অনির্বাণের চোখে সেরা হিসেবে শ্বাশতের থেকে এগিয়ে ঋত্বিক। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
প্রশ্নটা ছিল, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় না ঋত্বিক চক্রবর্তী— কে বড় অভিনেতা? আনন্দবাজার অনলাইনের ‘বছরের বেস্ট’ অনুষ্ঠানে সেরা অভিনেতার পুরস্কার নিতে উঠে সেই প্রশ্নের উত্তর দিলেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য। সঞ্চালকের প্রশ্নে সামান্য ভেবে অনির্বাণের সটান জবাব, ‘‘ঋত্বিক চক্রবর্তী।’’ যা শুনে সঞ্চালক বললেন, ‘‘এত সরাসরি আর খোলাখুলি স্পষ্ট জবাব? আপনি তো কোনওদিন রাজনীতিতে যেতে পারবেন না!’’
কে সেরা? বস্তুত, উপরোক্ত তিন জনকে নিয়ে ইদানিং ত্রিধাবিভক্ত বাংলা ছবির দর্শককুল। ঋত্বিক, শাশ্বত এবং অনির্বাণ— সমসাময়িক এই তিন জন আসলে নিয়ত ধাওয়া করছেন উৎকর্ষকে। তাই জনমানসে প্রশ্ন ভাসে— কে এগিয়ে, পিছিয়েই বা কে। একটি ছবিতে ঋত্বিকের অভিনয় তাক লাগালে অন্য ছবিতে দর্শকমনে নাড়াচাড়া ফেলেন শাশ্বত। ঠিক তার পরেই অভিনয় করে হইচই বাধিয়ে দেন অনির্বাণ। স্বভাবতই কে যে এগিয়ে, আর কে পিছিয়ে, তার ফয়সালা আর হয় না। তাই আনন্দবাজার অনলাইন ভেবেছিল, সরাসরি মঞ্চে অনির্বাণকেই সেই প্রশ্নটা করা যাক। কঠিন প্রশ্ন। কিন্তু জবাব এল সরাসরি।
দীর্ঘদিন ধরে বাংলা সিনেমার চর্চা করছেন, এমন প্রাজ্ঞরা অবশ্য এমন তুলনায় যেতে চাইছেন না। বরং তাঁরা বলছেন, বাংলা ছবির জগতে অভিনয়ের মানের বিচারে বৈচিত্রের স্বর্ণযুগ এই ত্রয়ীর হাত ধরেই। তাঁদের মতে, এই প্রজন্মের তো বটেই, সর্বকালীন হিসেবেও এই ত্রয়ীই সকলের চেয়ে এগিয়ে। এবং তাঁরা এই কথা বলছেন মহানায়ক উত্তম কুমার বা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কথা মাথায় রেখেও।
অনেকে মনে করেন, অভিনয় কেবল চরিত্রায়ণেই সীমাবদ্ধ? ঋত্বিক, শাশ্বত এবং অনির্বাণ কিন্তু বদলে দিয়েছেন সেই চিরাচরিত ধারণা। চরিত্রকে ভেঙেচুরে নির্মাণ করেছেন অভিনয়ের নিজস্ব একক। যা বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শক অনতি অতীতে দেখেননি। আর তাই উত্তম বা সৌমিত্রকে মাথায় রেখেও এই ত্রয়ীকেই বাংলার চলচ্চিত্র অভিনয়ের আঙিনায় শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা দিতে তত আপত্তি আর নেই চির-নস্টালজিক বাঙালি জনতার।