ছবি: সংগৃহীত
প্রায় আড়াই মাসের অচলাবস্থা কাটিয়ে ছন্দে ফিরতে চলেছে টলিউড। আগামী ১০ জুন থেকে ধারাবাহিক শুটিংয়ের ছাড়পত্র মিলেছে। তবে এই মুহূর্তে শিল্পীদের পরস্পরের মধ্যে তিন ফুটের দূরত্ব রেখে শুটিং করতে হবে বলে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে। ফলে আলিঙ্গন বা ঘনিষ্ঠ দৃশ্য কিংবা অ্যাকশন সিরিয়ালে রাখা চলবে না। এই নির্দেশিকা মেনে শুটিং করতে গেলে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে সিরিয়ালের চিত্রনাট্যকারেরা। যতক্ষণ না পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটছে, আবেগের দৃশ্যে বুনতে হবে স্পর্শ ছাড়াই। কী ভাবছেন তাঁরা?
চিত্রনাট্যকার সাহানা দত্তের মতে, ‘‘সাধারণ মানুষের জীবনে যা ঘটবে, সিরিয়ালেও সেটাই দেখানো হবে।’’ কিন্তু শারীরিক স্পর্শের আধিক্য থাকে পিরিয়ড ড্রামায়। তা কী করে সম্ভব হবে? ‘‘এখনও লিখিত গাইডলাইন পাইনি। তবে এ রকম দৃশ্য এই মুহূর্তে না রাখারই চেষ্টা করব। যদি রাখতেই হয় তা হলে বিকল্প ব্যবস্থা নেব। যেমন, পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করার বদলে হাতজোড় করতে হবে। কাজটা কঠিন, কিন্তু এই পরিস্থিতিতে অন্য উপায় নেই,’’ জানালেন চিত্রনাট্যকার শাশ্বতী ঘোষ।
কিন্তু অনুভূতির অভাব তৈরি হলে দর্শকের কি ভাল লাগবে, সেই ধারাবাহিক দেখতে? ‘‘ক্রাইসিসের মধ্যে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়ে নতুন ধারার জন্ম দিতে হবে,’’ বলছিলেন প্রযোজক সুশান্ত দাস।
লকডাউনের আগে ‘কৃষ্ণকলি’ ও ‘আলোছায়া’-তে নায়ক-নায়িকার বিয়ের দৃশ্য শেষ টেলিকাস্ট হওয়া এপিসোড ছিল। এমন ধারাবাহিকে রোম্যান্টিক দৃশ্যের প্রয়োজন হতেই পারে। ‘‘এ ধরনের দৃশ্য ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু হাতে হাত না রেখে, কথার মধ্য দিয়েও মনের ভাবনা প্রকাশ করা যায়। তার পর প্রয়োজনে শ্যামা-নিখিলের পুরনো রোমান্টিক দৃশ্য দিয়েই কাজ চালাতে হবে।’’ তাতেও না হলে, কোনও অবজেক্টের সাহায্য নিতে হবে বলেই জানালেন সুশান্ত।
আবেগপূর্ণ দৃশ্য দেখাতে ছোট পর্দায় এ বার ম্যানিকুইনের সাহায্য নেওয়া হবে বলে জানালেন সাহানাও। ‘‘দুই ভাইয়ের অনেক দিন পর দেখা হয়েছে। আবেগ বোঝাতে একজন অন্যজনের কাঁধে হাত দেওয়ার মতো দৃশ্যের দাবি থাকলে, সেখানে ম্যানিকুইন রাখা হবে, একই পোশাক পরিয়ে ম্যানিকুইনের উপর হাত রাখার দৃশ্য টেক করা হবে,’’ বললেন তিনি। চিত্রনাট্যকার লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আমার ধারাবাহিকে খুব একটা অন্তরঙ্গ দৃশ্য থাকে না। সংলাপের মধ্য দিয়েই দেখাতে হবে। কম্প্রোমাইজ় করছি, আশা করি দর্শকও মানিয়ে নেবেন।’’
করোনা পরবর্তী লড়াইটা পর্দার বাইরে যেমন, তেমনই পর্দায়ও। জীবন যে ভাবে চলবে, সে ভাবেই ছন্দে ফিরবে পর্দার জীবন।