সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং ভুবন বাদ্যকার।
১৯ ফেব্রুয়ারির জন্য আট থেকে ৮০-র রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা। ওই দিন জি বাংলার ‘দাদাগিরি’র মঞ্চে দুই ‘ভুবন বিখ্যাত’ একসঙ্গে। প্রথম জন বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। দ্বিতীয় জন মাত্র একটি গানের হাত ধরে ছড়িয়ে গিয়েছেন গোটা বিশ্বে। তিনি ভুবন বাদ্যকার।
‘বাদামকাকু’ মানেই মুঠো ভর্তি বাদাম। সঙ্গে তাঁর স্বরচিত গান আর নাচ! এবং সবার জন্য শিল্পীর আনা বাদাম আর মিষ্টি। ‘দাদাগিরি’র মঞ্চেও তিনি এলেন, দেখলেন এবং জয় করলেন অনায়াসে। নিজের প্রতিভায় সবাইকে হারিয়ে শেষ হাসি হেসেছেন ভুবনই। ‘দাদা’র হাত থেকে যখন ট্রফি নিয়েছেন, তখন হাততালিতে ফেটে পড়েছে প্রতিযোগিতার মঞ্চ।
ভুবন বাদ্যকার আদ্যপান্ত মাটির মানুষ। তাঁর চলনে, বলনে, কথনে শহুরে জৌলুস নেই। সেই তিনি যখন ‘দাদাগিরি’র মঞ্চে, কতখানি শিখিয়ে পড়িয়ে নিতে হয়েছে চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে? বিষয়টি নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি। তবে টেলি পাড়ার খবর, ‘দাদাগিরি’র জন্মদাতা শুভঙ্কর চট্টোপাধ্যায় যিনি যেমন, তাঁকে সে ভাবেই ক্যামেরাবন্দি করতে ভালবাসেন। সেই জায়গা থেকেই ভুবন বাদ্যকারকে কিচ্ছু শেখানো হয়নি। শুধু প্রতিযোগিতায় নামার আগে তাঁকে খেলার নিয়ম বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর তিনি যা যা জানেন, যেমন গান, বাদাম ইত্যাদির উপরেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল।
সৌরভের মুখোমুখি হয়েও কি নিজস্ব ভঙ্গিতেই ছক্কা হাঁকালেন ‘বাদামকাকু’? পরিচালকের কথায়, ‘‘দিব্যি খেলেছেন ভুবন। একটুও ঘাবড়াননি। সবাই ভেবেছিলেন তিনি হয়তো উত্তর দিতে পারবেন না। এখানেও সবাইকে চমকে দিয়েছেন তিনি।’’ শুধু বোতাম টিপে খেলতে গিয়ে একটু সমস্যায় পড়েছিলেন।
হাতের কাছে ‘দাদা’কে পেয়ে নিশ্চয়ই প্রশ্নবাণ ছুড়েছেন ভুবন? অন্দরের খবর, এই এক জনই সৌরভকে নাকি রেহাই দিয়েছেন। বদলে, ভারতীয় প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জেনে নিয়েছেন ভুবনের ব্যক্তিগত জীবনের কথা। তাঁর গান তানজেনিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ায় জনপ্রিয় হওয়ায় প্রশংসা করেছেন। এ-ও জানা গিয়েছে, দুবরাজপুর গ্রামে ভুবনের মাটির বাড়িতে একটিমাত্র ঘর। সেখানেই সপরিবার থাকেন তিনি। লকডাউনে ছেলে বাইরে ছিল। নিজের চেষ্টায় তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে এনেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত, ‘ভুবন বিখ্যাত’ হওয়ার পরেই নাকি বাদাম বিক্রি কমে গিয়েছে ‘বাদামকাকু’র! সবাই তাঁর গান শুনতে চান। কেউ নাকি আর বাদাম খেতে চান না! পুরোটাই যে রটনা, অনুষ্ঠানে নাকি নিজে জানিয়েছেন ভুবন। ‘দাদা’কে বলেছেন, রোজ কম করে চার কেজি বাদাম তিনি বিক্রি করেন। কখনও কখনও সেই পরিমাণ বেড়ে হয় ছয় থেকে আট কেজি। পাশাপাশি, চলতি সপ্তাহের শনি ও রবিবার সৌরভ নিজেই অতিথি ওড়িয়া ‘দাদাগিরি’র মঞ্চে। সেখানে সঞ্চালকের ভূমিকায় স্থানীয় বিখ্যাত অভিনেতা ও সাংসদ অনুভব মহান্তি। ‘দাদা’কে এই প্রথম প্রতিযোগীদের সঙ্গে এক মঞ্চে খেলতে দেখা যাবে।