গানের একটি দৃশ্য।
বিখ্যাত র্যাপার বাদশা আর জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ মিলে গেলেন এক ‘গেন্দা ফুল’ গানে। গানটি ভারতে ইউটিউবে এক নম্বর ট্রেন্ডিং চলছে এই ভয়াবহ লকডাউনের সময়।
বাদশা গাইছেন, 'বডি তেরি মাখান জেইসি/খানে মে বস তু বাটার খায়ে'। বাদশার গানের এই পংক্তি নিয়ে তীব্র আপত্তি উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। নেটাগরিকদের এক অংশের বক্তব্য, ‘এই ফিউডাল, সেক্সুয়াল কমেন্ট এই সময়ে আমরা শুনছি। কেন? বন্ধ হোক এই গান।’
‘গেন্দা ফুল’ শুধু জ্যাকলিনের কোমর নাচায়নি। জ্যাকলিনের কোমরের নীচের অংশে ট্যাটু নিয়ে করেছে অরুচিকর রসিকতাও। আর এর সঙ্গে জুড়েছে বাংলার লোকসঙ্গীতকেও। রিমিক্সে মিশেছে, ‘বড়লোকের বিটি লো/লম্বা লম্বা চুল;
এমন মাথা বিন্ধে দিব/লাল গেন্দা ফুল৷’ এই গানের রচয়িতা রতন কাহার।
এইখানেই বাদশার বিরুদ্ধে সরব সোশ্যাল মিডিয়া।
দেখুন কী বলছেন নেটাগরিকেরা
আরও পড়ুন- শন থেকে মনামি, কী করছেন লকডাউনে?
১৯৭৬ সালে গানটির রেকর্ডিং করেন স্বপ্না চক্রবর্তী৷ অশোকা রেকর্ড কোম্পানির সেই গান লোকের মুখে মুখে ফিরতে শুরু করে৷ জেতে গোল্ডেন ডিস্ক পুরস্কারও৷ লোকসঙ্গীতের সমঝদার বাদে আমজনতার ক’জন শুনেছেন রতন কাহারের নাম?
সংগীতশিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র বললেন, ‘‘আমি লোকগানের মানুষ নই, কিন্তু যথেষ্ট সম্মান দিয়ে এই লোকগান গাই। এই লোকগান নিয়ে কেউ ব্যবসা করছে দেখলে খুব খারাপ লাগে। এই রতন কাহার, স্বপ্না চক্রবর্তীর মতো শিল্পীরা খুব অসহায় অবস্থায় দিন কাটিয়েছেন। এই ‘গেন্দা ফুল’ গানে তাঁদের স্বীকৃতি জানানো হয়নি বলে যে মানুষ এর বিরোধিতা করছেন এই বিষয়টা অন্তত আশাজনক।’’
শুনুন বাদশার সেই বিতর্কিত গান
অনেকেই মনে করছেন, কোনও ক্রেডিট ছাড়াই ‘বড় বড় বেটি লোক’ গানের বিখ্যাত দুই লাইন কার্যত চুরি করা হয়েছে। গানের রচয়িতার নাম দেখা গেল বাদশা।
কী বলছেন সঙ্গীতশিল্পী রূপঙ্কর? ‘‘ভিডিয়োতে রতন কাহারের স্বীকৃতি না থাকলে এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। লোকগানের ক্ষেত্রে এটা যথেষ্ট অসম্মান। ওঁদের উচিত স্বীকৃতি দিয়ে ভিডিয়ো রি পোস্ট করা।’’
পুরো শরীরকেন্দ্রিক গান। অশালীন শব্দ। বাদশা জ্যাকলিনের পেটটাকে গিটারের মতো বাজাচ্ছে তো কখনও কোমর নিয়ে মন্তব্য করছে। বাংলার কালজয়ী লোকগান পাঞ্চলাইন হিসেবে কাজ করেছে এই ভিডিয়োয়। নেটাগরিকরা তাই ধিক্কার জানাচ্ছেন বাদশাকে।