প্যাকার্ড পরিবার আদতে আইরিশ-মার্কিনি। বেশ কয়েক দশক আগে মার্কিন সেনাবাহিনীর হয়ে জন প্যাকার্ড এসেছিলেন ভারতে। সাবেক ব্যাঙ্গালোর এত ভাল লেগে গিয়েছিল, সেখানেই থেকে গিয়েছিলেন। তাঁরই নাতি গ্যাভিন প্যাকার্ড। ঠাকুরদার মতো সেনাবাহিনীতে যাননি , কিন্তু ভালবাসতেন শরীরচর্চা। তার থেকেই সূত্রপাত বলিউডি কেরিয়ারের।
রাজ্য ও জাতীয় স্তরে পুরস্কারজয়ী বডিবিল্ডার ছিলেন গ্যাভিন। প্রশিক্ষণ দিয়েছেন সঞ্জয় দত্ত, সুনীল শেট্টির মতো তারকাদের। নয়ের দশকে তিনি ছিলেন হিন্দি ছবির পরিচিত খলনায়ক। তাঁর প্রথম অভিনয় ১৯৮৮ সালে, মালয়লম ছবি ‘আরিয়ান’-এ। তার পরের বছর অভিয়ন, হিন্দি ছবি ‘ইলাকা’-য়।
‘সড়ক’, মোহরা’, ‘করণ অর্জুন’, ‘খিলাড়িয়োঁ কা খিলাড়ি’, ‘চমৎকার’-সহ বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় ছবিতে খলনায়ক হিসেবে দেখা গিয়েছে গ্যাভিনকে। তাঁকে শেষবার পর্দায় দেখা গিয়েছে ২০০২ সালে, ডেভিড ধওয়নের ছবি ‘ইয়ে হ্যায় জলওয়া’ ছবিতে। ১৫ বছরের কেরিয়ারে হিন্দি ও মালয়ালম ভাষার প্রায় ৬০টি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
আমরা অনেকেই জানি না, গ্যাভিনের বড় মেয়ে এরিকা প্যাকার্ডও মডেলিং-এ উল্লেখযোগ্য নাম। তিনি তাঁর বোন ক্যামিলের সঙ্গে থাকতেন মা অ্যাভ্রিলের কাছে। কারণ গ্যাভিন ও অ্যাভ্রিলের বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল।
শেষ জীবনে গ্যাভিন থাকতেন মুম্বইয়ের কল্যাণে, তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে। শ্বাসকষ্টের সমস্যায় তিনি মারা যান ২০১২-র ১৮ মে, মাত্র ৪৮ বছর বয়সে। বান্দ্রার সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বেরিয়াল গ্রাউন্ডে তাঁর শেষকৃত্য কার্যত ছিল বলিউডের উপস্থিতিহীন।
এরিকার জন্ম ১৯৮৮-এর ১৩ নভেম্বর। মডেলিং-এ আসার পরিকল্পনা বিশেষ ছিল না। সব ওলটপালট হয়ে গেল একদিন বাজারে গিয়ে। মায়ের সঙ্গে বাজার করছিলেন এরিকা। চোখে পড়ে যান বিজ্ঞাপন এজেন্সির এক কর্মীর। তিনি এরিকাকে অফার দেন মডেলিং করার। প্রথমে নিমরাজি হলেও পরে সম্মত হন মডেলিং-এ।
মারি ক্লেয়ার-সহ বেশ কিছু বহুজাতিক সংস্থার বিজ্ঞাপনে এরিকা ছিলেন প্রধান মুখ। প্রিন্ট ও বৈদ্যুতিন, দু’টি মাধ্যমেই বিজ্ঞাপনে মডেলিং করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, সুন্দর মুখ, ভাল ফিগার, ক্যামেরার সামনে আইডিয়াল পোজ এবং কঠোর পরিশ্রমই ভাল মডেলিং-এর মূল শর্ত।
মডেলিং পেশা হলেও এরিকা ভোজনরসিক। খেতে ভালবাসেন সুশি, মেক্সিকান ও চিনা খাবার। তবে একদমই এড়িয়ে চলেন জাঙ্ক ফুড।
হিন্দির ছবির আর এক খলনায়ক শক্তি কপূরের ছেলে সিন্ধান্তের সঙ্গে বেশ অল্প বয়সেই বিয়ে হয়েছিল এরিকার। এক দশকের দাম্পত্যের পরে ২০১৬ সালে তাঁদের ডিভোর্স হয়ে যায়। সহকারী পরিচালক সিদ্ধান্ত অভিনয়ও করেন। বনিবনা না হওয়ায় দু’জনে বিচ্ছেদর সিদ্ধান্ত নেন।
এরপর ড্রামার শার্দূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল এরিকার। দু’জনেই তাঁদের ছবি শেয়ার করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এরিকার কথায়, ভারতের মতো দেশে যে কোনও মেয়ের পক্ষে মডেলিং-এর কেরিয়ার তৈরি করা বেশ কষ্টকর। কারণ সমাজের চোখে তাঁর পরিশ্রম দাম পায় না।