‘রক্তরহস্য’এর শুটিংয়ে কোয়েল
কেন্দ্রের নির্দেশে দেশ জুড়ে কনটেনমেন্ট জ়োনের বাইরে সিনেমা হল খোলা যাবে ১৫ অক্টোবর থেকে। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের। করোনা সংক্রমণের মাত্রা মহারাষ্ট্রে খুবই বেশি। তাই ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সেখানকার সিনেমা হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উদ্ধব ঠাকরের সরকার। অন্য দিকে, দক্ষিণের কয়েকটি রাজ্যেও অক্টোবরে হল খুলছে না। কিন্তু কেন্দ্রের নির্দেশ আসার আগেই বাংলার রাজ্য সরকার ১ অক্টোবর থেকে সিনেমা হল খোলার অনুমতি দিয়েছিল। এবং সেই সুযোগ এককথায় লুফে নিয়েছে বাংলার প্রযোজক, হল মালিক ও ডিস্ট্রিবিউটররা। পুজোয় মুক্তি পাওয়ার কথা সুরিন্দর ফিল্মসের ‘রক্তরহস্য’, ‘লাভ স্টোরি’, এসভিএফের ‘ড্রাকুলা স্যার’, এনা সাহার প্রযোজনায় ‘এসওএস কলকাতা’, অর্জুন দত্তের ‘গুলদস্তা’ এবং আরও কয়েকটি ছবির। রি-রিলিজ় করছে উইন্ডোজ়ের ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’।
কেন্দ্রের নির্দেশ, প্রেক্ষাগৃহের মোট আসনসংখ্যার ৫০ শতাংশ দর্শক নিয়ে শো দেখানো যাবে। পুজোয় বাংলা ছবি নিয়ে দর্শকের মধ্যে উন্মাদনা বেশি থাকে। সেই আবেগ বাজি রেখেই গত কয়েক বছরে জাঁকিয়ে চলেছে পুজোয় বাংলা ছবির ব্যবসা। হিন্দি ছবি থাকলে দর্শক ভাগাভাগি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে এ বার শুধু দুর্গাপুজো নয়, দীপাবলিতেও বড় হিন্দি ছবি মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। রিলায়্যান্স এনটারটেনমেন্টের সিইও শিবাশিস সরকার জানিয়েছেন, দীপাবলিতে ‘সূর্যবংশী’ মুক্তি পাচ্ছে না। দেশের সব রাজ্যে সিনেমা হল এক সময়ে না খোলার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। সে ক্ষেত্রে দীপাবলির পরেও বাংলা ছবি প্রতিদ্বন্দ্বীহীন।
‘‘৫০ শতাংশ আসনসংখ্যা হলেও শুধু বাংলা ছবি থাকবে। হিন্দি না থাকায় আমরা একশো শতাংশ অকুপেন্সি পেয়ে যাচ্ছি। আর এই ব্যবসায় হলফ করে কিছু বলা যায় না। তবে শুরু তো করতে হবে,’’ বললেন সুরিন্দর ফিল্মসের কর্ণধার নিসপাল সিংহ। তাঁর কথাতেই স্পষ্ট, ছ’মাস পরে বাংলায় হল খোলা হলে ছোট-বড় কোনও প্রযোজনা সংস্থাই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছে না।
তবে বাংলায় কলকাতা এবং জেলার সিনেমা হলের সামগ্রিক ছবিতে অনেকটাই ফারাক। এখনও পর্যন্ত নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জেলার বেশ কয়েকটি সিনেমা হল প্রথম সপ্তাহে পুরনো ছবি দিয়ে শো চালু করবে। তার মধ্যে ‘পার্সেল’ ছবিটির কথা শোনা গিয়েছে। মাল্টিপ্লেক্স চেন আইনক্স এখনও অবধি তাদের সিদ্ধান্ত জানায়নি। এ দিকে নবীনা সিনেমার কর্ণধার নবীন চৌখানির কথায়, ‘‘আমরা এই সিদ্ধান্তে খুশি। হলগুলি খোলার জন্য তৈরি হওয়ামাত্র খুলে দেব। বাংলা ছবিই থাকবে। হিন্দি থাকবে না। করোনা পরিস্থিতি তো আর রাতারাতি পাল্টাবে না। তবে শো শুরু হোক, এটা চাই।’’
আন্তর্জাতিক ছবি রিলিজ়ের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে, সেখানে অবশ্য ফল আশাপ্রদ নয়। ক্রিস্টোফার নোলানের ‘টেনেট’ আশানুরূপ ব্যবসা না করায় পরবর্তী বিগ বাজেট ছবিগুলির মুক্তি পিছিয়ে দিয়েছে ওয়ার্নার ব্রাদার্স, টোয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরির মতো বড় প্রযোজনা সংস্থাগুলি। যার মধ্যে ‘ওয়ান্ডার উওম্যান’-এর সিকুয়েল, ‘ব্ল্যাক উইডো’, ‘ডেথ অন দ্য নাইল’-এর মতো ছবি রয়েছে।
দেখা যাক, বাংলা সিনেমা এই অবাধ সুযোগ এখন কতটা কাজে লাগাতে পারে।