প্রযোজক দেবের সাত বছর। নিজস্ব চিত্র।
অভিনেতা দেব গত বছর ‘সাবালক’ হয়েছেন। রবিবার প্রযোজক দেব সদ্য সাত বছরে পা দিলেন।
২০১৭ থেকে ২০২৪। ‘চ্যাম্প’ থেকে ‘খাদান’। ১৩টি ছবি ইতিমধ্যেই প্রযোজনা করে ফেলেছেন তিনি। এ দিন দেবের প্রযোজনা সংস্থার তরফে এ কথা ঘোষণা করা হয় সমাজমাধ্যমে। তার পরেই অনুরাগীদের শুভেচ্ছার বন্যা। দেবও সকলের আশীর্বাদ প্রার্থনা করেছেন। ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁর দল, প্রত্যেক অভিনেতা, পরিচালক এবং সহ-প্রযোজকদের। তাঁরা পাশে না থাকলে সাত বছর ধরে তিনি প্রযোজনায় থাকতে পারতেন না। সাত বছরে দেব বাংলা ছবির দুনিয়ায় কতটা পালাবদল ঘটাতে পারলেন? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল পরিচালক অভিজিৎ সেন, সহ-প্রযোজক অতনু রায়চৌধুরী এবং অভিনেত্রী ইশা সাহার সঙ্গে। কী বলছেন তাঁরা?
প্রযোজক দেবকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত অভিজিৎ। তাঁর কথায়, ‘‘যে কোনও নতুন বিষয় ওঁর কাছে নিয়ে যান। কখনও খালি হাতে ফিরবেন না। যে কোনও বিষয় ওঁর সঙ্গে বসে আলোচনা করুন। ঠিক একটা না একটা রাস্তা বের করে দেবেন। এটাই প্রযোজক দেব।’’ প্রযোজক দেবের সঙ্গে পর পর তিনটি ছবি ‘টনিক’, ‘প্রজাপতি’, ‘প্রধান’ছবিতে কাজ করেছেন অভিজিৎ। তাঁর মতে, ‘‘একমাত্র দেব-ই বড় বাজেটের হিন্দি ছবির সঙ্গে একই সময়ে বাংলা ছবি নিয়ে আসার মতো ঝুঁকি নিতে পারে। সেই ছবি কিন্তু অনায়াসে কোটির অঙ্কে পা রাখে।’’ শুধু তাই নয়, সেটে প্রযোজক দেব কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চেয়ার বয়ে নিয়ে যান! সে কথা জানাতে ভোলেননি তিনি। পরিচালক জানিয়েছেন, এক বার উত্তরবঙ্গে শুটিংয়ের সময় হঠাৎ কুয়াশা। জায়গা বদল না করলে শুটিং হবে না। দেব সে দিন ইউনিটের বাকিদের সঙ্গে হাসিমুখে জিনিসপত্র বয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন।
প্রযোজক দেবের সঙ্গে অতনু রায়চৌধুরী, অভিজিৎ সেন, ইশা সাহা। সংগৃহীত।
সহ-প্রযোজকদের সঙ্গেও কি এতটাই মধুর সম্পর্ক? আনন্দবাজার জানতে চেয়েছিল অতনু রায়চৌধুরীর কাছে। তাঁর সটান জবাব, ‘‘আমার সঙ্গে সারা ক্ষণ ফাটাফাটি! গল্প, চিত্রনাট্য, অভিনেতা বাছাই, শুটিংয়ের জায়গা বাছাই করা থেকে খরচ, সব কিছু নিয়েই তর্ক হয়।’’ অতনু দরাজ হাতে খরচ করতে চাইলে দেব তাতে লাগাম টানবেন। অতনুর কোনও অভিনেতাকে পছন্দ হলে দেব শুরুতে দ্বিধা প্রকাশ করেন। তার পরে রফা হবে তাঁদের মধ্যে। শেষে অবশ্যই মধুরেণ সমাপয়েৎ। শেষে অতনুর যোগ, ‘‘আমদের সম্পর্ক বাবা-ছেলের। ফলে, এই রেষারেষি আজীবন থাকবে।’’ রসিকতাও করেছেন, তাঁদের এই দ্বন্দ্বে সবচেয়ে সমস্যায় পড়েন পরিচালক অভিজিৎ। তিনি কাকে সমর্থন করবেন কিছুতেই বুঝে উঠতে পারেন না।
অভিনেতা দেবের মতোই প্রযোজক দেবও যে খুব সাহসী, জানাতে ভোলেননি ‘কাছের মানুষ’ ছবির নায়িকা ইশা। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি দেবদার একটা ছবির নায়িকা। কিন্তু ওঁর বাকি ছবিগুলো তো দেখেছি! সাহসী না হলে ‘ব্যোমকেশ’, ‘কবীর’, ‘বাঘাযতীন’-এর মতো ছবির প্রযোজনা করতে পারতেন না।’’ এই জায়গা থেকে নায়িকার আরও দাবি, দেব সাহস দেখিয়েছেন বলেই সাত বছরে তেরোটি ছবি বানাতে পেরেছেন। জীবনী ছবি থেকে পারিবারিক ছবি— সব আছে তাঁর ঝুলিতে। তাঁর এই পদক্ষেপ বা ভাবনা শিক্ষণীয়। নায়িকারা প্রযোজক দেবের কাছে নিজেদের সুবিধে-অসুবিধে কত সহজে বলতে পারেন? ইশার মতে, তিনি এ রকম কোনও সমস্যায় পড়েননি। তাঁর সঙ্গে দেবের আলাপ কর্মসূত্রে। সেই জায়গা থেকে বলতে পারেন, দেবের কাছে নারী মাত্রেই সম্মাননীয়।