মুখ্যমন্ত্রী কাছে পুজোয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ না করার আবেদন জানালে সঙ্গীতশিল্পীরা ।
দুর্গাপুজো হচ্ছে। কলকাতায়, জেলাতেও।তবে ভিড়ের কারণে সংক্রমণ যাতে না বাড়ে, তার জন্য এ বার বেশ কিছু নিয়ম, নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে হবে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই নিয়মের সূত্র ধরেই এ বার পুজোয় কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারের এই নির্দেশে রুজি-রুটি নিয়ে আশঙ্কা বেড়েছে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির।
যেমন সঙ্গীতশিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র আনন্দবাজার ডিজিটালকে বললেন, “আমি সঙ্গীতজগতের সব মানুষের হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি, উনি যেন পুজোর সময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ না করেন। ওঁর নির্দেশে কড়া নিয়ম মেনেই আমরা অনুষ্ঠান করব। আর এমনিতেও সামাজিক দূরত্বের কথা যদি ভাবি, মঞ্চ আর দর্শকের দূরত্ব তো থাকেই।”
ফেসবুকেও সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আরম্ভ করার আবেদন জানিয়েছেন লোপা। ইতিমধ্যেই তাঁর পোস্ট ভাইরাল। শুধু সঙ্গীতশিল্পী নয়, আলোর লোক থেকে শব্দের মানুষ, সকলের হয়ে অনুষ্ঠান আরম্ভ করার কথা ভেবেছেন লোপা। যাত্রা, নাটকের মঞ্চও যাতে এ বার দর্শকদের জন্য খুলে যায়, সেই অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।করোনাকালে, কোনও শিল্পী তহবিল তৈরি করে সুরাহা হবে না বলে বিশ্বাস করেন লোপা। তিনি বললেন, “এত শিল্পী! পরিবার পিছু কত টাকাই বা দিতে পারব আমরা? তাঁর চেয়ে কাজ চালু হোক। এটাই একমাত্র পথ।”
আরও পড়ুন: তুলনা হত কিশোর-রাজেশের সঙ্গে, কেন ভেঙে গেল সলমন-বালাসুব্রহ্মণ্যমের জুটি
লোপামুদ্রার ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করেছেন মনোময় ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়: “আর কয়েক মাসের অপেক্ষা হয়তো, আমরা শিল্পীরাও সুখবর পাব। আমাদের মঞ্চে গান গাওয়ার সুযোগ আসবে। বুঝতে পারছি সকলের খুব অসুবিধে হচ্ছে। সরকারে নির্দেশের জন্যই অপেক্ষা করে আছি।’’
শুধু লোপামুদ্রা, মনোময় নন, রূপঙ্কর থেকে ইমন চক্রবর্তী, সকলেই বিশ্বাস করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিল্পী মহলের প্রতি সংবেদনশীল। তাঁর কাছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ না করার আবেদন জানালে তিনি করোনার পর থেকে শিল্পীদের অবস্থার কথা মাথায় রেখে কোনও না কোনও নতুন সিদ্ধান্ত নেবেন।
রূপঙ্কর যেমন বললেন, “আমি মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি পুজোর সময় উনি অনুষ্ঠান যেন বন্ধ না করেন। গানবাজনার মানুষের পুজোর অনুষ্ঠান দিয়েই কাজের সময় শুরু হয়। শীত পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান চলে। তারপর অনুষ্ঠান কমে আসে। এই রোজগারেই শিল্পীরা সারা বছর চালান! এটা বন্ধ করলে করোনার সময় তো আরও বিপদ বাড়বে!”
চিন্তিত সঙ্গীতশিল্পী ইমন চক্রবর্তীও। তিনি বললেন, “মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সকলের অভিভাবক। বাংলার সংস্কৃতি তাঁর মনেপ্রাণে। এরকম সময় অভিভাবক হিসেবে আমাদের মাথার উপর থেকে কোনও ভাবেই হাত সরিয়ে নিতে পারবেন না তিনি! লকডাউনের পর এখন তো সব খুলে গেল। গানের অনুষ্ঠান বন্ধ হবে কেন?”
আরও পড়ুন:‘পুজোর মুডে মীর কেন?’ মৌলবাদীদের রোষে সঞ্চালক-অভিনেতা
বাংলার শিল্পীদের মূল রোজগার আসে লাইভ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে, মনে করেন অনুপম রায়। “কতজনই বা সিনেমার গান করেন এখন? আমি চাই লাইভ অনুষ্ঠান শুরু হোক এ বার।শিল্পীরা কাজে ফিরুক।”
‘নিউ নর্মাল’-এর আবহে তা হলে কি আলো জ্বলে উঠবে মঞ্চে?