল। মাত্র ৫০০ টাকার জন্য তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেছিলেন!
তিনি দীপশিখা নাগপাল। দীপশিখার জন্ম ১৯৬৮ সালে। তাঁর বাবা ছিলেন পরিচালক এবং লেখক। মা ছিলেন অভিনেত্রী।
ফলে ছোট থেকেই তিনি অভিনয়ের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু প্রথমে দীপশিখার কোনও আগ্রহ ছিল না অভিনয়ে। বরং তাঁর বোন অভিনেত্রী হতে চেয়েছিলেন।
কলেজে পড়ার সময় একটি ফ্যাশন শো-এর মাধ্যমেই মূলত তাঁর বিনোদন জগতে পা পড়ে। তাঁর কলেজের ওই ফ্যাশন শো-এর এক প্রতিযোগী চূড়ান্ত দিনে কলেজে এসে পৌঁছননি।
ঘটনাচক্রে ওই দিন কলেজে দর্শকাসনে থাক দীপশিখাকেই ফ্যাশন শো-এ অংশ নিতে হয়েছিল। কোনওরকম প্রস্তুতি ছাড়াই দীপশিখা সকলকে তাক লাগিয়ে দেন।
মূলত এর পর থেকেই মডেলিংয়ের ডাক পেতে শুরু করেন তিনি। কলেজে পড়ার সময় মডেলিং করে ভাল উপার্জন করতে শুরু করেন। ক্রমে গ্ল্যামার দুনিয়া ভাল লাগতে শুরু করে তাঁরও।
১৯৯৪ সালে দেব আনন্দের পরিচালনায় ‘গ্যাংস্টার’-এ একটি ছোট চরিত্রে সুযোগ পান তিনি। ছবিটি এতটাই খারাপ ফল করেছিল যে দীপশিখা কারও নজরেই আসেননি।
তবে দর্শকদের নজরে না পড়লেও রূপের জন্য দীপশিখা অনেক পরিচালকের নজরে পড়তে শুরু করেছিলেন ইতিমধ্যেই।
পরের বছরই রাকেশ রোশন তাঁকে নিজের ছবিতে নিতে চান। শাহরুখ এবং সলমনের সঙ্গে তাঁর কাজের সুযোগ করে দেন। কিন্তু সে ছবির স্ক্রিপ্ট পছন্দ হয়নি দীপশিখার। তাই রাকেশের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।
জীবনে এটাই ছিল তাঁর সবচেয়ে বড় ভুল। কারণ ছবিটি ছিল ‘কর্ণ অর্জুন’। সলমনের বিপরীতে মমতা কুলকার্নির জায়গায় তাঁকে ভেবেছিলেন পরিচালক। ছবিটি ব্যাপক সাফল্য পায়।
১৯৯৭ সালে শাহরুখের ‘কয়লা’ ছবিতে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। এই সময়ই আবার টেলি ধারাবাহিক ‘শক্তিমান’-এ সুযোগ পেয়ে যান তিনি। ‘শক্তিমান’ এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল যে দীপশিখার প্রসঙ্গ এলে ‘শক্তিমান’-এর কথাই প্রথম সামনে আসে।
এ ভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন দীপশিখা। ছোট, বড় বহু ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। ধারাবাহিকেও সমান জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তাঁর কাজের রাস্তা কোনও দিনই খুব কঠিন ছিল না। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে বহু ওঠাপড়া রয়েছে তাঁর।
১৯৯৭ সালে জিত্ উপেন্দ্র নামে এক দক্ষিণী অভিনেতাকে বিয়ে করেন তিনি। তাঁদের দুই সন্তানও রয়েছে। কিন্তু বিয়ের ১০ বছর পর তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। দুই সন্তান দীপশিখার কাছেই থাকে। ২০১১ সালে তাঁর জীবনে আরও একটি নতুন মোড় আসে।
ওই বছর অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনাতেও হাত দিয়েছিলেন তিনি। ‘ইয়ে দূরিয়াঁ’ নামে একটি ছবি পরিচালনা করেন তিনি। এটুকু বললে অবশ্য ভুলই বলা হয়। কারণ, ছবিটির ডায়ালগ, স্ক্রিপ্ট, পরিচালনা, পোশাক নির্বাচন-সহ একাধিক বিভাগ একা হাতে সামলেছিলেন তিনি। আবার ওই ছবিতে অভিনয়ও করেছিলেন।
ওই ছবির নায়ক কেশব অরোরার সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি। দীপশিখার দুই সন্তানকে আপন করে নেন কেশব। কিন্তু ৪ বছরের মধ্যেই তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরে। একে অপরের উপর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ এনে আলাদা থাকতে শুরু করেন।
দীপশিখার বাড়ি থেকে তাঁর যাবতীয় জামাকাপড় আনতে গিয়েছিলেন কেশব। তাঁর কাছে কোনও ব্যাগ ছিল না। তাই দীপশিখার কেনা বিছানার চাদরে সমস্ত কিছু প্যাকিং করেছিলেন।
এতেই রেগে যান দীপশিখা। পুলিশের কাছে ৫০০ টাকার চাদরের জন্য স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগও করেন তিনি।