দিদি আমিশার মতো তিনিও ছিলেন মেধাবী ছাত্র। দিদির দেখানো পথে উচ্চশিক্ষার শেষে তিনিও পা রেখেছিলেন বলিউডে। কিন্তু সাফল্য বা জনপ্রিয়তায় দিদির ধারেকাছেও পৌঁছতে পারেননি। বলিউডের আকাশে নায়ক হিসেবে অস্মিত পটেল মিলিয়ে যান বুদ্বুদের মতোই।
অস্মিতের জন্ম ১৯৭৮-এর ১৩ জানুয়ারি, দিল্লিতে। আমিশা তাঁর থেকে বয়সে ৩ বছরের বড়। বাবা অমিত এবং মা আশার নাম মিলিয়ে তাঁদের দুই ভাইবোনের নামকরণ করা হয়।
মুম্বইয়ের মিশনারি স্কুল থেকে পাশ করার পরে অস্মিত পাড়ি দেন আমেরিকা। অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন বিজনেস স্টাডিজ নিয়ে।
দেশে ফিরে চাকরি না করে অস্মিত আত্মপ্রকাশ করেন বলিউডে। অভিনেতা হিসেবে নয়, তাঁর প্রথম কাজ ছিল ক্যামেরার পিছনে, সহকারী পরিচালক হিসেবে। ‘আপ মুঝে অচ্ছে লগনে লগে’, ‘আওয়ারা পাগল দিওয়ানা’, ‘রাজ’ এবং ‘ফুটপাত’—বিক্রম ভট্টের ৪টি ছবির ইউনিটে অস্মিত ছিলেন সহকারী পরিচালক।
পরবর্তী কালে বিক্রমেরই পরিচালনায় অভিনেতা হিসেবে বলিউড প্রথম বার পায় অস্মিতকে। তাঁর প্রথম ছবি ছিল ‘ইন্তেহা’।
২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে অস্মিত ছাড়াও অভিনয় করেছিলেন বিদ্যা মলভাড়ে, অবতার গিল, অনুপ সোনি-সহ অন্যান্য কুশীলব।
বক্স অফিসে ‘ইন্তেহা’ সফল হয়েছিল। তবে অস্মিতের কেরিয়ারে বাড়তি কোনও গতি যোগ করতে পারেনি এই ছবি।
আত্মপ্রকাশে সাফল্য না এলেও অস্মিতের কাছে অভিনয়ের সুযোগ আসা বন্ধ হয়নি। ২০০৫ সালে তিনি অভিনয় করেন ‘থ্রিলার’ এবং ‘সিলসিলে’-তে। দু’টি ছবিই ব্যর্থ হয় বক্স অফিসে।
এর পর তিনি অভিনয় করেন ‘দিল দিয়া হ্যায়’, ‘বেনারস’ এবং ‘ফাইট ক্লাব’-এ। ২০০৭-এ ‘কুড়িয়োঁ কা হ্যায় জমানা’ ছবিতে অস্মিত স্ক্রিন শেয়ার করেন মহিমা চৌধুরি এবং রেখার সঙ্গে।
২০০৯-এ অস্মিতের ছবি ‘টস’ মুক্তি পায়। তবে তাঁর কোনও ছবিই বক্স অফিসে সাফল্যের মুখ দেখেনি।
বড় পর্দায় ব্যর্থ অস্মিত ছোটপর্দাতেও অংশ নিয়েছেন ‘বিগ বস’-সহ অন্যান্য রিয়্যালিটি শো-এ। কিন্তু সেখানেও প্রত্যাশিত সাফল্য অধরাই থেকে গিয়েছে।
যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অস্মিত অভিনয় করছেন ওয়েব সিরিজেও। তিনি আছেন ‘পেশওয়ার’ ওয়েব সিরিজে।
২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর পেশওয়ারে আর্মি পাবলিক স্কুলে হানা দেয় তেহরিক-ই-তালিবান। স্কুলের ১৩২ জন পড়ুয়া-সহ হত্যালীলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৪৯ জন। নারকীয় সেই ঘটনা ঘিরেই তৈরি হচ্ছে এই ওয়েব সিরিজ। অস্মিত অভিনয় করছেন মূল চক্রী জঙ্গি আবু শামিলের চরিত্রে।
কেরিয়ারে সাফল্য না এলেও অস্মিতকে ঘিরে গুঞ্জন তৈরি হতে সময় লাগেনি। মুনমুনকন্যা রিয়া সেনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল বলে শোনা যায়।
রিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে বীণা মালিক এবং তার পরে সারা খানও ছিলেন অস্মিতের বিশেষ বান্ধবী। কিন্তু কোনও সম্পর্কই শেষ অবধি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
বলিউড অভিনেত্রী মহক চহালের সঙ্গে অস্মিতের প্রেম নিয়ে দীর্ঘ গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল বলিউডে। সেই গুঞ্জন সত্যি প্রমাণ করে ২০১৭ সালে তাঁদের এনগেজমেন্ট হয়। শোনা গিয়েছিল তাঁদের ডেস্টিনেশন ওয়েডিং হবে।
কিন্তু সেই সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যায় কয়েক মাস আগে। অস্মিত এবং মহক দু’জনেই জানিয়েছেন তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। সম্পর্কের টানাপড়েন থেকে দূরে অস্মিত এখন ব্যস্ত তাঁর ভেঙে পড়া কেরিয়ারকে নতুন করে সাজাতে।