Bollywood

উদ্বাস্তু হয়ে বর্মা থেকে মুম্বইয়ে, ক্যাবারে দিয়ে দারিদ্র ঢেকেছেন সলমনের বিমাতা হেলেন

নার্সের কাজ নিলেন মা। কিন্তু তাঁর সামান্য বেতনে নুন আনার আগেই পান্তা শেষ। সেইসঙ্গে শেষ হল হেলেনের পড়াশোনাও। মায়ের পাশে দাঁড়াতে স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দিলেন তিনি।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৯ ১২:৪২
Share:
০১ ১৬

কয়েকশো গ্রাম হেঁটে, অভুক্ত অবস্থায় কপর্দকহীন ও কঙ্কালসার কয়েকজন মানুষ এসে পৌঁছেছিলেন সাবেক বম্বে, আজকের মুম্বইয়ে। বর্মার ওই শরণার্থী দলের একটি পরিবারের মেয়ে পরবর্তী জীবনে সেই যন্ত্রণায় বিদ্ধ হয়েই এসেছিলেন রুপোলি পর্দায়। তাঁর ক্যাবারে নাচের আড়ালে ঢেকে রাখতেন বাস্তবের রক্তাক্ত ক্ষত।

০২ ১৬

বাবা জর্জ ডেসমায়ার ছিলেন অ্যাংলো ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ের। মা, বর্মার মেয়ে। বর্মাতেই ছিল সংসার। প্রথম সন্তানের জন্ম হল ১৯৩৮ সালের ২১ নভেম্বর। বাবা মা সাধ করে মেয়ের নাম রাখলেন হেলেন অ্যান রিচার্ডসন।

Advertisement
০৩ ১৬

তার পরে আরও একটি ছেলে রজার এবং একটি মেয়ে, জেনিফার। তিনজনেই শৈশবে পিতৃহীন হলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মারা গেলেন জর্জ ডেসমায়ার। তিন শিশুসন্তানকে নিয়ে রেঙ্গুন ছাড়লেন হেলেনের অন্ত্বঃসত্ত্বা মা।

০৪ ১৬

কিছুটা ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এবং অনেকটা সাধারণ মানুষের সাহায্যে উদ্বাস্তু দলের সঙ্গে তাঁরা এসে পৌঁছলেন অসমের ডিব্রুগড়ে। ততক্ষণে সেই দলে অসহায় মুখগুলোর সংখ্যা কমে গিয়েছে অনেকটাই। অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন পথেই। অনেকে এগিয়ে চলার ক্ষমতা হারিয়েছেন। মারা গিয়েছে হেলেনের মায়ের গর্ভের সন্তানও।

০৫ ১৬

মা ও ভাইবোনের সঙ্গে ডিব্রুগড়ের হাসপাতালে দু’মাস থাকতে হয়েছিল। সেখান থেকে ঠাঁই হল কলকাতায়। সেখানে ভাই রজারের মৃত্যু হল গুটিবসন্তে। কলকাতার পাট চুকিয়ে পরের গন্তব্য বম্বে, আজকের মুম্বই। ১৯৪৩ সালে আরবসাগরের তীরে নতুন করে শুরু হল জীবনযুদ্ধ।

০৬ ১৬

নার্সের কাজ নিলেন মা। কিন্তু তাঁর সামান্য বেতনে নুন আনার আগেই পান্তা শেষ। সেইসঙ্গে শেষ হল হেলেনের পড়াশোনাও। মায়ের পাশে দাঁড়াতে স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দিলেন তিনি।

০৭ ১৬

এক পারিবারিক বন্ধুর সাহায্যে এল ফিল্মে কাজ করার সুযোগ। সমবেত শিল্পী হিসেবে হেলেন কাজের সুযোগ পেলেন পাঁচের দশকের গোড়ায়। কাজ পেলেন ‘শাবিস্তান’ ও ‘আওয়ারা’ ছবিতে। কিছুদিনের মধ্যেই এল একক শিল্পী হিসেবে কাজের সুযোগ। ১৯৫৪ সালে ‘আলিফ লায়লা’ এবং পরের বছর ‘হুর-এ-আরব’ ছবিতে।

