দেবাশিসের ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্র বা গায়কিতেও কি সেই ছোঁয়া পাবেন দর্শক-শ্রোতা? অভিনেতার কথায়, ‘‘কিছু কিছু আভিজাত্যের অলঙ্কার বনেদিয়ানা। সেখানে আধুনিকতার ছোঁয়া না লাগাই ভাল। তাতে সৃষ্টি নষ্ট হয়। রবি ঠাকুরের গানও তেমনই। তাই তাঁর ঘরানাকেই হুবহু অনুসরণ করেছি প্রতিটি গানে।’’
দেবাশিস রায়চৌধুরী
লোভ, বিলাসিতা আর অপ্রতুল প্রয়োজন থেকেই প্রকৃতিকে ধ্বংস করছে মানুষ। পাশাপাশি, অমানবিকতা, হিংস্রতা ক্রমশ গ্রাস করছে সভ্যতাকে। মানুষের এই প্রবৃত্তি ঋষি বাল্মীকির আমলেও ছিল। তিনি নিজে পশু হত্যা করতেন, নরবলি দিতেন। আজও মানুষে মানুষে হানাহানি বর্তমান। এর পরিণাম কী ভয়ঙ্কর। প্রকৃতি নানা ভাবে মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে। মানব সভ্যতা বোঝেনি। তারই সাম্প্রতিক প্রতিফলন করোনা অতিমারির দাপট। তবু কি বুঝেছে? বিনোদন অনেক সময়েই সেই উপলব্ধির হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। সেই আশা নিয়েই ৪০ মিনিটের ছবি ‘জ্যোতির্গময়ো’তে পরিচালক, অভিনেতা দেবাশিস রায়চৌধুরী তুলে ধরেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অপেরা ‘বাল্মিকী প্রতিভা’র সেই অংশ, যেখানে প্রকৃতি সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে।
আনন্দবাজার অনলাইনকে দেবাশিস জানিয়েছেন, বিশ্বকবির প্রথম অপেরা থেকে তিনি বেছে নিয়েছেন প্রদর্শিত গুরুত্বপূর্ণ অংশটি। কারণ, মানব সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখতে গেলে পরিবর্তন প্রয়োজন। ঠিক যে ভাবে দস্যু রত্নাকর ঋষি বাল্মীকিতে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। দেবাশিসের দাবি, ‘‘সবার কাছে বার্তা পৌঁছে দিতে দস্যু রত্নাকর আমার হাতিয়ার। তাই আমি একক ভাবে সেই চরিত্র ফুটিয়েছি। অন্য চরিত্রদের না এনে। তবে তাদের কণ্ঠস্বর শোনা যাবে।’’
রবি ঠাকুর সেই সময় সদ্য ফিরেছেন বিদেশ থেকে। স্বাভাবিক ভাবেই সেখানকার সংস্কৃতি তাঁর উপরে প্রভাব ফেলেছিল। কবির রচিত অপেরায় তার ছাপ স্পষ্ট। নৃত্যনাট্য নয়, অভিনেতারাই নিজের চরিত্রের গান গাইবেন। এ আদলেই ‘বাল্মীকি প্রতিভা’ রচিত। সেই অনুযায়ী, অভিনেতা-পরিচালক নিজের কণ্ঠে প্রতিটি গান গেয়েছেন। রবীন্দ্র গানেও এখন উত্তর আধুনিকতার ছোঁয়া। দেবাশিসের ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্র বা গায়কিতেও কি সেই ছোঁয়া পাবেন দর্শক-শ্রোতা? অভিনেতার কথায়, ‘‘কিছু কিছু আভিজাত্যের অলঙ্কার বনেদিয়ানা। সেখানে আধুনিকতার ছোঁয়া না লাগাই ভাল। তাতে সৃষ্টি নষ্ট হয়। রবি ঠাকুরের গানও তেমনই। তাই তাঁর ঘরানাকেই হুবহু অনুসরণ করেছি প্রতিটি গানে।’’ নিবেদনে ভাবনা রেকর্ড। সংস্থার ইউটিউব চ্যানেলে ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে ছোট ছবি ‘জ্যোতির্গময়ো’।