গার্গী-দেবশঙ্কর
এক দিকে তাঁর কলম, অন্য দিকে আদিবাসী জগৎ থেকে শুরু করে রাজনীতির প্রাঙ্গণেও তাঁর স্পষ্ট অবস্থান... সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর অনুপ্রেরণায় তৈরি হচ্ছে অরিন্দম শীলের পরবর্তী ছবি ‘মহানন্দা’। ছবিতে নামভূমিকায় গার্গী রায়চৌধুরী।
গার্গী বললেন, ‘‘মহাশ্বেতা দেবীর আদর্শই এ ছবির উপজীব্য। তাই তাঁর আদলেই ছবিতে আমার লুক। প্রত্যেকেই এই লুকটা নিয়ে ভেবেছে। পরিচালক অরিন্দম শীলের ইনপুট তো ছিলই। মেকআপ আর্টিস্ট সোমনাথ কুণ্ডু, হেয়ারস্টাইলিস্ট হেমা মুনশি সকলে মিলেই তৈরি করেছে ‘মহানন্দা’র লুক। এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে চশমা আর ঘড়ি। আর শাড়ি পরার ধরনও বদলেছে। মহানন্দার বিয়ের পরের পোশাকে পাটভাঙা শাড়ি, আবার মধ্যবয়সে তিনি যখন মানুষের মধ্যে মিশে যাচ্ছেন, তখন তাঁর পোশাকও হয়ে যাচ্ছে সাদামাঠা।’’
ছবিতে বিজন ভট্টাচার্যের আদলে তৈরি বিধান ভট্টাচার্যের চরিত্রে অভিনয় করছেন দেবশঙ্কর হালদার। ‘‘বিজন ভট্টাচার্য আর আমাকে এক রকম দেখতে নয়। তাই হুবহু তাঁকে নকল করা নয়, বরং তাঁর সত্তাটা তুলে ধরার চেষ্টা রয়েছে। তাই লুকে এবং আমার চরিত্রে কিছুটা স্বাধীনতা আমি পেয়েছি।’’ নিজের মতো করেই চরিত্রের প্রস্তুতি নিচ্ছেন দেবশঙ্কর। অন্যান্য চরিত্রে দেখা যাবে ইশা সাহা ও অর্ণ মুখোপাধ্যায়কে।
উত্তর কলকাতার একটি বাড়িতে ছবির শুটিং শুরু হয়েছিল এপ্রিল থেকে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে দিনকয়েক শুটিং হওয়ার পরে তা আপাতত স্থগিত। পরিস্থিতি একটু ঠিক হলে মে মাসের মাঝামাঝি আবার ফ্লোরে ফেরার কথা গোটা ইউনিটের। বীরভূম ও ঝাঁসিতেও এ ছবির শুটিং হবে। ‘ঝাঁসীর রাণী’ উপন্যাসটিও এই ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
‘‘মহাশ্বেতা দেবী ‘ঝাঁসীর রাণী’ লেখার সময়ে ঝাঁসিতে ঘুরে ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে অনেক তথ্য তুলে এনেছিলেন... সেখান থেকেই তাঁর যোগসূত্র তৈরি হয় মানুষের সঙ্গে। আমার ছবিতে ব্যক্তি মহাশ্বেতা ও তাঁর সৃষ্ট চরিত্র মিলেমিশে এক হয়ে যাচ্ছে, তৈরি হচ্ছে মহানন্দা। চরিত্রের লুকও সে ভাবেই পরিকল্পনা করা হয়েছে। তিনি যে বিপ্লবের পথ দেখিয়েছেন, তা-ও দর্শানো হবে ছবিতে। এটুকু বলতে পারি, বহু দিন বাদে এ রকম স্ট্রং রাজনৈতিক ছবি তৈরি হচ্ছে,’’ বললেন পরিচালক অরিন্দম শীল।
এ ছবির লুক তৈরিতে সাহায্য করেছেন মহাশ্বেতা দেবীর পৌত্র তথাগত ভট্টাচার্য।