Bollywood

বর্ণবিদ্বেষের শিকার থেকে জাতীয় পুরস্কার, বলিউডে যোগ্য স্বীকৃতি পেয়েছেন বাংলার জামাই?

দর্শকদের বড় অংশের মতে, আশিস বিদ্যার্থীকে সে ভাবে ব্যবহার করতে পারেনি বলিউড। তিনি তাঁর প্রতিভার যোগ্য স্বীকৃতি পাননি।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২১ ০৯:৩১
Share:
০১ ১৯

বলিউডের খলনায়কদের মধ্যে তিনি অন্যতম। তাঁর অভিনীত চরিত্রগুলি দর্শকদের কাছে স্মরণীয়। কিন্তু দর্শকদের বড় অংশের মতে, আশিস বিদ্যার্থীকে সে ভাবে ব্যবহার করতে পারেনি বলিউড। তিনি তাঁর প্রতিভার যোগ্য স্বীকৃতি পাননি। আক্ষেপ, অনেকেরই।

০২ ১৯

আশিসের জন্ম ১৯৬৫ সালে। শৈশব কেটেছে দিল্লির করোলবাগে ভাড়াবাড়ির একটি ছোট ঘরে। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন তাঁর বাবা। কয়েক বছর কাজ করেছিলেন সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমির আর্কাইভেও। আশিসের মা ছিলেন প্রবাসী বাঙালি। তিনি ছিলেন কত্থক শিল্পী।

Advertisement
০৩ ১৯

বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান আশিসের শৈশব ছিল নিঃসঙ্গ। স্কুলে কোনও দিনই পড়াশোনায় মন বসত না। ভাল লাগত অভিনয়-সহ শিল্পের অন্যান্য ধারা। মাঝে মাঝে মায়ের সঙ্গে কত্থক নাচেও পা মেলাতেন তিনি। কলেজে পৌঁছে অভিনয়ের নেশা চেপে বসল মনে।

০৪ ১৯

ইতিহাসের ছাত্র আশিসের শৈশবের নিঃসঙ্গতা দূর হল কলেজজীবনে। মনোজ বাজপেয়ী এবং বিশাল ভরদ্বাজ ছিলেন আশিসের কলেজজীবনের বন্ধু। স্নাতক হওয়ার পরে ১৯৮৬ সালে আশিস ভর্তি হন ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা বা এনএসডি-তে। এত দিন থিয়েটারের শখ ছিল। এনএসডি-তে গিয়ে বিশ্বের সিনেমার সঙ্গে পরিচয় হল তাঁর।

০৫ ১৯

তবে অভিনয় শিক্ষণের পাশাপাশি উপার্জন নিয়েও ভাবতে হত আশিসকে। কারণ তাঁর জন্মের সময় তাঁর বাবার বয়স ছিল ৫৩ বছর। ফলে এনএসডি-তে আশিস যখন পড়ছেন, তখন তাঁর বাবা মা দু’জনেই অবসরপ্রাপ্ত। সংসার চালানোর দায়িত্ব এসে পড়ল আশিসের কাঁধেই।

০৬ ১৯

১৯৯২ সালে কাজের খোঁজে দিল্লি থেকে মুম্বই চলে আসেন আশিস। সে সময় কাস্টিং ডিরেক্টরদের কাজ করার রীতি ছিল না। প্রত্যাশীদেরই ঘুরতে হত প্রযোজকদের দরজায় দরজায়। কিন্তু আশিসের কাজ পেতে সমস্যা হত। তাঁকে তির্যক মন্তব্য শুনতে হত গায়ের রং নিয়ে।

০৭ ১৯

তবে এ সব অপমান তাঁর গা সওয়া হয়ে গিয়েছিল বহু দিনই। ছোট থেকেই তাঁকে নামের বদলে ‘কালু’, ‘জল্লাদ’-এর মতো সম্বোধনে ডাকা হত। পরেও তাঁকে শুনতে হল, পর্দায় তাঁর গায়ের রং ভাল লাগবে না। তবে এ সব অপমান আর গায়ে মাখতেন না আশিস। বরং, উপেক্ষা করতেন।

০৮ ১৯

আশিসের প্রথম ছবিতে অভিনয় ১৯৮৬ সালে। কন্নড় ছবি ‘আনন্দ’-এ অভিনয় করেছিলেন তিনি। বলিউডে তাঁর প্রথম কাজ ছিল ‘কাল সন্ধ্যা’ ছবিতে। ১৯৯১ সালে কাজ শুরু হওয়ার পরে ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯৭ সালে।

০৯ ১৯

কেতন মেহতা পছন্দ করতেন আশিসের অভিনয়। তিনি তাঁকে সুযোগ দিয়েছিলেন ‘সর্দার’ ছবিতে। এর পর বিধুবিনোদ চোপড়ার ‘১৯৪২ এ লভ স্টোরি’-তে আশুতোষের ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। দু’টি ছবিই মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯৪ সালে।

১০ ১৯

তবে বলিউডে আশিসের অবস্থান পাল্টে দেয় গোবিন্দ নিহালনীর ছবি ‘দ্রোহকাল’। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে অভিনয় করে তিনি জাতীয় পুরস্কার পান। এর পর সুযোগের জন্য তাঁকে আর অপেক্ষা করে থাকতে হয়নি। মুম্বইয়ের বাণিজ্যিক ছবিতে তাঁর আত্মপ্রকাশ মহেশ ভট্টের ছবি ‘নাজায়েজ’-এর হাত ধরে।

১১ ১৯

ক্রমে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমান্তরাল ছবির পাশাপাশি বাণিজ্যিক ছবিরও মূল স্তম্ভ হয়ে উঠলেন আশিস। খলনায়কের ভূমিকায় তাঁর অভিনয় সমান তালে পাল্লা দিত নায়ক নায়িকা বা অন্য চরিত্রাভিনেতার সঙ্গে।

১২ ১৯

ক্রমে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমান্তরাল ছবির পাশাপাশি বাণিজ্যিক ছবিরও মূল স্তম্ভ হয়ে উঠলেন আশিস। খলনায়কের ভূমিকায় তাঁর অভিনয় সমান তালে পাল্লা দিত নায়ক নায়িকা বা অন্য চরিত্রাভিনেতার সঙ্গে।

১৩ ১৯

বলিউড তাঁকে সম্মান দিলেও আর্থিক দিক দিয়ে বেশ পিছিয়েই ছিলেন আশিস। দীর্ঘ দিন বলিউডে কাজ করার পরেও তিনি থাকতেন ভাড়াবাড়িতে। দক্ষিণের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার পরে সে সমস্যা কিছুটা হলেও দূর হল। তিনি নিজের বাড়ি করলেন মুম্বইয়ে। সেইসঙ্গে তাঁর বাবা মায়েরও বহু অপূর্ণ ইচ্ছে পূর্ণ করেছিলেন।

১৪ ১৯

১৯৯৯ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত আশিস ব্যস্ত ছিলেন দক্ষিণের ইন্ডাস্ট্রিতে। সে সময় বলিউডে অনেক নতুন চরিত্রাভিনেতা উঠে এসেছিলেন। নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকি, পঙ্কজ ত্রিপাঠী তাঁদের মধ্যে ছিলেন অন্যতম। নতুন ধরনের ছবি হচ্ছে দেখে আশিস আবার ফিরে আসতে চান বলিউডে। কিন্তু এ বার আর আগের মতো পরিস্থিতি ছিল না। আশিসের অভিযোগ, তিনি দক্ষিণের ছবিতে চলে যাওয়ার পরে বলিউড আর সে ভাবে ডাকেনি তাঁকে।

১৫ ১৯

তবে সম্প্রতি ওটিটি মঞ্চে নতুন করে অভিনয় শুরু করেছেন আশিস। এখানে সুপারস্টারের তুলনায় প্রযোজন দক্ষ অভিনেতা। সেই চাহিদা অনুযায়ী আশিস আবার উঠে এসেছেন প্রথম সারিতে। দর্শক আবার ফিরে পেয়েছেন ‘মৃত্যুদাতা’, ‘জিদ্দি’, ‘মেজর সাব’, ‘সোলজার’, ‘যমরাজ’, ‘অর্জুন পণ্ডিত’, ‘ত্রিশক্তি’-র আশিসকে।

১৬ ১৯

ব্যক্তিগত জীবনে আশিস বাংলার জামাই। বিয়ে করেছেন অভিনেত্রী শকুন্তলা বড়ুয়ার মেয়ে রাজশ্রীকে। বাঙালি মায়ের প্রভাব তাঁর উপরে বরাবরই গভীর। জীবনসঙ্গিনী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রেও আশিস বেছে নিয়েছেন এক বাঙালি তরুণীকেই।

১৭ ১৯

পর্দার ভয়ঙ্কর খলনায়ক আশিস বাস্তবে এক জন মোটিভেশনাল স্পিকার। তাঁর কথায় অনুপ্রেরণা খুঁজে পান শ্রোতারা। বিভিন্ন কর্পোরেট অফিসে তিনি যান বক্তা হিসেবে। পেশার এই শাখায় সুবক্তা হিসেবে আশিস জনপ্রিয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement