পরীমণি
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ধৃত বাংলাদেশের অভিনেত্রী পরীমণিকে নিয়ে নেটমাধ্যমে কুমন্তব্য অনেকটা কমে এলেও আপাতত বন্দি তিনি। তৃতীয় দফার একদিনের হেফাজত শেষে ২১ অগস্ট আদালতে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। কিন্তু, এ দিন পরীমণির জামিনের আবেদন করেননি তাঁর আইনজীবীরা। ও দিকে সিআইডির তদন্ত-কর্মকর্তা পরীমণিকে আর হেফাজতে না চেয়ে তাঁকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তাঁর জামিনের আবেদন না করায় আইনজীবীদের উপর ক্ষুব্ধ হন পরীমণি। ২২ আগস্ট পরীমণির অন্যতম আইনজীবী মজিবুর রহমান জামিন আবেদন করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে। আদালত জামিনের শুনানির দিন ধার্য করেছে ১৩ সেপ্টেম্বর।
ইতিমধ্যে পরীমণির মুক্তির দাবিতে দফায় দফায় পথে নেমেছেন বহু মানুষ। তাঁদের বক্তব্য, পরীমণিকে অকারণে আটকে রেখে হেনস্থা করা হচ্ছে। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। ন্যায়বিচারের দাবি তুলেছে বাংলাদেশের নারী ও কন্যা নির্যাতন এবং সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ জাতীয় কমিটি। কমিটির আহ্বায়ক ও মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেমের সঙ্গে সহমত ব্যক্ত করেছেন দেশের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক, অধ্যাপক, আইনজীবী ও সমাজকর্মীরা। সমবেত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অসৎ উপায়ে অর্থ উপার্জন করার পদ্ধতি টিকিয়ে রাখার জন্য অপরাধীচক্র তৈরির যে অপচেষ্টা, তারই শিকার পরীমণি।’
শাকিব খানের পর তরুণ প্রজন্মের আর এক জনপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদ এ বার পরীমণির পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, ‘‘দেশের আইনি ব্যবস্থার প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। তিনি ন্যায়বিচার পাবেন। আশা করি, তিনি আবারও নিয়মিত কাজে ফিরবেন। কারণ, তিনি মানুষের জন্য অনেক করেছেন। তিনি অনেক অনাহারীকে খাইয়েছেন। সংসার চলে না, এমন অনেককে সহযোগিতা করেছেন। এগুলি একজন ভাল মানুষের লক্ষণ। আমি চোখের সামনে অন্যের জন্য পরীমণিকে অনেক কিছু করতে দেখেছি।’’
শুভানুধ্যায়ীদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়লেও পরীমণি কিন্তু কারাগারেই। ১৩ সেপ্টেম্বর উচ্চতর আদালতে তাঁর জামিন হয় কি না, সেদিকে তাকিয়ে আছে চলচ্চিত্র জগৎও। শ্যুটিং চলাকালীন স্বাধীনতা সংগ্রামী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের চেহারায় সাড়া ফেলে দেন পরীমণি। আলোচিত সেই ‘প্রীতিলতা’ ছবির পরিচালক রাশিদ পলাশ আনন্দবাজার ডিজিটালকে জানিয়েছেন, ‘‘এই সময় পরীমণির শুটিংয়ে থাকার কথা ছিল। কিন্তু তিনি কারাগারে। সব গোলমাল হয়ে গেল। অক্টোবরে আমার 'পদ্মাপুরাণ' ছবির মুক্তি। কবে কোন কাজ করব, বুঝতে পারছি না। রাষ্ট্রের কাছে আবেদন, পরীমণি একজন শিল্পী, তাঁকে জামিনে মুক্ত করা হোক। তিনি শ্যুটিং না করলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।’’