০৮ ১৬

প্রথম বড় ব্রেক ১৯৫৮ সালে। ‘হাওড়া ব্রিজ’ ছবিতে গীতা দত্তের গলায় ‘মেরা নাম চিন চিন চু’-এর সঙ্গে উনিশ বছরের হেলেনের নাচ আইকনিক হয়ে গেল বলিউডে। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি হেলেনকে।

০৯ ১৬

মণিপুরী, কত্থক এবং ভরতনাট্যমের তালিম নিয়েছিলেন হেলেন। কিন্তু তাঁর আসল মুনসিয়ানা ছিল ক্যাবারে নাচে। তাঁর হাত ধরেই তৎকালীন আপাত-নিষিদ্ধ নাচ পা রেখেছিল বলিউডে। যতদিন হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থাকবে, ততদিন গুঞ্জরিত হবে ‘শোলে’-এর ‘মেহবুবা ও মেহবুবা’,‘ইন্তেকাম’-এর ‘আ জানে যাঁ’ এবং ক্যারাভান-এর ‘পিয়া তু অব তো আ জা’।

১০ ১৬

খ্যাতির শীর্ষে থাকা হেলেন সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন পরিচালক পি এন অরোরার সঙ্গে। তাঁদের বিয়ের গুঞ্জনও শোনা যায়। হেলেনের থেকে ২৭ বছরের বড় ছিলেন অরোরা।

১১ ১৬

কিন্তু সতেরো বছর একসঙ্গে থাকার পরে সে সম্পর্ক ভে‌ঙে যায়। অভিযোগ, হেলেনের টাকা নয়ছয় করতেন অরোরা। তাঁর জন্য নাকি দেউলিয়া হতে বসেছিলেন হেলেন। ১৯৭৪ সালে তিনি অরোরার সঙ্গে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন।

১২ ১৬

প্রথম সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার সাত বছর পরে নতুন সম্পর্কে বাঁধা পড়েন হেলেন। ১৯৮১ সালে বিয়ে করেন নামী চিত্রনাট্যকার সেলিম খানকে। তখন সেলিম চার সন্তানের বাবা। সালমা খানের সঙ্গে তাঁর প্রথম দাম্পত্যের বয়স ১৭ বছর।

১৩ ১৬

প্রথমে বিরোধিতা থাকলেও পরে খান পরিবারে গ্রহণযোগ্যতা পান হেলেন। তিনিও আপন করে নেন স্বামীর প্রথম পক্ষের চার সন্তান সলমন, আরবাজ, সোহেল এবং আলভিরাকে। হেলেন নিজে দত্তক নেন অর্পিতাকে।

১৪ ১৬

সেলিম খানের সঙ্গে হেলেনের আলাপ অবশ্য ছয়ের দশকের গোড়ায়। তিনি হেলেনকে বেশ কিছু ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ দেন। ‘গুমনাম’, ‘শিকার’, ‘এলান’, ‘লহু কে দো রং’-এর মতো ছবিতে হেলেনের উপস্থিতি মনে রাখার মতো।

১৫ ১৬

হেলেন অভিনয় ছেড়ে দেন ১৯৮৩ সালে। বেশ কয়েক বছর পরে তিনি অভিনয় করেন ‘খামোশি দ্য মিউজিক্যাল’, ‘হাম দিল দে চুকে সনম’-এর মতো বক্স অফিস সফল সিনেমায়।

১৬ ১৬

বলিউডে আইটেম নম্বরে পথ প্রদর্শক, ক্যাবারে কুইন হেলেন ২০০৯ সালে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত হন। (ছবি:সোশ্যাল মিডিয়া)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement