আরবাজ এবং সলমন
প্র: কেমন আছেন আরবাজ?
আরবাজ: ভাল আছি। কোভিড কেটে গিয়েছে। সব স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে। ভাল লাগছে!
প্র: কলকাতায় কী উদ্দেশ্যে?
আরবাজ: কলকাতা খুব প্রাণবন্ত শহর! আমার আসতে ভাল লাগে। এবার এসেছি জিও কিং অ্যান্ড কুইন মিস্টার অ্যান্ড মিসেস নির্বাচনে। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার অনুষ্ঠানে এলাম। খুব ভাল টিম। ওদের সঙ্গে কাজ করতে বেশ লাগে।
প্র: কলকাতার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন?
আরবাজ: মুম্বাই একটি গোলমেলে শহর জানেন! গোলকধাঁধায় হারিয়ে যাওয়ার ভয় আছে! কিছুটা বিশৃঙ্খলও মনে হয়! সেই তুলনায় কলকাতা, শহরের মানুষজন অনেক শান্ত! কলকাতার ঐতিহ্য, খাওয়াদাওয়া, সংস্কৃতি আমাকে উত্তেজিত করে!
প্রঃ কলকাতায় তো সেই ছোটবেলা থেকে আসছেন কোনও বিশেষ স্মৃতি?
আরবাজ: খুব যে এসেছি তেমন নয়! তবে হ্যাঁ পরিবারের সঙ্গে কয়েকবার। মূলত ছবির প্রচার, কোনও ইভেন্ট কিংবা দুর্গাপুজো, কালীপুজোর সময় আসা হয়! আপনাদের দুর্গাপুজো আমার খুব ভাল লাগে! এত এত লোক হাজির হয় উৎসবে! অপূর্ব সুন্দর সব মণ্ডপ !
প্র: বাংলা ছবি দেখেন?
আরবাজ: খুব একটা না! কেউ বললে তখন ! আপনাদের এক নায়িকার সঙ্গে কাজ করলাম। একটি হিন্দি ছবিতে! ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
প্র: ছবির নাম?
আরবাজঃ 'কাল ত্রিগোরি'। এখনও রিলিজ করেনি, করবে এরমধ্যেই!
প্র: ঋতুপর্নার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
আরবাজ: খুব ট্যালেন্টেড মেয়ে! ওর হিন্দি যে এত অপূর্ব আমার জানা ছিল না! সাধারণত বাঙালিদের হিন্দি উচ্চারণে একটা সমস্যা থেকেই যায়। কিন্তু ঋতুর হিন্দি দারুণ! ওর হিন্দি আমাকে মুগ্ধ করেছে! এখনও মাঝেমধ্যেই আমাদের কথা হয়।
প্র: বাংলা ছবি করতে ইচ্ছে হয়?
আরবাজ: হ্যাঁ অবশ্যই! ভাল অফার থাকলে কেন করবও না! আমি তেলুগু, মালায়ালাম, কন্নড় ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেছি। বাংলার পরিচালকরা যদি আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং চরিত্র নিয়ে আসেন অবশ্যই করবও।
প্র: একাধিক ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেছেন। ‘বলিউড’ এবং ‘আঞ্চলিক ইন্ডাস্ট্রি’র মূলগত কোনও পার্থক্য আছে?
আরবাজ: তেমন কিছু নয়। প্রত্যেকেই একই রকম মনোযোগ, নিষ্ঠা নিয়ে ছবি বানায়! পার্থক্য করে দেয় দুটি বিষয়! ছবির বাজেট এবং বাজারের পরিধি!
প্র: আপনার মনে হয় না অনুরাগ কাশ্যপ অ্যান্ড গ্যাংস, যাদের মধ্যে বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানে, নীরজ গেওয়ানে’র মত একাধিক পরিচালক আছেন। তারা হিন্দি ছবি আমূল বদলে দিয়েছেন। ছবিতে স্টার গুরুত্বহীন! ছোটশহরের গল্পই এখন স্টার!
