এর আগে তামিলনাড়ুতেও এই ছবিটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমাটির প্রদর্শন নিষিদ্ধ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন থেকে এই ঘোষণা করেছেন মমতা। নবান্ন সূত্রে খবর, এ বিষয়ে মুখ্যসচিবকে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। তিনি জানিয়েছেন, শান্তি-সৌহার্দ্য বজায় রাখতে এই রাজ্যে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিষিদ্ধ করা হল। এই সিনেমায় যে সব দৃশ্য দেখানো হয়েছে তা রাজ্যের শান্তিশৃঙ্খলার পক্ষে বিপজ্জনক হতে পারে। তাই নিষিদ্ধ করা হল। কলকাতা, জেলা সর্বত্র। শান্তি বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত।
এর আগে তামিলনাড়ুতেও এই ছবিটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আবার মধ্যপ্রদেশে সরকার এই ছবিটিকে নিজের রাজ্যে করমুক্ত বলে ঘোষণা করেছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কর্নাটকের বল্লেরির জনসভায় ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছিলেন, ‘‘এই ছবি সন্ত্রাসবাদের মুখোশ টেনে খুলবে।’’ সোমবার অবশ্য মমতা নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র প্রাসঙ্গিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার আগে মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে একটি সাংবাদিক বৈঠকে এই ছবির সমালোচনা করেন। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্স’ প্রসঙ্গও টেনে এনে বলেছিলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলগুলি আগুন নিয়ে খেলছে। তারা জাত-ধর্ম-বর্ণ নিয়ে ভেদাভেদ তৈরির চেষ্টা করছে। ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ কেন? একটি সম্প্রদায়কে হেনস্থা করার জন্য। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’? সে-ও এক অসত্য এবং বিকৃত কাহিনি।’’
‘দ্য কেরালা স্টোরি’তে হিন্দু এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ৩২ হাজার মহিলাকে ধর্মান্তরণের কথা বলা হয়েছে। যা মিথ্যা বলে দাবি করেছিল কেরালার বাম সরকার। সোমবার ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে প্রতিবাদ জানালেও মমতা কেরলের শাসকদলকে সমর্থন করেননি। এ ব্যাপারে মমতা স্পষ্ট বলেন, ‘‘আমি সিপিএমকে সমর্থন করি না। আমি মানুষের কথা বলছি। সিপিএম তো বিজেপির সঙ্গে মিলে কাজ করছে। এই সমালোচনা আমার করার বদলে ওদের নিজেদেরই করা উচিত ছিল। ওরা একসঙ্গে হাঁটে। সেই বিজেপিই কেরালা স্টোরি দেখাচ্ছে।’’
‘দ্য কেরালা স্টোরি’ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কথায় উঠে এসেছে ‘দ্য দিল্লি ফাইল্স’ প্রসঙ্গও। দিন কয়েক আগেই ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ খ্যাত পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী এসেছিলেন বাংলায়। এসেছিলেন ওই ছবির অভিনেতা অনুপম খেরও। বাংলায় এসে তাঁরা জানিয়েছিলেন, খুব শীঘ্রই ‘দ্য দিল্লি ফাইল্স’ নামেও একটি ছবি করতে চলেছেন তাঁরা। সেখানে ‘বেঙ্গল ফাইলস’ খুলবেন অর্থাৎ বাংলার গোপন তথ্যভান্ডার প্রকাশ্যে আনবেন তাঁরা। মমতা সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘‘ বিজেপির মনোনীত কিছু তারকা এখানে এসেছিলেন। ওরা বলেছিলেন, ওরা ‘বেঙ্গল ফাইল্স’ খুলবে। যদি এরা ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্স’ করে থাকে কাশ্মীরের মানুষের নিন্দা করার জন্য, যদি কেরালায় একপেশে বক্তব্য দিয়ে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ করে থাকে, তবে বাংলাকেও ওঁদের পরের ছবিতে সে ভাবেই দেখাবে।’’