হিন্দি ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রে এখন শিরে-সংক্রান্তি। তারকাদের জৌলুসময় জীবন নেটিজ়েনদের একাংশের কাছে চক্ষুশূল। কোভিডের জেরে গত কয়েক সপ্তাহে নিজেদের বেড়ানো বা শখ-আহ্লাদের ছবি পোস্ট করলেই কড়া সমালোচিত হয়েছেন সেলেবরা। শাহরুখ খানের পত্নী গৌরী খান এবং ছেলে আরিয়ান থেকে বরুণ ধওয়ন... বাদ যাননি কেউই। বড় তারকাদের যদি এই হাল হয়, তবে অন্যান্য তারকারাও যে এর থেকে নিস্তার পাবেন না, তা অনুমেয়। এই পরিস্থিতিতে বলিউডের ছোট-বড় সকল তারকাই কোভিড সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য বা মনোবল দৃঢ় রাখার বার্তা দিচ্ছেন তাঁদের সোশ্যাল ফিডে। রঙিন টিউলিপের ছবি পোস্ট করে অভিনেত্রী রাধিকা আপ্টে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘‘যাঁরা কাউকে হারিয়েছেন, প্রতিনিয়ত হারাচ্ছেন, যাঁদের শোক ভাগ করার মতো সাথী নেই, সকলের উদ্দেশে বলছি, এই নির্মম সময়ে যেন একজোট হয়ে থাকি।’’
গত ২৭ এপ্রিল থেকে মলদ্বীপে ভারতীয় পর্যটকের প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়েছে। তার ঠিক আগেই প্রেমিক রণবীর কপূরের সঙ্গে মলদ্বীপ ঘুরে এসেছেন আলিয়া ভট্ট। যে অভিনেত্রীর ইনস্টা-স্টোরি জুড়ে থাকত দিনযাপনের টুকরো মুহূর্ত, তাঁর ভেকেশনের একটি ছবিও ছিল না সেখানে। মলদ্বীপ থেকে ফেরার পরেই আলিয়ার সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে শুধুই কোভিড-আর্তদের সাহায্যের তথ্যাদি।
পেশাগত দায়বদ্ধতার কারণে সম্প্রতি নিজের ফ্যাশন শুটের ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন জাহ্নবী কপূর। কিন্তু বিরূপ মন্তব্যের স্রোতে সেই পোস্ট মুছে দিতে বাধ্য হন। সমালোচনা এবং বিবেকবোধ... দুয়ের কারণেই বলিউড সেলেবরা এখন খানিক পিছু হটেছেন।
অন্য দিকে টেলিভিশন অভিনেত্রী নিয়া শর্মা ‘অত্যুৎসাহী’ সেলেবদের কটাক্ষ করেছেন টুইটারে। কোনও ব্যক্তিবিশেষকে না বললেও, এক সাক্ষাৎকারে নিয়া বলেছেন, ‘‘যে সেলেবরা তেমন কোনও কাজ করেননি, তাঁরাও এখন এই ধরনের পোস্ট করেছেন।’’ নিয়ার নিশানায় সেলেবদের প্রোনিং ভিডিয়ো। অক্সিজেনের ঘাটতিতে শ্বাসকষ্ট হলে এই পদ্ধতিতে রোগী পরিস্থিতির খানিক সামাল দিতে পারেন। তবে চিকিৎসকদের দেখানো ভিডিয়ো পোস্ট না করে, সেলেবরা নিজে এই পদ্ধতি করে দেখানোয় আপত্তি নিয়ার। তাঁর বক্রোক্তি, ‘‘গুগলেও তো মানুষ দেখতে পারেন।’’
পরিস্থিতি এখন এমনই যে, ঠিক-ভুলের বিচার করা সম্ভব নয়। তবে হিন্দি ইন্ডাস্ট্রির অন্দরের বিভাজন এতে স্পষ্ট হয়ে উঠছে।