দিতিপ্রিয়া রায়।
পয়লা বৈশাখ ভাল কাটল না ‘রানি রাসমণি’র। দিতিপ্রিয়া রায়েরও না। শুটিং কবে শুরু হবে ঠিক নেই। লকডাউনের প্রথম দিকে হঠাৎ অবসর পেয়ে ভাল লাগছিল। মা-বাবার সঙ্গে অনেকদিন পর দীর্ঘ সময় কাটানো যাচ্ছিল। কিন্তু এই দীর্ঘ অবসর এখন খানিকটা ঘরে বসে থাকার বিরক্তি এবং আশঙ্কাও তৈরি করছে। অন্য অভিনেতাদের মতো তিনিও অপেক্ষা করছেন কবে ফিরবেন ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’-র সেই অতি আপন শুটিং ফ্লোরে, আপনজনদের সঙ্গে আবার কবে দেখা হবে।
ছবি আঁকা, সিনেমা দেখা, বই পড়া— এসব চলছে রোজই। পড়া শুরু করেছেন আমির নামের এক বালকের গল্প, খালেদ হুসেইনির উপন্যাস ‘দ্য কাইট রানার’। বই পড়তে পড়তে তিনি জড়িয়ে পড়ছেন বালক আমিরের সুখ-দুঃখের সঙ্গে। এসবের মাঝেও পয়লা বৈশাখের দিন একটু আলাদা, যদিও মন খারাপ পিছু ছাড়ছে না তাঁর। তবুপয়লা বৈশাখের দিন সকাল থেকে নতুন কাজ দিয়ে দিন শুরু করেছেন, ঘর পরিষ্কারে মায়ের সঙ্গে হাত লাগিয়েছেন।নিজের বিছানায় পেতে দিয়েছেন নতুন চাদর।
তিনি শেয়ার করলেন, “বাড়িটা পরিষ্কার করলাম। একটা নতুন চাদর অনেকদিন ধরে কেনা ছিল। সেটাই বিছানায় পাতলাম। মা ফুল দিয়ে ঠাকুর সাজিয়েছিলেন। আর কিছুই করিনি। চারপাশের যা অবস্থা, কারও মন ভাল নেই। এই রকম অবস্থায় কিছু সেলিব্রেট করা সম্ভব নয়। ভাল ভাল রান্না করে খাওয়াও সম্ভব নয়। রোজ যেরকম সাধারণ রান্না হচ্ছে কালও তাই হয়েছে।”
আরও পড়ুন- প্রয়াত ‘খুবসুরত’, ‘কামসূত্র’ খ্যাত অভিনেতা রঞ্জিত চৌধুরি, শোকপ্রকাশ বলিউডের
দেখুন দিতিপ্রিয়ার পোস্ট
A post shared by Ditipriya Roy (@roy_ditipriya) on
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকেই তিনি আইশোলেশনে। যদিও এডুকেশনের পরীক্ষা এখনও বাকি। লকডাউন কবে উঠবে, কবে পরীক্ষা হবে, কিছুই জানেন না। কিন্তু টালিগঞ্জের যে পাড়ায় তিনি থাকেন সেখানকার মানুষদের গতিবিধি দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছেন তিনি। সাত সকালে মর্নিং ওয়াক করতে দলে দলে লোক রাস্তায় বেরোচ্ছে। সকালের দিকে পুলিশি টহল প্রায় থাকে না। সেই সুযোগটা নেন স্থানীয় কয়েক জন। পুলিশ টহল দিতে এলেই দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়। দেখে মজাও পাচ্ছেন তিনি।
জানালেন,“মোটামুটি বাড়ির আশপাশে চোর-পুলিশ খেলা হচ্ছে, পুলিশ এলেই সবাই পালাচ্ছে, চলে গেলেই আবার বেরিয়ে পড়ছে। আমার মনে হয়, পুরো ‘টম অ্যান্ড জেরি’ টেলিকাস্টদেখছি। আবার বিকেল হলেই এখানে একটা চায়ের দোকান খুলে যায়। অনেকে চা খেতে বেরিয়ে পড়ে। জটলা করে আড্ডা চলে। সবাই ছুটির মেজাজে যেন। তাঁরা ওয়েল এডুকেটেড, সোসাইটিতে তাঁদের নাম রয়েছে। বোঝেন না এমন তো নয়।”
আরও পড়ুন- বাবার করোনা, হোম কোয়রান্টিনে রাখা হল অভিনেত্রী-সাংসদের মা এবং বোনকে
তাঁর পাড়ার কিছুটা দূরে দরিদ্র মানুষের ঘরবাড়ি। তাঁর মা মাঝে মাঝে সেখানে গিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে আসছেন। বস্তির মানুষেরা ঘরের সমস্যা থাকা সত্ত্বেও করোনা-বিধি মানার চেষ্টা করছেন।
তাঁদের সঙ্গে নিজেদের পাড়ার তুলনা করে অবাক হচ্ছেন দিতিপ্রিয়া। পাড়ার কিছু নিয়মভঙ্গকারীর বিষয়ে তাঁর মন্তব্য:“মানুষ পুলিশের ভয়ে ঘরে ঢুকে যাচ্ছে, কিন্তু রোগের ভয়ে কেউ ঘরে ঢুকছে না, এটাই খুব দুঃখের।”