প্রসেনজিৎ, জিৎ ও সোহম—টলিউডের তিন বাঘা নায়ক এক ছবিতে, কিন্তু কেউ কারও সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেননি! হ্যাঁ, ব্যাপারটা সত্যি। তিনটি ভিন্ন গল্প একসঙ্গে গেঁথেছেন তিন পরিচালক। প্রতিটি গল্পের দৃশ্য যেখানে শেষ হয়েছে সেখান থেকে শুরু হয়েছে অন্য গল্প। এ ক্ষেত্রে কোথাও ছন্দ কাটেনি।
প্রথম গল্প ‘বাঘ’। বারিন ঘটককে (জিৎ) বাঘ বলেই ডাকে তার সহকর্মীরা। সে পুলিশের লোক। আন্ডারকভার কাজে এই মুহূর্তে শ্রেষ্ঠ। মুখ্যমন্ত্রীর ভরসার পাত্র। এক কথায় ওয়ান ম্যান আর্মি। ছবির শুরুতেই স্পাইডারম্যানের মতো অভিনব কায়দায় সে শত্রু দমন করে মুখ্যমন্ত্রীর খুনের প্ল্যান তছনছ করে দেয়। বিভিন্ন দিক থেকে উড়ে আসা গুলিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এক গুলিতে শত্রুনাশ করে পটাপট! কিন্তু সে-ই মানুষটাই তার স্ত্রীর (সায়ন্তিকা) ভয়ে কুপোকাত। সে-ই ট্যাক্সিওয়ালার কাছে পাঁচ টাকার জন্য ঝগড়া করে। আর পাঁচটা জিতের ছবির মতো ‘বাঘ’ও অ্যাকশন ও বিদেশের মাটিতে গানের দৃশ্যে ভরা। সুতরাং এই ধরনের গল্পের সঙ্গে বাস্তবতার মিল খোঁজা বাতুলতা। ‘বন্দি’-তে সোহম-শ্রাবন্তীর জুটির রসায়ন ভাল। হীরক (সোহম) জয়ন্তী (শ্রাবন্তী) বিজনেস পার্টনার। কাজ করতে গিয়ে পদে পদে দু’জনের মতবিরোধ কমেডির ছাঁচে ফেলা হয়েছে। কিন্তু এরই মাঝে একটা খুনকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় সাসপেন্স। গল্প পরিচিত ছকের বাইরে হলেও চিত্রনাট্য, সংলাপ নড়বড়ে। বাস্তবতার প্রলেপ লাগিয়ে তা আরও ভাল ভাবে পরিবেশন করাই যেত।
বাঘ বন্দি খেলা
পরিচালনা: রাজা চন্দ, সুজিত মণ্ডল, হরনাথ চক্রবর্তী
অভিনয়: প্রসেনজিৎ, জিৎ, সোহম, সায়ন্তিকা, শ্রাবন্তী, ঋত্বিকা, অঞ্জনা
৫/১০
শেষ গল্প ‘খেলা’য় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় অভিনয় করছেন এক জন আইনজীবীর চরিত্রে। যার কাছে আদর্শর চেয়ে মামলা জেতা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু একটা ঘটনা বদলে দেয় তাকেও। এই গল্পে সমাজের ক্রমবর্ধমান ধর্ষণের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। ‘খেলা’র গল্প, সংলাপ, চিত্রনাট্য ও অ্যাকশনের বাঁধুনি তুলনায় সহনীয়। চড়া দাগের ‘বাঘ’ ও ‘বন্দি’র পােশ তাই ‘খেলা’ সফিসটিকেটেড। তিন পরিচালক মিলে যখন নতুন কিছু করলেনই তখন মেকিংয়ের দিকেও আরও একটু নজর দেওয়ার প্রয়োজন ছিল বইকী। কখনও ঝিংচ্যাক কখনও মেলোডি— জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গীত পরিচালনা পারফেক্ট। ছবিতে নজর কেড়েছে বিশ্বনাথ বসুর মেদঝরা স্মার্ট লুক এবং ঋত্বিকার পরিণত অভিনয়।