অ্যানিমেশন স্টুডিয়োয় শিক্ষানবিশি দিয়ে শুরু কেরিয়ার। সেখানেও ভুলের জন্য খারিজ হতে হয়েছিল। ‘এক্সট্রা’ হিসেবে বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করা অভিনেতাই একদিন দুনিয়া কাঁপানো বন্ড, জেমস বন্ড। চিত্রনাট্যের মতো রজার মুরের ব্যক্তিগত জীবনও ছিল বহু নারীর সাহচর্যে সুরভিত। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
রজার মুরের জন্ম ১৯২৭ সালের ১৪ অক্টোবর। লন্ডনের স্টকওয়েলে। তাঁর বাবা জর্জ আর্লফ্রেড মুর ছিলেন পুলিশকর্মী। মা, লিলিয়ান লিলি গৃহবধূ। প্রসঙ্গত লিলিয়ানের জন্ম হয়েছিল ব্রিটিশ কলকাতায়। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
রজারের পড়াশোনা শুরু ব্যাটারসি গ্রামার স্কুলে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তাঁকে স্কুল পাল্টাতে হয়। ভর্তি হন কর্নওয়ালের লনসেনস্টন কলেজে। তারপর তিনি ছাত্র ছিলেন বাকিংহ্যামশায়ারের ডক্টর চ্যালোনার্স গ্রামার স্কুলে। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
অ্যনিমেশন স্টুডিয়োতে কাজ শিখতে গিয়ে প্রথমেই ব্যর্থতা। তারপর ‘এক্সট্রা’ হিসেবে অভিনয় ১৯৪৫ সালে মুক্তি পাওয়া ছবি ‘সিজার অ্যান্ড ক্লিওপেট্রা’ ছবিতে। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগদান। তিনি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত হন। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
ব্রিটিশ পরিচালক ডেসমন্ড হার্স্টের উদ্যোগে মুর রয়্যাল অ্যাকাডেমি অব ড্রামাটিক আর্ট-এ প্রশিক্ষণ নেন। তবে অভিনয় শুরু করার পরে তিনি ইংল্যান্ডে বেশিদিন থাকলেন না। পাঁচের দশকে আমেরিকা এসে টেলিভিশনে কাজ শরু করেন মুর। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
টেলিভিশনে কাজ আর সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনের মডেলিং-এর কাজ চলছিল। ১৯৫৪ সালে প্রখ্যাত সংস্থা ‘এমজিএম’-এর সঙ্গে চুক্তি। কিন্তু এই ব্যানারে তাঁর ছবি সফল হয়নি। এরপর হলিউডে চড়াই-উতরাইয়ের পরে বন্ড-যুগ শুরু ১৯৭৩ সালে। চলেছিল ১৯৮৫ অবধি। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
বন্ড সিরিজে রজার মুরের প্রথম ছবি ‘লিভ অ্যান্ড লেট ডাই’। মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭৩ সালে। তার পরের বছর ‘দ্য ম্যান উইথ দ্য গোল্ডেন গান’। ১৯৭৭ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘দ্য স্পাই হু লাভড মি’। ১৯৭৯ সালে ‘মুনরেকার’, ১৯৮১ সালে ‘ফর ইয়োর আইজ ওনলি’, ১৯৮৩ সালে ‘অক্টোপুসি’—চলতে থাকে রজার মুরের বন্ড অভিযান। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
জেমস বন্ড হিসেবে রজার মুরের শেষ ছবি ‘এ ভিউ টু এ কিল’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৮৫ সালে। ১২ বছরে মোট সাতটি ছবি। তিনি-ই ছিলেন জেমস বন্ডের চরিত্রে দীর্ঘদিন ধরে অভিনয় করা তারকা। সম্প্রতি এই খেতাব পেয়েছেন ড্যানিয়েল ক্রেগ। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
