উৎসবের আবহে রঙিন ধারাবাহিকের জুটিগুলি।
দর্শকদের কাছে আবদার জি বাংলার— ‘মুছে যাবে মলিনতা রঙের পরশে ওই, আজ বসন্ত জাগ্রত...দ্বার খোলা রেখো সই!’
সে দ্বার খোলা থাক বা না থাক, ছোট পর্দা হয়ে কিন্তু বাঙালির অন্দরমহলে রং বরষে! ক্যালেন্ডার মেনে শুক্র, শনিবার দু’দিন ধরে লাল-নীল-সবুজের মেলা। বাংলা চ্যানেলগুলো রবিবারকেও জুড়ে নিয়েছে তার সঙ্গে। তিন দিন ধরে সমস্ত ধারাবাহিক এবং রিয়্যালিটি শো-এ রং-পার্বণ। রঙিন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, মিঠাই-উচ্ছেবাবু, ঋষিরাজ-পিহু, এমনকি ঋদ্ধিমান-খড়িও! ধারাবাহিকের অভিনেতারা তো বটেই, উৎসবের আবহে রংদার জনপ্রিয় সঞ্চালকেরাও।
রঙের বাহারে কতটা ঝলমলে জি বাংলা, স্টার জলসা, কালার্স বাংলা?
জি বাংলায় চার নায়িকা শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, মনামী ঘোষ, ঐন্দ্রিলা সেন আর পূজা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক ‘নায়ক’ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। নিজে দোলের রঙে রঙিন। সঙ্গে নায়িকারাও। নাচে-গানে জমজমাট ‘দাদাগিরি’। একই দৃশ্য ‘দিদি নম্বর ১’-এও। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জোড়ায় জোড়ায় দোল খেলেছেন ইমন চক্রবর্তী-নীলাঞ্জন ঘোষ, সোনালী চৌধুরী-রজত ঘোষ দস্তিদার, স্বর্ণেন্দু সমাদ্দার-শ্রুতি দাস, জিতু কমল-নবনীতা দাস, সৌরভ সাহা-সুস্মিতা মুখোপাধ্যায়রা। শ্রুতির দাবি, কোনও দিন তাঁকে রং মাখাননি স্বর্ণেন্দু। প্রথম মাখালেন রিয়্যালিটি শো-এর মঞ্চেই!
‘দিদি নম্বর ১’-এ দোলের আমেজ।
‘মিঠাই’ ধারাবাহিকে এই প্রথম দোল উদযাপন মিঠাই-উচ্ছেবাবুর। সিদ্ধার্থ মোদক তার মিঠাই রানিকে লাল আবিরে রাঙিয়ে দিয়েছে। বদলে মিঠাই আবির ছুঁইয়েছে সিদ্ধার্থের পায়ে। তার পরেই জলের পাইপে এক সঙ্গে ধারাস্নান! টুকাইবাবুর গালে আবির ছুঁইয়েছে ধারাবাহিক ‘আমাদের এই পথ যদি না শেষ হয়’-এর ঊর্মি। সপরিবারে তারা ফিরে এসেছে নিজেদের ভিটে, সরকার বাড়িতে। তারই উদযাপনে রঙিন টুকাই-ঊর্মির প্রথম দোল। উদযাপন বাদ যায়নি ধারাবাহিক ‘পিলু’-তেও। আহির-পিলুর বিয়ের পর প্রথম দোল। এ দিকে, রঞ্জা পিলুর বিরুদ্ধে নতুন ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করে। সেই জালে জড়িয়ে পড়ে পিলু। তাকে অকারণ দোষারোপ করে আহির। ঋজুলা পিলুকে সুরমণ্ডল ছেড়ে চলে যেতে বলে। পিলু শপথ নেয়, সে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করবে। দোলে পিলু কি নিজেকে প্রমাণ করতে পারবে, নাকি চলে যাবে সুরমণ্ডল ছেড়ে?
স্টার জলসার প্রতিটি ধারাবাহিকে টানা দু’দিনের রুদ্ধশ্বাস পর্ব। ঋষিরাজ সেন অবশেষে চিনে নেবে তার প্রিয়দর্শিনীকে। টুবাইদা হয়ে রঙে রঙে ভরিয়ে দেবে পিহুকে। এ দিকে বিয়ের পর প্রথম দোলেই বিহানের প্রাণসংশয়। বিহান-খুকুমণি দোল উদযাপনে মগ্ন। অন্য দিকে, সৎ মা পথের কাঁটা দূর করতে ব্যস্ত। ভাড়াটে গুণ্ডা লাগিয়ে খুন করতে চাইবে বিহানকে। খুকুমণি পারবে স্বামীকে বাঁচাতে? উত্তর লুকিয়ে ‘খুকুমণি হোম ডেলিভারি’তে। ধারাবাহিক ‘ধুলোকণা’য় আবার চড়ুইয়ের ষড়যন্ত্রের শিকার ফুলঝুরি! দোলের সকালে প্রভাতফেরির সময় রঙে রাসায়নিক মিশিয়ে দেবে চড়ুই। সেই রং চোখে লাগতেই দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যায় ফুলঝুরির। কী ভাবে ফুলঝুরিকে বাঁচাবে লালন? এ দিকে, সিংহরায় বাড়ির মেজো ছেলে রাহুলের কীর্তি ফাঁস। এ বার খড়ির পাশে ঋদ্ধিমান। ধারাবাহিক ‘গাঁটছড়া’য় দ্যুতি, শ্রুতি না বিনিতা— কার সঙ্গে সাত পাক ঘুরবে রাহুল?
রং ছড়াচ্ছে কালার্স বাংলা চ্যানেলের প্রতিটি ধারাবাহিকেও। ‘মন মানে না’ উত্তাল ভাঙের সরবৎ, পিচকিরি, জল রং, ‘কাঁচা বাদাম’ গানে। রঙিন রুদ্র-গৌরীও। আবির হয়ে ভালবাসার রঙের পরশ লাগবে আনন্দী-অনুভবের মনেই। ধারাবাহিক ‘সোনা রোদের গান’-এ। বাদ থাকবে না মৌ-ও। সমস্ত ভুল বোঝাবুঝি দূরে সরিয়ে রূপমের পাশেই থাকবে মৌ। ‘মৌ-এর বাড়ি’তে শুধুই এখন নানা রঙের মেলা।