অর্কপ্রভ
অল্প সময়ের মধ্যেই বলিউড মিউজ়িক ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন অর্কপ্রভ মুখোপাধ্যায়। তিনি একাধারে সুরকার, গীতিকার, গায়ক। ‘শেষ থেকে শুরু’ দিয়ে টলিউডে তাঁর যাত্রা শুরু। রাজ চক্রবর্তীর ‘পরিণীতা’য়ও সুর দিয়েছেন অর্কপ্রভ। বাংলায় কাজ শুরু করতে সময় নিলেন কেন? ‘‘অনেক ছবির কথা হয়েছিল। হয়ে ওঠেনি। মুম্বই আর এখানে কাজের ধারা আলাদা। প্রযোজকের সঙ্গে বন্ডিংয়ের উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করে।’’
ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজের গোল্ড মেডেল পাওয়া ছাত্র কোন মন্ত্রে এমন অনিশ্চয়তার পেশা বেছে নিলেন? ‘‘আমার পরিবারের কারও শো-বিজ়ের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। বরাবরই ভাল ছাত্র আমি, স্কুলে বোরিং, নার্ড টাইপের ছিলাম। বাবা-মাকে বোঝানো কঠিন ছিল। নিজেকেও কনভিন্স করতে হয়েছিল। তবে কলেজের ফোর্থ ইয়ারেই মন স্থির করে ফেলেছিলাম।’’
২০০৮ সালে মুম্বই চলে যান অর্কপ্রভ। প্রথম তিন বছরের স্ট্রাগল বেশ কঠিন ছিল। ‘‘অনেক কাজ শুরু হয়ে আটকে গিয়েছিল। ইন্ডিপেন্ডেন্ট শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মুম্বই এসেছিলাম। তবে ওই সময়ে সিডি থেকে ডিজিটালের দিকে ইন্ডাস্ট্রি এগোচ্ছিল। তাই আমার স্বপ্নপূরণ কঠিন ছিল। তার পরে মহেশ ভট্টর সঙ্গে দেখা এবং ‘জিসম টু’-এ কম্পোজ়ের সুযোগ পাওয়া।’’
রিমিক্স এবং পঞ্জাবি র্যাপের মাঝেও অর্কপ্রভর মেলোডি শ্রোতাদের পছন্দ হয়েছে। ‘রুস্তম’-এর ‘তেরে সঙ্গ ইয়ারা’, ‘বার বার দেখো’র ‘দরিয়া’, ‘বরেলী কী বরফি’র ‘নজ়ম নজ়ম’ পরপর হিট তাঁর। প্রযোজকেরা রিমিক্স বানানোর জন্য চাপ দেন না? ‘‘কেরিয়ারের শুরুতে রিমিক্স বানিয়েছি। যার মধ্যে ‘হেট স্টোরি টু’-এর ‘আজ ফির তুম পে’ হিটও করেছিল। তবে রিমিক্স ন্যাচারালি আমার আসে না। রিমিক্সের উপরে মালিকানা দাবি করা যায় না। সৃষ্টি করা ও সাজিয়ে দেওয়ার মধ্যে বড় ফারাক আছে।’’
বলিউডে মিউজ়িকের বদলে যাওয়া মানচিত্র নিয়ে ভাবিত নন গায়ক। ‘‘টেকনোলজির দৌলতে মিউজ়িক এখন গ্লোবাল। বলিউডের মিউজ়িক একটা সময় অবধি ট্র্যাডিশনাল ছিল। আর ডি বর্মণই ওয়েস্টার্ন ধারা নিয়ে এলেন। ইন্ডাস্ট্রিতে এখন সকলের জায়গা আছে। আমার মেলোডিরও আছে, বাদশা-হানি সিংহের র্যাপেরও আছে। আবার কেউ ডান্স নাম্বার বানাতে চাইলে তাঁরও আছে।’’ ইমরান হাশমি ও ঋষি কপূর অভিনীত একটি ছবি অর্কপ্রভর আগামী হিন্দি প্রজেক্ট।
গত বছরেই শিমলার বাসিন্দা দীপিকা সুদকে বিয়ে করেছেন অর্কপ্রভ। ‘‘আমি আর আমার স্ত্রী খুবই আলাদা প্রকৃতির। ও যোগাসনের প্রশিক্ষক। আমি সকালে ঘুমোতে যাই। আর ও ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে ওঠে,’’ হাসতে হাসতে বলছিলেন তিনি। কলকাতায় এলে বেশি সময় বাড়িতেই থাকেন অর্কপ্রভ। পার্কস্ট্রিট, সেখানকার পুরনো রেস্তরাঁর সঙ্গে তাঁর নস্ট্যালজিয়া জড়িয়ে। দীপিকাকে ঘুরিয়ে দেখিয়েছেন জায়গাগুলো? ‘‘এখনও সুযোগ হয়নি।’’ নতুন দাম্পত্য কেমন সামলাচ্ছেন? ‘‘আমি ভাল মানুষ। আর মানুষ ভাল হলে সে স্বামীও ভাল হয়,’’ দিলদরিয়া হাসি গায়কের কণ্ঠে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।