বিচার চেয়েও দুর্গোৎসব থেকে মুখ ফেরাতে নারাজ স্বস্তিকা। ছবি: সংগৃহীত।
৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী। ২০২৪ সালের এই দিনটিকে ঘিরে বাঙালির যাবতীয় পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছিল বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই। কিন্তু দুর্গাপুজো শুরুর ঠিক দু’মাস আগে, ৯ অগস্ট ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা। খোদ কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে, নিজের বিভাগে কর্মরত অবস্থায় নিহত হলেন এক মহিলা চিকিৎসক পড়ুয়া। ধর্ষণ ও খুনের এই ঘটনায় গত পনেরো দিন ধরে উত্তাল কলকাতা-সহ গোটা রাজ্য। প্রতিবাদ আন্দোলনের রেশ ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে, দেশের বাইরেও। সমাজমাধ্যমে প্রতিবাদের ফুলকি ছুটছে মুঠোবন্দি মোবাইল ফোনেও। সেখানেই গত বেশ কয়েক দিন ধরে উঠছে দুর্গাপুজো বয়কট করার দাবি। এ বার তার বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমেই সুর চড়ালেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, “আন্দোলন চলুক আবেগে নয়, যুক্তিতে।”
নেটাগরিকদের অনেকেই আরজি কর-কাণ্ডের জেরে দুর্গোৎসব থেকে দূরে থাকার ডাক দিয়েছেন বাঙালিকে। কিন্তু স্বস্তিকা এর মধ্যে কোনও যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না। তিনি সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট ভাগ করেছেন, যেখানে লেখা রয়েছে, ‘দুর্গাপুজো বন্ধ নয়, নিজের বোনাস ছেড়ে দিন।’
ওই পোস্টে দাবি করা হয়েছে, দুর্গাপুজোর সঙ্গে জড়িত রয়েছে বহু খেটে খাওয়া মানুষের রুটি-রুজি। যাঁরা দু’বেলা খেতে না পেলে কেউ খোঁজ নিতে যান না। তাঁদের মধ্যে যেমন রয়েছেন ফুচকা বিক্রেতা, তেমনই রয়েছেন বাংলার ঢাকিরাও। সারা বছর যাঁরা অপেক্ষা করে থাকেন এই দুর্গাপুজোর জন্য। একটু বেশি রোজগার করে সারা বছরটা স্বস্তিতে কাটাতে চান তাঁরা।
বহুলপ্রচারিত একটি পোস্ট ভাগ করে স্বস্তিকা বুঝিয়ে দিয়েছেন দুর্গাপুজো নিয়ে তাঁরও একই মতামত। যাঁরা দুর্গাপুজো বন্ধ করে নির্যাতিতার পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা দেখাতে চাইছেন বা আন্দোলন জারি রাখার কথা বলছেন, মূলত তাঁদের বিরুদ্ধেই মত প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী। ওই পোস্টে বলা হয়েছে, “দশতলার উপর থেকে দুনিয়া দেখতে ভাল লাগে। যাঁরা মাটিতে থাকেন তাঁরাই জানেন, কতটা কষ্ট হয়। পুজোও চলবে, বিচারও চলবে। তাই পুজো বন্ধের পোস্ট করে নিজের আবেগ মেটাবেন না।”
আরজি কর-কাণ্ডের পর থেকে সমাজমাধ্যমে সরব স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। ন্যায়বিচারের দাবিতে তিনি বার বার আন্দোলন জারি রাখার কথা বলেছেন। কিন্তু এ বার বললেন দুর্গাপুজো বন্ধ করার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুসরণকারীরা দ্বিধাবিভক্ত। কেউ কেউ তাঁর মতকে সমর্থন করেছেন। আবার তাঁর দিকে ধেয়ে এসেছে কটাক্ষও। এক নেটাগরিক লিখেছেন, “সে তো বুঝলাম! কিন্তু যাঁরা চাকরি করেন না, তাঁরা কী করবেন? মানে আপনারা?”