(বাঁদিকে) ‘জওয়ান’ ছবিতে শাহরুখ। ‘ব্যোমকেশ ও দুর্গ রহস্য’ ছবিতে দেব (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
বৃহস্পতিবার দেশ জুড়ে মুক্তি পাচ্ছে ‘জওয়ান’। রাজ্যের সিনেমা হলে শাহরুখ খান অভিনীত এই ছবির অগ্রিম বুকিং নিয়ে উন্মাদনা দেখার মতো। এ দিকে বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যের একাধিক হল থেকে উঠে যাচ্ছে দেব অভিনীত ‘ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য’ ছবিটি।
১১ অগস্ট মুক্তি পেয়েছিল দেবের ব্যোমকেশ। অর্থাৎ এক মাস অতিক্রান্ত হওয়ার আগেই রাজ্যে উল্লেখযোগ্য ভাবে এই ছবির শো-এর সংখ্যা কমে গেল। খোঁজ নিয়ে জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার থেকে নন্দন, রাধা স্টুডিয়ো এবং নজরুল তীর্থের মতো সরকারি প্রেক্ষাগৃহেই ব্যোমকেশ চলবে। ব্যোমকেশ রূপে দেবের আবির্ভাবকে দর্শক স্বাগত জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেও এই পরিস্থিতি কেন? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহরের এক হল মালিক বললেন, ‘‘আসলে কলকাতায় ব্যোমকেশ যে ব্যবসা করেছে, রাজ্যের অন্যান্য জেলায় সে রকম ব্যবসা হয়নি। তাই চতুর্থ সপ্তাহ থেকে ছবির শো কমাটাই স্বাভাবিক।’’ তবে এর বিপরীত মতও ঘুরছে ইন্ডাস্ট্রিতে। যেমন, ইম্পা (ইর্স্টান ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স অ্যাসোসিয়েশন)-র তরফে শ্যামল দত্ত বললেন, ‘‘বহরমপুরে সিলভার স্ক্রিন হলে প্রথম দু’সপ্তাহ তো ছবি দারুণ চলেছিল। দর্শক ভিড় করে ব্যোমকেশ দেখেছেন।’’‘
‘ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য’ ছবিতে (বাঁদিক থেকে) অম্বরীশ, দেব এবং রুক্মিণী। ছবি: সংগৃহীত।
ইন্ডাস্ট্রির একাংশের মতে, সিঙ্গল স্ক্রিনে এখন ব্যোমকেশ কেউ চালাতে চাইবেন না ‘জওয়ান’-এর কথা ভেবেই। কারণ, শাহরুখের ছবিকে ঘিরে ব্যবসার সুযোগ কেউই হাতছাড়া করতে চাইছেন না। পাশাপাশি শোনা যাচ্ছে, এ রাজ্যে ‘জওয়ান’-এর পরিবেশক (এসভিএফ) ‘নো শো পলিসি’ নিয়েছে। অর্থাৎ কোনও সিঙ্গল স্ক্রিনে সারা দিনে শুধুমাত্র শাহরুখের ছবিটিই চালাতে হবে। তাই ইচ্ছে থাকলেও অনেকেই ব্যোমকেশ দেখাতে পারবেন না। কারও মতে, বক্স অফিসে ব্যোমকেশের বিক্রি আশানুরূপ নয়, তাই ছবিটিকে আর জায়গা দিতে রাজি নন অনেকেই।
‘জওয়ান’ ছবিতে শাহরুখ খান। ছবি: সংগৃহীত।
‘ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য’ পরিবেশনার দায়িত্বে ছিল পিভিআর আইনক্স। বুধবার সংস্থার রিজিওনাল ডিরেক্টর (ইস্ট) অমিতাভ গুহঠাকুরতা আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘চতুর্থ সপ্তাহে সিংহভাগ ছবির শো কমে। সেই সঙ্গে কমে দর্শকসংখ্যা। স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে ‘জওয়ান’ জায়গা করে নেবে।’’
বিষয়টিকে কিন্তু অন্য ভাবে দেখতে চাইছেন ছবির পরিচালক বিরসা দাশগুপ্ত। তাঁর কথায়, ‘‘এত বড় একটা ছবি আসছে। তাদের তো শো দিতেই হবে। প্রত্যেকটা ছবির একটা আয়ু থাকে। কিন্তু ব্যোমকেশ তার সময় পেয়েছে।’’ একই সঙ্গে বিরসার পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘তৃতীয় বা চতুর্থ সপ্তাহে সত্যিই কি সব বাংলা ছবি দু-তিনটে হলের বাইরে চলে? সেটাও তো দেখতে হবে।’’ কী বলছেন দেবের ব্যোমকেশের অন্যতম প্রযোজক শ্যামসুন্দর দে। তিনি বললেন, ‘‘চতুর্থ সপ্তাহে ব্যবসার পরিমাণ কম। প্রথম সপ্তাহের মতো ব্যবসা হলে তখন ভাবা যেত। এখনও শোয়ের সংখ্যা কী দাঁড়াচ্ছে, সেটা খোঁজ নিয়ে বলতে পারব।’’ ‘জওয়ান’-এর জন্য কি ব্যোমকেশের শো আরও কমে গেল? প্রযোজক বললেন, ‘‘মেনে তো নিতেই হবে। ঠেকাব কী করে!’’