ঝাঁ চকচকে গাড়ি। শত্রুকে ঘায়েল করার গ্যাজেট। ‘শেক্ন বান নট স্টার্ড’ মার্টিনি। আর অতি অবশ্যই হৃদয় তোলপাড় করা স্বল্পবসনারা। জেমস বন্ডের চরিত্রে যেমন শন কনারিকে অনেকে ভুলতে পারেননি, তেমনই ভুলতে পারেননি বন্ডগার্লদেরও। কখনও উরসুলা আন্দ্রেস তো কখনও ডায়ানা রিগ— শনের স্মার্ট এবং মাচো উপস্থিতি সত্ত্বেও চোখ সরানো যায়নি তাঁর বন্ডগার্লদের উপর থেকে।
জেমস বন্ডের চরিত্রে স্কটিশ অভিনেতা শন কনারিকে প্রথম দেখা গিয়েছিল ১৯৬২ সালের ফিল্ম ‘ডক্টর নো’-তে। তাতে বন্ডগার্ল ছিলেন উরসুলা আন্দ্রেস। হানি রাইডারের চরিত্রে সুইস অভিনেত্রীর চোখের ইশারায় পর্দার বাইরেও অনেকে কেঁপে উঠেছিলেন। উরসুলাকেও খ্যাতি এনে দিয়েছিল ‘ডক্টর নো’।
‘ডক্টর নো’-র বক্স অফিস সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে পরের বছরই ফের জেমস বন্ডের চরিত্রে এসেছিলেন শন কনারি। দেখা গেল, ‘ফ্রম রাশিয়া উইথ লভ’-এ বন্ডগার্ল পাল্টে গিয়েছে। তবে তাতে তারতম্য হয়নি ফ্যানদের উচ্ছ্বাসের ব্যারোমিটারে।
তাতিয়ানা রোমানোভা, থুড়ি ইতালীয় অভিনেত্রী ড্যানিয়েলা বিয়ানশিরে বন্ডগার্ল হিসাবে পর্দায় দেখে সমান ভাবেই উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন দর্শকেরা।
১৯৬৪ সালে পর্দায় এল ‘গোল্ডফিঙ্গার’। আগের বারের মতোই ফের বদল বন্ডগার্লে। এ বার ইংরেজ অভিনেত্রী অনর ব্ল্যাকম্যান।
পাইলট পুশি গ্যালোরের ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল অনর ব্ল্যাকম্যানকে। উজ্জ্বল রঙের টাইট স্যুটে বন্ডকেও খানিকটা যেন নিষ্প্রভ করে দিয়েছিলেন অনর।
ক্লদিন উজিকেও বন্ডগার্ল হিসেবে দেখা গিয়েছিল। সালটা ১৯৬৫। ফিল্ম ‘থান্ডারবল’। বডি-হাগিং বিকিনিতে পর্দায় উষ্ণতা ছড়িয়েছিলেন ওই ফরাসি সুন্দরী।
পর্দায় বিকিনি পরিহিতা ডমিনো ডারভালকে বাঁচিয়েছিলেন জেমস বন্ড। তবে ডমিনো অর্থাৎ ক্লদিন উজির রূপের আঁচ থেকে নিজে বাঁচতে পারেননি!
বন্ডগার্ল হিসেবে শুধু ইউরোপীয়রাই নয়। দেখা গিয়েছিল এশীয় অভিনেত্রীকেও। সাল ১৯৬৭। ফিল্ম ‘ইউ ওনলি লিভ টোয়াইস’। মি হামা এলেন কিসি সুজুকির রূপে।
পর্দায় কিসি সুজুকি একেবার বিয়ে করেছিলেন জেমস বন্ডকে। তবে ফিল্মের খাতিরে পুরোটাই সাজানো। তার পর ফিল্মের প্লট অনুযায়ী গা-ঢাকাও দিলেন। ইউরোপীয় সুন্দরীদের ভিড়ে হারিয়ে যাননি মি হামা।
‘অন হার ম্যাজেস্টিস সিক্রেট সার্ভিস’ নিয়ে এল আরও এক নতুন বন্ডগার্লকে। ডায়ানা রিগ। ব্রিটিশ থিয়েটার অভিনেত্রী পর্দায় জেমস বন্ডের স্ত্রী। হ্যাঁ! এই ফিল্মে বিবাহিত বন্ডকেই দেখা গিয়েছে।
তবে ‘অন হার ম্যাজেস্টিস সিক্রেট সার্ভিস’-এ বিয়ের পরেই মারা যান বন্ডের স্ত্রী। টেরেসা দি ভিসেঞ্জোর চরিত্রে ছাপ রেখেছিলেন ডায়ানা।
১৯৭১ সালে ‘ডায়মন্ডস আর ফরএভার’-এ ফের বদল হল বন্ডগার্ল। আমেরিকান অভিনেত্রী জিল সেন্ট জনকে দেখা গেল টিফানি কেসের চরিত্রে।
‘ডায়মন্ডস আর ফরএভার’-এ হিরে পাচারকারী জিলের ছটায় মুগ্ধ হয়েছিলেন অনেকেই। বাদ পড়েননি বন্ডও।
পরের কয়েকটি ছবিতে শন কনারির বদলে জেমস বন্ডের চরিত্রে দেখা গিয়েছিল রজার মুরকে। তবে ১২ বছর পর ফের বন্ডের চরিত্রে ফিরে আসেন শন। ‘নেভার সে নেভার এগেন’ ছবিতে। সাল ১৯৮৩।
এই ফিল্মে কিম বাসিঞ্জারকে দেখা গিয়েছিল মুখ্য বন্ডগার্লের ভূমিকায়। ফ্যাশন মডেলিংয়ে নাম করার পর বন্ড সিরিজের ফিল্মেও নজর কেড়েছিলেন কিম।