দীপিকা, ভিকি, অক্ষয় এবং প্রভাস।
নতুন বছরে বলিউডের পরবর্তী বড় বাজেটের ছবিগুলোর দিকে তাকালেই ভেসে উঠছে পৌরাণিক গল্প। তার মধ্যে ‘রামায়ণ’ ও ‘মহাভারত’ অবলম্বনে ছবির সংখ্যা বেশি। অনেকেই মনে করছেন, এ ধরনের মহাকাব্য-নির্ভর গল্পই হয়তো হলমুখী করবে দর্শককে। অতিমারি আক্রান্ত বছরে লকডাউন শুরু হওয়ার পর-পরই টিভিতে সম্প্রচারিত হয় ‘রামায়ণ’ ও ‘মহাভারত’, যা টিআরপির সব রেকর্ড ভেঙে দিয়ে নতুন রেকর্ড তৈরি করে। অনেকে মনে করছেন, সেই কারণেই হয়তো বলিউডে একের পর এক প্রজেক্টে বেছে নেওয়া হচ্ছে ‘রামায়ণ’, ‘মহাভারত’। কিন্তু আসল কারণ কি শুধুই বিনোদন আর টিআরপি-সংক্রান্ত?
গত বছর দীপাবলিতেই ঘোষণা করা হয়েছে ‘রাম সেতু’র। ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন অক্ষয়কুমার। ছবির পোস্টারে দেখা যাচ্ছে আধুনিক পোশাকে অক্ষয়, কাঁধে স্লিং ব্যাগ আর গলায় গেরুয়া উত্তরীয়, পিছনে রামের অবয়ব। ছবির পোস্টারের লুক সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে অক্ষয় লিখেছিলেন, ‘‘ভারতবাসীদের মনে রামের আদর্শ ও স্মৃতি সুরক্ষিত রাখার জন্যই এই সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে, যা যোগসূত্র স্থাপন করবে পরবর্তী প্রজন্মের সঙ্গেও।’’
তা হলে কি নেহাতই বিনোদনের জন্য এই বিষয় বেছে নেওয়া হচ্ছে? নাকি সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে ছবির বাণিজ্য সুরক্ষিত করতে এই ধরনের গল্পের দিকে ঝুঁকছে বলিউড? শুধু একটি ছবিই নয়। ‘রামায়ণ’ অবলম্বনে শুরু হয়েছে ‘আদিপুরুষ’-এর শুটিং। এই ছবিতে রামের চরিত্রে রয়েছেন প্রভাস ও লঙ্কেশের ভূমিকায় সেফ আলি খান। একই সঙ্গে একাধিক রামায়ণ-নির্ভর ছবি তৈরি হওয়ায় তারকাদের নিয়েও টানাটানি পড়ে গিয়েছে ইন্ডাস্ট্রিতে। মধু মন্টেনার ‘রামায়ণ থ্রিডি’-তে অভিনয় করার কথা ছিল প্রভাসের। কিন্তু প্রভাস ‘আদিপুরুষ’-এর শুটিং শুরু করে দেওয়ায় এখন সেই ছবির প্রোডাকশন টিম রামের চরিত্রে দক্ষিণী সুপারস্টার মহেশ বাবুকে কাস্ট করার কথা চিন্তাভাবনা করছে। ‘রামায়ণ থ্রিডি’র বাজেটও কম নয়, প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ছবিটির জন্য। পৌরাণিক গল্প বুনতে যে আয়োজন দরকার, তাতে খরচও বিস্তর। তার সঙ্গে রয়েছে বলিউড ও দক্ষিণের সুপারস্টারদের নাম। ‘রামায়ণ থ্রিডি’-তে সীতার ভূমিকায় দেখা যাবে দীপিকা পাড়ুকোনকে আর রাবণের চরিত্রে হৃতিক রোশনকে। দর্শক টানতে তারকার জৌলুসও কাজে লাগে বইকি! তাই এই সিনেমাগুলোয় দক্ষিণের সুপারস্টারও মাস্ট।
অন্য দিকে ‘উরি-দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর নির্মাতারা ভিকি কৌশলকে নিয়ে তৈরি করছেন ‘দ্য ইমমর্টাল অশ্বত্থামা’। এ ছবির গল্পও মহাভারতের একটি চরিত্রকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হবে।
মহাকাব্য-নির্ভর ছবির জাঁকজমক যে দর্শককে হলমুখী করবে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। ভারতের আমজনতাকে কাছে টানতে সিনেমা কাজে লাগানো যায় ‘ব্রহ্মাস্ত্র’-র মতো। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ভাবাবেগে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি সে পথেই চালিত হচ্ছে না তো?