বছরটা তো বেশ ভালই যাচ্ছে আপনার। ঈগলের চোখ, কিরীটি, ঠাম্মার বয়ফ্রেন্ড, অরণ্যদেব... পর পর ছবি।
হ্যাঁ, ঠিকঠাক। চারটে চার রকমের ছবি করেছি। অন্য রকম রোল করতে পেরেছি, ভালই।
ভাগ্যে বিশ্বাস করেন?
খুব। ভাগ্যের থেকেও ভগবানে বেশি বিশ্বাস করি।
তা হলে এখন ভগবানের আশীর্বাদ রয়েছে আপনার ওপর। কী বলেন?
তাই কী? মানুষের পছন্দ হলে সেটাই আশীর্বাদ। তবে আরও অনেক ভাল হতে পারে, হতে পারতও।
হতে পারত কেন?
আমার মনে হয় আমার দক্ষতাকে টলিউড কাজে লাগাতে পারেনি। আমি অনেক ভাল অভিনেত্রী। অনেক ভার্সেটাইল রোল করতে পারি। আমাকে কেউ ব্যবহারই করল না (হাসি)।
এ জন্য রাগ হয়?
আগে খুব রাগ হত, খারাপ লাগত। আমি তো এক বছর অভিমান করে বাড়িতে বসে ছিলাম। কিন্তু অভিমান করে কী আর হয়? খারাপ লাগাটা এখনও আছে। তবে রাগ নেই। রাগ করে কোনও লাভ নেই।
অভিমান করে বাড়িতে বসে ছিলেন অথচ কাউকে কাজের জন্য বলেননি?
বলেছি তো। কৌশিকদাকে (কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়) বলেছি তোমার সঙ্গে কাজ করতে চাই। উনি সবসময় আমার খুব প্রশংসাও করেন। বলেন ভাল অভিনেত্রী। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কাস্ট করেননি।
এমন আর কেউ বলেছেন?
অনেকে। কিন্তু প্রশংসা করলেও কাজ দেন না।
কারা এরা?
নাম বলব না (চোখ বড় করে)।
কেন?
যদি পরে কাজ দেয়। নাম বলে দিলে তাও হয়তো দেবে না (হাসি)। হয়তো আমার মতো চরিত্র তারা লেখেননি। অনেক দিন পর্যন্ত বাচ্চা বাচ্চা ছিলাম। এখন বড় হয়ে গেছি।
সে জন্যই কি ডিফেন্সিভ খেলছেন?
হয়তো।
অন্য রকম চরিত্র করছেন বটে, তবে আপনাকে লিড রোলে পাচ্ছে না কেন দর্শক?
আরবান ছবিতে একটা নায়ক, একটা নায়িকা কনসেপ্ট আর নেই এখন। আর এটাই হওয়া উচিত তো। প্রত্যেকটা চরিত্র ইমপর্ট্যান্ট। দেখা যাক কী হয় পরের বছর, কিছু অন্য রকম কাজ হয়তো করব। রঞ্জন ঘোষের ক্যামেলিয়া প্রোডাকশনে দুটো ইন্টারেস্টিং ক্যারেক্টার করছি। পরমব্রতর ডিরেকশনে একটা ছবি করব। কিরীটি করছি। অরিন্দমদার নেক্সট ছবি নিয়ে কথা হয়েছে।
ঈগলের চোখের গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্সের পর অরিন্দম শীল তা হলে কথা রেখেছেন?
অরিন্দমদা বড় রোলের কথা বলে তো ছিল (মুচকি হাসি)। দেখা যাক। তবে সেই ১৬ বছর থেকেই আমার ইন্টারেস্টিং ক্যারেক্টারের প্রতি খিদে ছিল।
অরুণিমার বয়ফ্রেন্ডদের কী খবর?
মানেটা কী (অট্টহাসি)? আই অ্যাম ভেরি মাচ সিঙ্গল।
ভেকেন্সি চলছে লিখব?
আসলে হ্যাপিলি সিঙ্গল। তবে আমার জন্য মিস্টার পারফেক্ট কেউ যদি আসে তখন ভেবে দেখব।
কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির ভিতরে, বাইরে অরুণিমার এত সম্পর্কের কথা যে শোনা যায়…
আমি আজকাল আর এগুলোতে একদম রেগে যাই না। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির ভিতরে একটা নাম বলুন তো, বেশ অবাক লাগছে।
এই ধরুন অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায়।
এখনও শোনা যায় বুঝি অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার নাম? তা হলে সুদীপার জন্য খুব চাপ আমি বলব (হাসি)।
তার মানে কয়েক বছর আগে যখন আপনাদের নাম একসঙ্গে শোনা যেত তখন রিলেশনে ছিলেন?
না একদমই নয়। আমি কাজ করেছি ওনার সঙ্গে। সুদীপা ওদের বাড়ির দুর্গাপুজোয় আমাকে প্রত্যেকবার যেতে বলে। এখনও যাওয়া হয়নি।
ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল চলছে, গিয়েছেন?
না। ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে আমি কোনও বছর যাই না, ওখানে বড় বড় স্টারদের জায়গা, আমার জায়গা নেই।
সেকি! ডাক পান না বুঝি?
দু’তিন বছর আগেও তো ডাক পেতাম। হয়তো এ বারও চিঠি এসেছে। আমার দেখা হয়ে ওঠেনি। আমি যে খুব একটা যেতে চাই, এমনও তো নয়। আসলে আমি একেবারেই সোশ্যাল নই।
কেন?
ভাল লাগে না। কাজ শেষ হলেই আমি মাথায় ঝুঁটি বেঁধে, চশমা পরে আমার এক স্পেশ্যাল বন্ধুর সঙ্গে সিনেমা দেখতে চলে যাই। সে কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির নয়, আগেই বলে রাখলাম। তবে ও আমার বয়ফ্রেন্ড নয়।
সেই স্পেশ্যাল বন্ধুর সিভিটা দিন না।
সিভি মানে?
কোথায় থাকেন, কী করেন? এই সব আর কী...
আগে লন্ডনে থাকত, এখন কলকাতাতেই থাকে। প্রফেশনালি বিজনেসম্যান। কিন্তু ওকে নিয়ে ইন্টারভিউটা দেব না। হি ইজ নট মাই বয়ফ্রেন্ড (হাসি)। সেটা হলে বলে দিতাম। তবে এটা গ্যারান্টি গিয়ে বলতে পারি ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে কাউকে বিয়ে করব না।
‘ঠাম্মার বয়ফ্রেন্ড’-এ আপনার আর আবিরের কেমিস্ট্রি কেমন জমল?
আবির ইজ আ ডার্লিং। এর আগে ‘অ্যাবি সেন’-এ কাজ করেছি আমরা। এটা সেকেন্ড ছবি। একটা সিন ছিল যেখানে কিডন্যাপ হয়ে যাচ্ছি, কান্নাকাটির সিন। আবির না থাকলে ওটা করতে পারতাম না। এতটাই কমর্ফট জোন রয়েছে আমাদের।
ছবিটার ইউনিকনেস কী?
ঠাম্মা। সত্যিই এটা আমাদের সকলের সমস্যা। বাড়ির সিনিয়রদের আমরা অতটা সময় দিই না। এটা সকলে রিলেট করতে পারবেন। হাসাতে হাসাতে অনেক মেসেজ দেওয়া রয়েছে।
ছোটপর্দায় ফিরবেন আবার?
ভাল নন-ফিকশন পেলে করব। আমি প্রচুর বকবক করতে পারি। কিন্তু ফিকশন নিয়ে এখন একদমই ভাবছি না।