দেবশ্রী রায়
অস্থির সময়। অতিমারির দাপট কমেনি। জীবন-জীবিকাতেও স্থিতি আসেনি। এমন অবস্থায় ১০ বছর পরে টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে ফিরছেদেবশ্রী রায়। একটা সময় যে টলিউড শাসন করত। দেবশ্রীর প্রত্যাবর্তন মানেই কি বাকিদের রুজি-রুটিতে টান ধরা? এই ভয় দানা বেঁধেছে অনেকের মনে। সেই ভয় থেকেই নেটমাধ্যমে আমার নামে এত কুৎসা। আমার বয়স তুলে কটাক্ষ। ‘বাসি রসগোল্লা’, ‘মাসি’-র তকমা দেওয়া। কী বলব? আমি মুখে বলার চেয়ে কাজে করে দেখানোয় বিশ্বাসী। আগামী দিনেও সেটাই করব। শত্রুরা সাবধান, আমি কিন্তু আপনাদের চাল ধরতে পেরে গিয়েছি।
কী ভাবছেন? এ ভাবে আমার মনোবল ভেঙে দেবেন? সে গুড়ে বালি। বরং, আপনারা আমায় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। আমি সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলাম। আমি যতখানি মনপ্রাণ ঢেলে অভিনয় করতাম, এ বার তার চেয়েও দশ গুণ বেশি খাটব। আনন্দবাজার অনলাইনকে এর আগেই বলেছি, ক্যামেরার সঙ্গে সখ্যতা আমার প্রায় জন্মের সময় থেকে। আমি যত ভাল ক্যামেরা বুঝি, ক্যামেরাও আমায় ঠিক ততটাই ভাল চেনে। তাই আমার অভিনীত প্রতিটি ছবিতেই আমি সুন্দরী। যদিও আপনারা নেটমাধ্যমে লিখেছেন, ‘রূপ নিয়ে অহংকার করো না মাসি...’! আমি কিন্তু কোনও দিন রূপ নিয়ে অহঙ্কার করিনি। আমায় যদি সত্যিই খুব সুন্দর দেখতে লাগে তার পিছনে রয়েছেন আবার বাবা। বাবা ভীষণ সুপুরুষ ছিলেন। আমি তাঁর কিছুটা অংশ পেয়েছি।
শুধু রূপ কেন, আমার গুণ, কাজকর্ম কোনও কিছু নিয়েই আমার অহঙ্কার নেই। নতুন করে প্রমাণ করারও কিছু নেই। বলিউড আমায় ভালবাসে, সম্মান করে। আমার অভিনয় আমায় জাতীয় পুরস্কার এনে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিও পেয়েছি। রাজ্যজুড়ে এক ডাকে সবাই চেনেন। দর্শকেরা প্রচণ্ড ভালবাসেন। আপনাদের অসভ্যতা আমার কোনটা কাড়বে? অনুরাগীর সংখ্যা, নাকি ভালবাসা? বলিউডে রেখার নামে প্রচুর গুঞ্জন, বদনাম। তার পরেও রেখার জনপ্রিয়তায় বিন্দুমাত্র চিড় ধরেনি। তাই এ সবে আমিও ভয় পাচ্ছি না। মাথাও ঘামাচ্ছি না। বরং ভাল লাগছে। আমি এখনও কত প্রাসঙ্গিক! বেশ কিছু নেটাগরিক আমার দৌলতে বিখ্যাত হয়ে গেলেন।
আন্তরিক ধন্যবাদ ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়, প্রযোজক স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে। আপনারা আমার হয়ে মুখ খুলেছেন। আগামী দিনে নেটমাধ্যমে এই অসভ্যতামির প্রতিবাদ হবে কি? জানি না। তবে অবাক হয়েছি, এক জন অভিনেত্রীও এখনও পর্যন্ত টুঁ শব্দ করলেন না! যদিও দেবশ্রী রায় এ সবের পরোয়া করে না। কেউ প্রতিবাদ জানালেন, মুখ খুললেন, পাশে দাঁড়ালেন... ভাল। না দাঁড়ালে আরও ভাল। দেবশ্রী বরাবর নিজের লড়াই নিজেই লড়ে এসেছে। আরও এক বার না হয় লড়াই করেই নিজের ছেড়ে যাওয়া জায়গা দখল করব।