নতুন করে প্রেমে পড়তে চাইছেন দেবালয়!
বিয়ের বহু বছর পার। ছেলের বয়স ১৫। নতুন করে নাকি প্রেমে ফিরতে চাইছেন দেবালয় ভট্টাচার্য!
কেন? বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা, মুক্তির পথে দেবালয় ভট্টাচার্যের প্রথম হিন্দি সিরিজ ‘পিআই মিনা’। খবর, বৃহস্পতিবার রাতেই উদযাপনের মেজাজে প্রযোজনা সংস্থা অ্যামাজন। দেবালয় আনন্দে মেঘমুলুকে! এ দিকে সিরিজের কাস্টিং ডিরেক্টর অনিমেষ বাপুলি আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, দেবালয়কে প্রচণ্ড লড়াই করে পুরো সিরিজটা বানাতে হয়েছে। তাই কি তিনি রহস্য-রোমাঞ্চ ছেড়ে প্রেমে ফিরতে চাইছেন? জানতে চাইতেই পরিচালকের যুক্তি, ‘‘একের পর এক রহস্য রোমাঞ্চ ছবি, সিরিজ বানিয়ে চলেছি। একটা বিশুদ্ধ প্রেমের ছবি বানানো যেতেই পারে। বাংলা ছবিতে ভালবাসার গল্প অনেক দিন বলা হয়নি।’’
সিরিজের নাম প্রথমে ঠিক হয়েছিল ‘দ্য গার্ল’। বলিউড অভিনেতাদের সঙ্গে তাতে কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে কাজ করেছেন টলিউডের এক ঝাঁক অভিনেতা, কলাকুশলী। মুখ্য ভূমিকায় ‘আ স্যুটেবল বয়’-খ্যাত তানিয়া মানিকতলা। তাঁর সঙ্গী পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, যিশু সেনগুপ্ত। সম্ভবত, এই প্রথম বলিউডে একসঙ্গে পর্দা ভাগ করলেন তাঁরা। এ ছাড়াও সিরিজে দেখা যাবে সাহেব চট্টোপাধ্যায়, সৌরভ দাস, চান্দ্রেয়ী ঘোষ-সহ কলকাতার ৭০ জন অভিনেতাকে।
কাস্টিং ডিরেক্টর অনিমেষের বক্তব্য, ‘পিআই মিনা’ সিরিজ তৈরির নেপথ্যে নাকি গল্প প্রচুর। কম করে দেড় হাজার অভিনেতা কাজ করেছেন। সময়টা ২০১৯-এর শীত। তখন অতিমারি যায়নি পুরোপুরি। প্রতি দিন প্রায় একশো জন শিল্পীর করোনা পরীক্ষা করে শ্যুট হত। সপ্তাহে দু’দিন বরাদ্দ থাকত কোভিড পরীক্ষার জন্য। তিন বার শিল্পী বদল হয়েছে পরিস্থিতির চাপে। নায়িকা থেকে পরিচালক হয়ে কলাকুশলী— কেউই রোগের হাত থেকে ছাড় পাননি। করোনা পরীক্ষা করতে গিয়ে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে, সেই টাকা দিয়ে নাকি একটি বাংলা ছবি বানানো যায়!
ছবির গল্পেও অতিমারির ছায়া। অতি প্রাচীন এক জীবাণু ফের অতি সক্রিয়। যার জেরে আচমকা মৃত এক দল মানুষ। অতিমারির হদিশ পেতে মিনা প্রথমে মুম্বই থেকে কলকাতা আসে। সেখান থেকে দেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে পৌঁছয়। কী ভাবে অতিমারি ছড়াল? ছড়াল না ছড়ানো হল? সেই রহস্যই ভেদ করবে মিনা। সিরিজের শ্যুট হয়েছে কলকাতা, মুম্বই, সিকিমে।
লেখক, সাহিত্যিকেরা নাকি দূরদ্রষ্টা। অনেক পরের ঘটনা বহু আগে মানসচক্ষে দেখতে পান। দেবালয়ের দাবি, তাঁর প্রথম হিন্দি সিরিজের ক্ষেত্রেও নাকি সেটাই ঘটেছে। অরিন্দম মিত্রের এই গল্প অতিমারির বহু আগে লেখা। কাকতালীয় ভাবে যখন তিনি বেছেছেন, পরিস্থিতির সঙ্গে নিখুঁত ভাবে মানিয়েও গিয়েছে। এবং মুক্তি পাচ্ছে এমন সময়ে, যখন করোনার চতুর্থ ঢেউ ফের দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে। রসিকতাও করেছেন পরিচালক— ‘‘পরমব্রত-যিশু দু’জনেই অবাঙালি নায়িকার বিপরীতে। কিন্তু তানিয়ার পদবিতে মানিকতলা। তাই আমার খুব প্রিয়!’’
এ বার কি তবে টলিউড-বলিউড দু’জায়গাতেই ব্যাটিং করবেন দেবালয়? পরিচালকের যুক্তি, ‘‘বাংলাতেই বেশি থাকব। পাশাপাশি, বলিউডেও কাজ করব। বলিউড নিজেকে মেপে নেওয়ার আদর্শ মাপকাঠি।’’ তাঁর মতে, বলিউড অবাক বাংলার অভিনেতা, কলাকুশলীদের ধৈর্য, পরিশ্রম, বুদ্ধি, দ্রুত কাজ তুলে দেওয়ার পদ্ধতিতে। একই সঙ্গে তিনিও প্রথম হিন্দি সিরিজ বানাতে গিয়ে বুঝেছেন, কোন জায়গায় এখনও খামতি রয়ে গিয়েছে তাঁর। দেবালয় ‘বনগাঁ-এ শিয়াল রাজা’ হয়ে থাকতে চান না মোটেই!