বন্ড সিরিজের পরে পাঁচ বছর অভিনয় করেননি তিনি। আবার অভিনয়ে ফিরে আসেন ১৯৯০ সালে। তাঁর শেষ ছবি ‘দ্য সেন্ট’-এর শুটিং শেষ হয় ২০১৩ সালে। ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ২০১৭-এ। সে বছরই প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন নব্বই বছর বয়সী রজার মুর। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
রজার মুরের প্রথম বিয়ে ১৯ বছর বয়সে। ১৯৪৬ সালে তিনি বিয়ে করেন রয়্যাল অ্যাকাডেমি অব ড্রামাটিক আর্ট-এ তাঁর সহপাঠিনী ডুর্ন ভ্যান স্টেইনকে। অভিনেত্রী ডুর্ন ছিলেন তাঁর থেকে ছ’ বছরের বড়। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে আর্থিক বিষয় নিয়ে শুরু হয় টানাপড়েন। রজার মুরের তখনকার স্বল্প রোজগারে খুশি ছিলেন না ডুর্ন। ১৯৫৩ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ততদিনে মুর মন দিয়ে ফেলেছেন গায়িকা ডরোথি স্কুইরকে। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
বয়সে তেরো বছরের বড় ডরোথিকে বিয়ে করে রজার মুরের নতুন সংসার শুরু হয় কেন্টে। কিন্তু এ বার দাম্পত্যে সমস্যা দেখা দেয় বয়সের ব্যবধান নিয়ে। একাধিকবার গর্ভপাত হয় ডরোথির। পরে রজার মুর বলেছিলেন, সন্তান থাকলে হয়তো সম্পর্কটা বেঁচে যেত। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
এর মাঝেই মুর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন আর এক ডরোথির সঙ্গে। অভিনেত্রী ডরোথি প্রোভাইনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শোনা যায়। তারপর ইতালিয়ান গায়িকা লুইসা মাত্তিয়োলির সঙ্গে রজার মুরের গভীর প্রেম প্রকাশ্যে আসতেই আর মেনে নিতে পারেননি তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ডরোথি স্কুইর। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
ঝগড়ার সময় রজার মুরের উপর শারীরিক আঘাত করতেন হিংস্র ডরোথি। ১৯৬১ সালে তাঁকে ছেড়ে গায়িকা মাত্তিয়োলির সঙ্গে থাকতে শুরু করেন মুর। আট বছর তাঁরা লিভ ইন করেন। কারণ তত দিন অবধি ডরোথি ডিভোর্স দেননি। তিনি ডিভোর্স দেওয়ার পরে ১৯৬৯ সালে বিয়ে করেন রজার মুর এবং লুইসা মাত্তিয়োলি। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
মুর ও মাত্তিয়োলির তিন সন্তান। কন্যা ডেবোরাহ এবং দুই পুত্র জিওফ্রে ও ক্রিশ্চিয়ান। ডেবোরাহ অভিনেত্রী, জিওফ্রে অভিনেতা এবং ক্রিশ্চিয়ান প্রযোজক। কিন্তু এই সংসারও একদিন ভেঙে গেল। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
ড্যানিশ সোশ্যালাইট ক্রিস্টিনা থোলস্ট্রাপের সঙ্গে ১৯৯৩ সালে লিভ ইন শুরু করলেন রজার মুর। ২০০০ সালে মাত্তিয়োলির থেকে ডিভোর্স পাওয়ার পরে তিনি ২০০২ সালে বিয়ে করেন ক্রিস্টিনাকে। এই ঘটনার জেরে তিন সন্তান মুখ ফিরিয়ে নেন তাঁর থেকে। পরে অবশ্য তাঁদের সঙ্গে রজার মুরের সম্পর্ক আবার স্বাভাবিক হয়। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)
১৮ বছর বয়সে প্রথম বিয়ে। চতুর্থ বিয়ে ৭৫-এ। রজার মুরের জীবন পর্দার ব্রিটিশ গুপ্তচরের থেকে কোনও অংশে কম রঙিন নয়। প্রসঙ্গত, বিচ্ছেদ হয়ে গেলেও প্রাক্তন দ্বিতীয় স্ত্রী ডরোথির সঙ্গে সব সম্পর্ক তিনি ছিন্ন করেননি। ১৯৯৬ থেকে শুরু করে ১৯৯৮-এ ডরোথির মৃত্যু অবধি, তাঁর ক্যানসার চিকিৎসার সব ব্যয় বহন করেছিলেন রজার মুর। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)