কটাক্ষ দেবশ্রীকে, সমালোচকদের তোপ স্নেহাশিস, ভাস্বরের
‘রূপ নিয়ে অহংকার কোরো না মাসি, ৯০-এর সেরা রসগোল্লাও আজ বাসি’....
জি বাংলায় ‘সর্বজয়া’ ধারাবাহিকের প্রচার ঝলক মুক্তি পাওয়ার পরেই এই ধরনের কুৎসিত মন্তব্যে ছয়লাপ নেটমাধ্যম। নেটাগরিকদের আক্রমণের মূল লক্ষ্য এই ধারাবাহিকের মুখ্য অভিনেতা দেবশ্রী রায়। ১৯৯০-এর দশকে দেবশ্রী অভিনীত ‘রক্তে লেখা’ ছবির ‘কলকাতার রসগোল্লা’ গান সেই সময় মুখে মুখে ফিরত। দেবশ্রীকে কুৎসিত ভাষায় কটাক্ষ করার খবর প্রথম এনেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। সেই শুরু। সম্প্রতি, অভিনেত্রীর বয়স নিয়ে নেটাগরিকেরা ফের জঘন্য ভাষায় আক্রমণ করতেই প্রতিবাদে সরব অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়, ধারাবাহিকের প্রযোজক স্নেহাশিস চক্রবর্তী। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে ভাস্বরের ক্ষোভ, সময় একটুও এগোয়নি। নইলে বয়স নিয়ে, গায়ের রং নিয়ে কেন বারে বারে মেয়েদেরই আক্রমণের মুখে পড়তে হয়? আনন্দবাজার অনলাইন থেকে প্রথম ঘটনাটি জেনেছেন স্নেহাশিস। তাঁর ভর্ৎসনা, যাঁরা জাতীয় পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রীকে এ ভাবে অপমান করছেন, তাঁদের জন্য করুণা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে যদিও মুখ খোলেননি দেবশ্রী।
১০ বছর রাজনীতি করার পর দেবশ্রী সদ্য অভিনয়ে ফিরেছেন স্নেহাশিস চক্রবর্তীর ব্লু’জ প্রোডাকশনের ‘সর্বজয়া’ ধারাবাহিকের হাত ধরে। ধারাবাহিকের প্রচার ঝলক প্রকাশ্যে আসতেই প্রথমে তাঁকে কটাক্ষ করা হয়, ‘শ্রীময়ী’ ধারাবাহিকের সঙ্গে তুলনা করে। নেটাগরিকদের দাবি, ‘শ্রীময়ী’ চরিত্রের নকল ‘সর্বজয়া’। সেই চরিত্রে অভিনয় করছেন দেবশ্রী। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই তাঁর বয়স নিয়ে কটাক্ষ করে তাঁকে বলা হয় ‘বাসি রসগোল্লা’! এ বার নেটাগরিকদের সরাসরি আক্রমণ, ‘বৌমা-র বদলে দেবশ্রী রায়ের শাশুড়ির চরিত্রে অভিনয় করা উচিত’। এখানেই আপত্তি জানিয়েছেন ভাস্বর। নেটমাধ্যমে মঙ্গলবার তিনি সরাসরি বলেছেন, সলমন খান, শাহরুখ খান যখন তাঁদের হাঁটুর বয়সি অভিনেত্রীদের সঙ্গে অভিনয় করেন, তখন সমস্যা নেই। যত সমস্যা নায়িকাদের নিয়ে! আনন্দবাজার অনলাইনের কাছেও তাঁর ক্ষোভ, ‘‘পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ‘বয়স্ক নায়ক’ মেনে নিলেও অভিনেত্রীদের ক্ষেত্রে এখনও যথেষ্ট রক্ষণশীল। তাঁদের বয়স, গায়ের রং সাধারণের চর্চার বিষয়।’’ একই সঙ্গে মন্তব্য বিভাগে মহিলা নেটাগরিকদের সংখ্যাগরিষ্ঠতায় হতবাক ভাস্বর। অভিনেতার ব্যঙ্গ, মেয়েরাই মেয়েদের প্রধান শত্রু, এ কথা ২১ শতকেও ঘোর বাস্তব।
কী বলছেন ‘সর্বজয়া’ ধারাবাহিকের প্রযোজক? ভাস্বরকে আন্তরিক ধন্যবাদ দেওয়ার পাশাপাশি স্নেহাশিসের তোপ, ‘‘নেটমাধ্যম সাধারণের হাতের মুঠোয় চলে আসার পর থেকে সেটি এতটাই সহজলভ্য যে, যে কেউ তাতে মন্তব্য করে দিতে পারেন।’’ তাই বিষয়টি খারাপ লাগলেও তিনি গুরুত্ব দিতে নারাজ। পরিবর্তে তাঁর আফসোস, জাতীয় পুরস্কার জয়ের পরেও দেবশ্রীকে নিয়ে এই ধরনের মন্তব্য করতে বাধছে না মানুষের। স্নেহাশিসের দাবি, তিনি দেবশ্রীর উপযুক্ত চরিত্রই দিয়েছেন তাঁকে। অভিনেত্রীও চিত্রনাট্য শোনার পরেই রাজি হয়েছেন। ফলে, বিষয়টি নিয়ে কোথাও কোনও দ্বন্দ্ব নেই।
পাশাপাশি স্নেহাশিসের যুক্তি, নেতিবাচক প্রচার অনেক সময়েই দর্শকদের আশীর্বাদে ইতিবাচক হয়ে ফেরে। তাঁর আশা, সেটিই হতে চলেছে তাঁর আগামী ধারাবাহিক ‘সর্বজয়া’র ক্ষেত্রে।