আরবাজ: গল্প সব সময়ই কিং ছিল! আজ অমিতাভ, অমিতাভ হয়েছেন কারণ তার কাছে ‘শোলে’, ‘দিওয়ার’ এর মত কিছু চিত্রনাট্য ছিল! একজন অভিনেতা সমস্ত ছবিতেই নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেন। কোনও ছবি হিট হয়! কোনওটা সুপার ফ্লপ! পরে তিনি অনুধাবন করেন আসলে ছবির গল্প ততটা ভাল ছিলা না! যে কারণে বক্স অফিসে সাফল্য এল না! চিরকাল কাহিনি স্টার তৈরি করেছে! তবে হ্যাঁ এটা বলতে পারেন গল্পের ধরণ বদলেছে! আগে আমরা বড় শহরের গল্প বলতাম! এখন ছোট শহরের গল্প বলি! আগে হয়ত ল’ইয়ার কিংবা বড় বিজনেস ম্যানের গল্প বলতাম এখন একজন সাধারণ অফিস যাত্রীর গল্প বলছি!(‘লাঞ্চ বক্স’ ছবির ইঙ্গিত করলেন) আমরা বুঝতে শিখেছি দুটোই সমান আকর্ষণীয়!
আরবাজ খান
প্রঃ কিছুদিন আগে শহরুখ খানের একটি মন্তব্য শুনছিলাম! “ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির স্টারডম ফুরিয়ে আসছে! আমরাই বোধহয় লাস্ট জেনারেশন! এরপর স্টার তৈরি হবে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে” আপনার কি মত?
আরবাজঃ এ ভাবে নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়! যদি আপনি দীলিপ সাবের ( কুমার) সময়ে দাঁড়িয়ে বলতেন উনিই শেষ স্টার সেটা ভুল ভাবা হয়ে যেত! এটাও ঠিক তেমন! তবে হ্যাঁ আপনি বলতে পারেন এখন বিষয়টা অনেকটা ক্রিকেটের মতো! আগে একজন প্লেয়ার দীর্ঘদিন ধরে খেলতেন! এখন গেম অনেক ফাস্ট হয়েছে। ফিটনেস জরুরি! তাড়াতাড়ি রিটায়ার করতে হচ্ছে! রাজ সাব, দীলিপ সাব প্রায় আমৃত্যু স্টার ছিলেন! সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্টারডমের স্প্যান কমে আসছে!
প্রঃ আপনার মনে হয় না পরিবারে সলমন খানের মত একজন মহীরুহ আপনাকে অনেকটা সীমায়িত করে দিল! কে বলতে পারে সলমন না থাকলে আরবাজ হয়তো অনেক বড় স্টার হত?
আরবাজঃ আপনি আমাকে লিমিটেড করে দিচ্ছেন! একেবারেই সহমত নই! আমি বড় স্টার নই আপনাকে কে বলল? আমি নিজেকে সফল বলেই মনে করি! প্রচুর ছবি করেছি! আগামীতে আরও করবো। এই তো ‘দাবাং’ এর প্রযোজক হিসেবে আমি একটা এত বড় হিট দিলাম! এটাকে আপনি কাউন্ট করবেন না? (কিছুটা উত্তেজিত হয়ে) আর আপনি কেন ভাবছেন আমি ফুরিয়ে গেছি? কাজের খিদে এখনও প্রবল।
চিনার পার্কে আরবাজ
প্রঃ বেশ! নতুন প্রজেক্ট নিয়ে কিছু বলুন?
আরবাজঃ সদ্য একটা ওয়েব সিরিজের শ্যুটিং শেষ হল। অগস্ট নাগাদ রিলিজ! ‘কাল ত্রিগোরি’র কথা তো আগেই বলেছি! আরও কিছু ভাবনাচিন্তা চলছে। ঠিক সময়ে জানবেন।
প্রঃ সলমন খানের সঙ্গে নিয়মিত কথা হয়?
আরবাজঃ হ্যাঁ দুজনে ফ্রি থাকলে বসে যাই আড্ডা দিতে! এখন ও ‘টাইগার থ্রি’ নিয়ে ব্যস্ত!
প্রঃ বলিউডের কোন পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছে হয়?
আরবাজঃ অনেকে আছেন। রাজকুমার হিরানী, সঞ্জয় লীলা ভন্সালী, কত নাম বলব! সন্ধে হয়ে যাবে!