বনিতা সান্ধু।
আদতে শিখ বংশোদ্ভূত মেয়েটির সঙ্গে সরাসরি সংযোগ নেই কলকাতার। তবু ভারত তাঁর পূর্বপুরুষের দেশ বলে কথা। তাই কলকাতায় শুটিং করতে আসার আহ্লাদে ফুটছিলেন ২৩ বছরের ব্রিটিশ তরুণী অভিনেত্রী বনিতা সান্ধু। কিন্তু কলকাতায় আসতে না-আসতেই কোভিড পজ়িটিভ ধরা পড়ার ধাক্কায় সেই আনন্দ মাটি হয়ে গিয়েছে। ই এম বাইপাসের ধারে মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি এখন চিকিৎসাধীন।
বলিউডের ছবিতেই চলচ্চিত্রে অভিনয়ে অভিষেকও ঘটেছিল ব্রিটিশ অভিনেত্রী বনিতার। ২০১৮ সালে সুজিত সরকারের ‘অক্টোবর’ ছবিতে অন্যতম মুখ্য চরিত্রেই চোখে পড়েছিল বনিতাকে। ঘটনাচক্রে, সুজিতও এখন কলকাতায়। বনিতার সঙ্গে তাঁর দেখাও হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় সুজিত বলেন, ‘‘কলকাতায় আসার সময়েই বনিতার কোভিড পজ়িটিভ ধরা পড়েছিল। তবে তাঁর শরীরে অসুখের কোনও উপসর্গ নেই। হাসপাতালে বেচারিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। মেয়েটার খুব উৎসাহ ছিল, কলকাতায় ঘুরে শুটিং করার! এর মধ্যে এমন কাণ্ড।’’
তবে কলকাতায় আসার পরে তরুণী অভিনেত্রীর অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর হয়নি। ব্রিটেন থেকে আসার পরে তাঁকে রাজারহাটের সিএনসিআইতে রাখা হয়েছিল। তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে কোভিড-১৯ পজ়িটিভ রিপোর্ট আসার পরে সোমবার তাঁকে প্রথমে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেও বনিতার চিকিৎসা নিয়ে এক প্রস্ত নাটকীয় পরিস্থিতির অবতারণা হয়।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, হাসপাতালে গিয়ে এ দিন গাড়ি থেকে নামেননি ওই অভিনেত্রী। তাঁর ছবির পরিচালক হাসপাতালের যে ওয়ার্ডে অভিনেত্রীকে রাখা হবে, তা দেখতে চান। কিন্তু কোভিড হাসপাতালে এমন ভাবে ঢোকা যায় না বলে জানিয়ে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর পরে বনিতার সঙ্গে থাকা লোকজন তাঁকে বাইপাসের ধারের ওই হাসপাতালে নিয়ে যেতে চান। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের অধ্যক্ষা অনিমা হালদার বলেন, ‘‘ওঁরা নিজেরাই ওই বেসরকারি হাসপাতালে যেতে চেয়েছিলেন। সেই মতো আমরাও কাগজপত্র তৈরি করে স্থানান্তরিত করে দিয়েছি।’’
সুইস-ভারতীয় চিত্র পরিচালক কমল মুসালের ছবি ‘কবিতা অ্যান্ড টেরিজ়া’ ছবির শুটিংয়ে কলকাতায় এসেছিলেন বনিতা। ছবির অনেকটাই লকডাউনের আগে শুটিং করা হয়ে গিয়েছিল। এখন বনিতার রোগভোগে ফের শুটিংয়ে খানিক ধাক্কা।