১০ ডিসেম্বর অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাচ্ছে, ‘নয়েজ অফ সাইলেন্স’। ছবি: সংগৃহীত।
স্বামী সুজয় ঘোষ সরকারি চাকুরে। স্ত্রী কণিকা ঘোষ পক্ষাঘাতগ্রস্ত। বাঙালি এই দম্পতি বংশানুক্রমে অসমের বাসিন্দা। কিন্তু এনআরসির খসড়া তালিকা বেরোলে দেখা গেল দু’জনই খসড়াছুট! শুরু হল লড়াই। নিজেদের ভারতীয় প্রমাণ করার।
অসমের সরকারি স্কুলের শিক্ষক। কিন্তু নাম আসেনি নাগরিকপঞ্জিতে। দিনের পর দিন শুনানি, তদ্বির চালিয়ে হতাশ শিক্ষক বেছে নেন আত্মহত্যার পথ। জানতেও পারেন না, মৃত্যুর পরে তাঁর নাম শেষ পর্যন্ত ঠাঁই পাবে এনআরসির তালিকায়।
মায়ানমারে রোহিঙ্গা গ্রামে হানাদারদের কবলে পড়ে মুনিমা জাহেদির মা। মায়ের খোঁজে মেয়ে সীমান্ত পার করে নদীপথে ঢুকে পড়ে ভারতে। শেষ পর্যন্ত দেখা হলেও মা মেয়েকে চিনতে অস্বীকার করেন। মেয়ের স্থান হয় ডিটেনশন শিবিরে।
আরও পড়ুন: ‘ডিকশনারি’ আসলে কী? মুখ খুললেন মোশারফ
আরও পড়ুন: কৃষকরা আমাদের মা-বাবার মতো, বললেন সোনু সুদ
এনআরসি নবীকরণ, সেই সংক্রান্ত আন্দোলন, প্রাণহানি, খসড়া ও চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ- গত পাঁচ বছর ধরে এই সবকিছুর সাক্ষী অসম। কিন্তু বলিউড বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ভারতের বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিয়ে ছবি হলেও এনআরসি বা অসমের এমন ব্যাপক মানবিক-সামাজিক সমস্যার কথা উঠে আসেনি কখনও। এই প্রথম সেই সমস্যা এবং তার সঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের যন্ত্রণাকে মিলিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্যের হিন্দি ছবি তৈরি হল মুম্বইয়ে। আপাতত ১০ ডিসেম্বর অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাচ্ছে, ‘নয়েজ অফ সাইলেন্স’।
অবশ্য এনআরসি নিয়ে বলিউডে প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবির প্রেক্ষপটে অসম আর বাঙালিদের দুর্দশার কথা থাকলেও শুটিং কিন্তু হয়েছে ত্রিপুরায়। পরিচালক ও লেখক সৈফ বৈদ্যের ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় আছেন বলিউডের অভিনেতা ফিরদৌস হাসান, পূজা ঝা এবং ত্রিপুরার কোকবরক ও বাংলা ছবির অভিনেতা হৃষি রাজ ও নবাগতা সায়ন্তিকা নাথ।
সৈফ বলেন, “আমার অসমবাসী বন্ধুর জীবনের সত্য ঘটনা অবলম্বনে ২০১৭ সালে গল্পটা লিখে ফেলেছিলাম। কিন্তু তখন প্রযোজকদের কাছে এনআরসি কী- তার ধারণাই ছিল না। তাঁরা অসমের বদলে উত্তরপ্রদেশ বা পঞ্জাবের প্রেক্ষাপটে ছবি বানাতে বলেন। কিন্তু গত বছর সিএএ নিয়ে অসমে আন্দোলন শুরু হলে মুম্বইয়ের মানুষও এনআরসির ব্যাপারে জানলেন। প্রযোজনা সংস্থাও সবুজ সঙ্কেত দিল।”