অহমিয়া ছবির পাশে অনুরাগ কাশ্যপ

বিষয় ও ভাবনার অভিনবত্বে ছাপ ফেলল অহমিয়া পরিচালকদের একাধিক ছবি।

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত 

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share:

‘আমিষ’ ছবির দৃশ্য

দেড় ঘণ্টা ধরে রোদে দাঁড়ানো লাইনটা যখন মাধবদেব অডিটোরিয়ামের মূল দরজায় আছড়ে পড়ল, শনিবার বিকেলে ততক্ষণে ভিতরে দর্শকাসনে একটা জায়গাও খালি নেই। প্রথমে অনুরোধ, তার পর হুঙ্কার। সিনেমার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বন্ধ দরজার বাইরে থেকে চলল ধাক্কা। ভিতরে তখন হলের মাটিতেও তিলধারণের জায়গা নেই। এমন সাড়া ফেলেই অনুরাগ কাশ্যপের গুড-ব্যাড ফিল্মসের ব্যানারে পরিবেশিত প্রথম ছবি ‘আমিষ’ মুক্তি পেল গুয়াহাটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। ভাস্কর হাজারিকার ‘আমিষ’ যে এমন সাড়া ফেলবে, তা পরিচালক, শিল্পীরাও ভাবতে পারেননি।

Advertisement

একে তো জটিল বিষয়, তাতে মুখ্য ভূমিকায় আনকোরা অভিনেতা, অভিনেত্রী। এমন ঝুঁকি নিয়েও কী করে সাড়া পেলেন অনুরাগ কাশ্যপ? পরিচালক ভাস্কর জানান, ‘‘বিষয়টাই তো তুরুপের তাস। অসম তো বটেই, ভারতেও এই ধরনের বিষয় নিয়ে আগে ছবি হয়নি। একেবারে চূড়ান্ত ‘ডার্ক ফিল্ম’ যাকে বলে। আর সেই জন্যই অনুরাগের পছন্দ হয়ে যায় আমাদের ছবি।’’ ভাস্করের প্রথম ছবি ‘কথানদী’ও জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিল। কিন্তু ‘আমিষ’-এর বিষয় একেবারে আলাদা। এক মধ্যবয়স্ক মহিলা শিশুচিকিৎসক আর নৃতত্ত্ববিদ্যার তরুণ গবেষকের মধ্যে মাংস খাওয়ার টানে প্লেটনিক প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই টানই এক অন্ধকার মোড় নেয়। গল্প দাঁড়িয়ে যে চরিত্রের উপরে, সেই চিকিৎসক নির্মালি শইকিয়ার ভূমিকায় ভাস্কর বেছে নেন আদতে দাঁতের চিকিৎসক ও নৃত্যশিল্পী লিমা দাসকে। এটাই প্রথম অভিনয় লিমার। কিন্তু এমনই বাজিমাত করেছেন যে, এই বছর ট্রিবেকা চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা ছবি-সহ পাঁচ বিভাগে মনোনয়ন পায় এই ছবিটি। সদ্য সমাপ্ত সিঙ্গাপুর চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা পরিচালকের পাশাপাশি সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারও আদায় করে নেন লিমা।এক অহমিয়া পরিচালকের ছবি যখন সব সংস্কার ভেঙে অন্ধকারের দিকে যাওয়ার গল্প বলে, তখনই উৎসবে অন্য দুই অহমিয়া পরিচালকের ছবি এক জনজাতির কুসংস্কারের অন্ধকার দিকের গল্প তুলে ধরল। ববি শর্মা বড়ুয়ার ‘মিশিং’ প্রসঙ্গে ববি জানান, এক অচেনা জনজাতির অজানা সংস্কৃতি তুলে ধরা ও লুপ্তপ্রায় ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখাও আমার উদ্দেশ্য ছিল। ‘মিশিং’-এর কাহিনিকার সাহিত্যিক ইয়েশে দোর্জি থোংচি। কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাজীব ক্রো। অপর পরিচালক মঞ্জু বরার ছবি, ‘ইন দ্য ল্যান্ড অব পয়জ়ন ওমেন’ও অরুণাচলেরই গল্প। ঘটনাচক্রে লেখকও একই। চিন অধিকৃত তিব্বত সীমান্তের কাছে জেমিথাংয়ে থাকা তিব্বতি পানচেনপা জনজাতির মানুষের বিশ্বাস, মেয়েদের নখে থাকে বিষ। তাই তারা খেতে দিলে পুরুষদের মৃত্যু অনিবার্য। এ দিকে আধুনিক শিক্ষিত পানচেনপা প্রজন্ম তা মানতে নারাজ। তা নিয়ে রহস্য, দ্বন্দ্ব। এ ভাবে বিষয়-ভাবনার জোরে দর্শক ও সমালোচকদের নজর কেড়েছে ছবিগুলি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement