‘অ্যান্টনি কবিয়াল’-এর মুখ্য চরিত্রে গায়ক-অভিনেতা সাহেব চট্টোপাধ্যায় এবং খরাজ মুখোপাধ্যায় ‘ভোলা ময়রা’।
থিয়েটার এবার ড্রইং রুমে বসেই দেখা যাবে, এমনটা কোনওদিন কেউ ভেবেছিলেন? সেটাও হচ্ছে। করে দেখাচ্ছেন ‘টলিউড ইন্ডাস্ট্রি’ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। স্টার জলসার জলসা মুভিজে ১৫ নভেম্বর রাত ৮টায় আসতে চলেছে থিয়েট্রিক্যাল সিনেমা। যেখানে চার দিনে দেখানো হবে চারটি মঞ্চ সফল নাটক। যেগুলি বড় পর্দায় ছবি হিসেবেও কিংবদন্তি। তালিকায় ‘অ্যান্টনি কবিয়াল’, ‘ব্যাপিকা বিদায়’, ‘জয় মা কালী বোর্ডিং’ এবং ‘শ্রীমতী ভয়ঙ্করী’।
প্রসেনজিৎ-যোগ কীভাবে? বুম্বাদার নিডাস প্রোডাকশন অনুষ্ঠানের প্রযোজক। এক ঘণ্টার থেকে একটু বেশি সময় ধরে চলবে এক একটি শো। যার শুরুটাই হচ্ছে ‘অ্যান্টনি কবিয়াল’ দিয়ে। মুখ্য চরিত্রে গায়ক-অভিনেতা সাহেব চট্টোপাধ্যায়। ‘সৌদামিণী’ মঞ্চাভিনেতা শাঁওলি চট্টোপাধ্যায়। খরাজ মুখোপাধ্যায় ‘ভোলা ময়রা’। এ ছাড়াও দেখা যাবে নীল মুখোপাধ্যায়, বিশ্বনাথ বসু, অনির্বাণ চক্রবর্তী-সহ এক ঝাঁক নামীদামি অভিনেতাকে।
অনেকেই ভাবছেন, থিয়েট্রিক্যাল সিনেমা কী? প্রসেনজিৎ জানালেন, ‘‘সিনেমা আর মঞ্চের স্বাদের যুগলবন্দি দর্শকেরা দেখতে পাবেন এই বিশেষ অনুষ্ঠানে।’’ চারটি নাটকই পরিচালনা করছেন কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। যাঁর দাবি, সিনেমা আর নাটককে এক ফ্রেমে ধরতে গিয়ে আগে প্রচুর রিহার্সাল আর পরে তিনটি ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে সেটে। আগামী প্রজন্মের হাতে বাংলার বহুমূল্য সম্পদকে নতুন রূপে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়ে।
কেন এই চারটি নাটক? কেনই বা পরিচালনায় কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়? অ্যান্টনির চরিত্রে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় নয় কেন? যেখানে সৃজিৎ মুখোপাধ্যায়ের ‘জাতিস্মর’-এ তিনি এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
এমনই একাধিক প্রশ্ন উঠে এসেছিল সাক্ষাৎকারে। প্রযোজক প্রসেনজিতের মতে, এই চারটি নাটক পর্দাতেও সফল। সবাই নতুনত্বের পূজারি। তাই চ্যানেল কর্তৃপক্ষ এই ভাবনা জানাতেই এক কথায় রাজি হয়ে যান তিনি।
এর পরেই তাঁর যুক্তি, কমলেশ্বরকে এই দায়িত্ব দেওয়ার কারণ তিনি একাধারে নাট্যকার, মঞ্চ ও পর্দার পরিচালক এবং অভিনেতা।
দাবি, মঞ্চের ফ্লেভার আনতে গেলে গায়ক-নায়ক দরকার। প্রসেনজিৎ একেবারেই গাইতে পারেন না। ফলে, নাটক নির্বাচনের পরেই দুই অভিনেতার নাম প্রথম দিন থেকে নির্দিষ্ট, সাহেব এবং খরাজ।
তিন চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে তিনটি ফর্মে বাংলায় তিন বার এলেন অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি। উত্তমকুমার, প্রসেনজিৎ এবং এখনও পর্যন্ত সর্বশেষ সাহেব চট্টোপাধ্যায়। কী বলছেন সাহেব? আপ্লুত সাহেব এর জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞ নিডাস এবং প্রসেনজিতের কাছে। জানালেন, অভিনয়ের সঙ্গে গান বেশ পরিশ্রমের। তাতেও তিনি সফল প্রসেনজিৎ এবং কমলেশ্বরের সৌজন্যে। একই সঙ্গে তিনি কম্পোজও করেছেন কয়েকটি গান। এবং অনুরোধ জানিয়েছেন, মহানায়কের সঙ্গে কেউ যেন ভুলেও তুলনা না টানেন।
ছবি এবং মঞ্চের মতোই থিয়েট্রিক্যাল সিনেমায় গান প্রচুর। সেই দায়িত্ব পালন করেছে দোহার। এ বছর ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম শতবর্ষ। ‘অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি’ ছবিতে তাঁর উপস্থিতি মনে রাখার মতো। তাঁকেও একই সঙ্গে স্মরণ করল নিডাস প্রযোজনা সংস্থা।
মধুরেণ সমাপয়েৎ-এর দায়িত্ব ছিল চ্যানেল কর্তৃপক্ষের কাঁধে। স্টার জলসার পক্ষ থেকে জানানো হয়, কোনও চ্যানেলের অরিজিনালসে সাধারণত সিরিজ বা নিজস্ব সিনেমা দেখানো হয়। স্টার জলসা সব সময়েই ‘চল পাল্টাই’-এর পক্ষে। তাই ঘরের ভিতরে থিয়েটারকে নিয়ে আসার মতো অকল্পনীয় পরিকল্পনাতেও সফল হতে চলেছেন তাঁরা।