প্রথমে খুনের হুমকি। পরে শুটিং সেটেই হানা দিল সশস্ত্র দুষ্কৃতী। নিরাপদে সরানো হল সলমনকে। ফাইল চিত্র।
কয়েক দিন আগেই অভিনেতা সলমন খানকে প্রাণে মারার হুমকি এসেছিল। এ বার তাঁরই শুটিং সেটে সশস্ত্র দুষ্কৃতীর হানা। যদিও সলমনকে নিরাপদে সেট থেকে বার করে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে পুলিশ। মুম্বই মিরর-এর একটি প্রতিবেদনে এমনই লেখা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার মুম্বইয়ের ‘ফিল্ম সিটি’-তে। সকাল থেকেই হইহই করে শুটিং চলছিল সলমন খানের পরবর্তী ছবি ‘রেস ৩’-র।
বার বার খুনের হুমকি আসায় সেটে উপস্থিত ছিলেন সলমনের দেহরক্ষীরাও। হঠাৎ খবর আসে, সেটে কয়েক জন বহিরাগত ঢুকে পড়েছে। তাদের প্রত্যেকের হাতে আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। শুটিংয়ে ইতি পড়ে। সেট থেকে সলমনকে বার করে সুরক্ষিত তাঁর বান্দ্রার বাড়িতে পৌঁছে দেয় পুলিশ।
আরও পড়ুন:
আত্মঘাতী হয়েছিলেন জনপ্রিয় এই পর্নস্টারেরা
প্যারিসের ফ্ল্যাট থেকে মল্লিকাকে উচ্ছেদের নির্দেশ দিল আদালত
পুলিশের অনুমান, ওই দুষ্কৃতীরা সম্ভবত রাজস্থানের কুখ্যাত গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই-এর দলের লোক। ক’দিন আগেই সলমন খানকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন রাজস্থানের ওই গ্যাংস্টার। জেলবন্দি ওই দুষ্কৃতী হুমকি দিয়েছিলেন রাজস্থানেই খুন করা হবে এই বলিউড অভিনেতাকে।
‘রেস ৩’ ছবির প্রযোজক রমেশ তরানির কথায়, ‘‘সেটে তখন রেস ৩-র শুটিং চলছিল। পুলিশ শুটিং বন্ধ করার কথা বলে। তারা জানায়, অভিনেতাকে দ্রুত বাড়ি পৌঁছে দিতে হবে। এর পর ছ’জন পুলিশ কর্মী সলমনকে তাঁর বান্দ্রার বাড়িতে পৌঁছে দেয়।’’ তবে, সেটে পুলিশ পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গে দুষ্কৃতীদের আর কোনও খোঁজ মেলেনি। অত নিরাপত্তা সত্ত্বেও শুটিং সেটে ওই দুষ্কৃতীরা কী ভাবে ঢুকল এবং পরে কোথায় গা ঢাকা দিল সেই বিষয়ে পুলিশও কিছু নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি।
কৃষ্ণসার হত্যা মামলায় জোধপুর আদালতে হাজিরা দিতে
যাওয়ার পথে সলমন। বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারি। ছবি: পিটিআই।
মুম্বই মিরর-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, কৃষ্ণসার হত্যা মামলার ঘটনাকে ঘিরে সলমনকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিল গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের দলের লোকজন। একটি মামলায় গত বৃহস্পতিবার জোধপুর আদালতে তোলা হয়েছিল লরেন্সকে। ঘটনাচক্রে ওই দিনই কৃষ্ণসার হত্যা মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন সলমন। পুলিশের অনুমান, অভিনেতাকে সামনে পেয়েই সম্ভবত খুনের হুমকি দেন লরেন্স। তিনি বলেছিলেন, ‘‘সলমনকে যদি মারতেই হয়, তাহলে জোধপুরেই মারব। তখন সে বুঝবে আমাদের আসল পরিচয়। এখন, পুলিশ যদি চায় আমি আবার কোনও বড়সড় অপরাধ করি, তা হলে সলমনকে মেরেই সেটা করব। আর মারব জোধপুরেই।’’
রাজস্থান-হরিয়ানায় অপরাধমূলক কাজকর্মে একেবারে উপরের দিকে নাম রয়েছে লরেন্স বিষ্ণোইয়ের। খুনের চেষ্টা, হুমকি, তোলাবাজি, ছিনতাই, অপহরণ-সহ ২০টি মামলা চলছে তাঁর বিরুদ্ধে। পুলিশের অনুমান, সলমনের সঙ্গে লরেন্সের বিরোধের সূত্রপাত ১৯৯৮ সালে কৃষ্ণসার হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। রাজস্থানের বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের মানুষ কৃষ্ণসার হরিণকে পুজো করে। এর সঙ্গে তাঁদের ধর্মীয় ভাবাবেগ জড়িয়ে রয়েছে বলেই মনে করছে পুলিশ। মুম্বই মিরর-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, তাই এই হুমকি এবং পরবর্তীতে শুটিং সেটে হামলা চালানোর চেষ্টা। মুম্বই পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘‘লরেন্সের হুমকিকে মোটেও হাল্কা ভাবে নিচ্ছি না আমরা। সলমনের সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও বাড়িয়ে দেওয়া হবে।’’
সেই সঙ্গে তিনি জানান, এর আগেও বহু বার খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে অভিনেতাকে। কিন্তু দেহরক্ষী ছাড়াই মুম্বইয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় সলমন ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে। এর পর থেকে তাঁর উপর নজরদারি আরও বাড়নো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।