বিশেষ ভাবে সক্ষমদের সঙ্গে গান গাইছে ব্রত। —নিজস্ব চিত্র
বক্স অফিসে ‘হামি’র ব্যাপক সাফল্যের পর থেকেই কার্যত স্টার। সেই রেশ যে এখনও কাটেনি তার আঁচ পাওয়া গেল বুধবার। গড়িয়ার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েও প্রচারের সব আলো কেড়ে নিল ‘ভুটু’ ওরফে ব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। সিনেমার প্রসঙ্গ উঠতেই পাঠভবনের ক্লাস টু’র ব্রত বলল, ‘‘নাহ! আর সিনেমা করব না। আপাতত পড়াশোনা করব। পড়াশোনা শেষ হলে তারপর ভাবব।’’
ওরা কেউ কথা বলতে পারে না। কারও মস্তিস্কের বিকাশ না হওয়ায় কার্যত ভাবলেশহীন। কেউ আবার রোগগ্রস্ত। এরকমই বিশেষ ভাবে সক্ষমদের স্বাবলম্বী করে তোলার কাজ করে গড়িয়ার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। বুধবার সংস্থা আয়োজন করেছিল ‘বর্ষামঙ্গল’ অনু্ষ্ঠানের। মেমেন্টো এবং ফুলের স্তবক দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয় ব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
আনুষ্ঠানিকতার পর্ব সেরেই ব্রত এক্কেবারে মিশে গেল বিশেষ ভাবে সক্ষম এই সব শিশু কিশোরদের সঙ্গে। প্রথমে নিজেই গাইল গান। তারপর গলা মেলাল ওদের সঙ্গে। সারাক্ষণ মাতিয়ে রাখল গোটা অনুষ্ঠান। আর তার ফাঁকেই ব্রতর সঙ্গে ছবি, সেলফি তোলার হিড়িক।
আরও পড়ুন: ‘শুধু তুই, আর চাইছি না কিছুই’… কাকে বলছেন মিমি?
এখানে এসে কেমন লাগছে জিজ্ঞেস করতে বলল, ‘‘দারুণ! ভীষণ ভাল। এত ভাল লাগছে, কী বলব। ওরা (বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশু-কিশোররা) খুব ভাল। আর ওদের কাজ দেখেছ? কত কিছু বানিয়েছে। আমি তো একটা হার কিনে ফেললাম।’’ আরও অবশ্য বায়না ধরেছিল। তবে সঙ্গে আসা দিদা আর ঠাকুমার নিষেধে সেটা আর হল না।
সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অসিত সিংহ বলেন, ‘‘সিনেমার ভুটুর মতোই ব্রত আর পাঁচটা শিশুর মতো। আমাদের এখানে বর্তমানে ১৬ জন মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী রয়েছেন। সবাই ঠিকমতো মনের ভাবও প্রকাশ করতে পারে না। তবু ওদের চোখ-মুখই বলে দিচ্ছিল, একটা সন্ধ্যার জন্য ব্রতকে কাছে পেয়ে ওরা কতটা খুশি। আমরাও ব্রতকে পেয়ে দারুণ আনন্দিত।’’
আরও পড়ুন: ‘ওহ ম্যাম, ইউ আর মাই ক্রাশ...’ জুন মালিয়াকে কে বললেন এ কথা?
শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী, পরিবারে অত্যাচারিত শিশু-কিশোরদের স্বাবলম্বী করে তোলার কাজ করে বন্ধুর স্পর্শ। ২০১০ সালে কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মী, চিকিৎসকরা মিলে এই সংগঠন শুরু করেন। বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ১৬। চিকিৎসার পাশাপাশি স্পিচ থেরাপি, মিউজিক থেরাপি, নাচ-গান-আবৃত্তির মাধ্যমে শুধু তাঁদের সুস্থ করে তোলাই নয়, সমান্তরালভাবে নানা রকম হাতের কাজেরও প্রশিক্ষণ দেয় এই সংস্থা।