Entertainment News

ঋতুদা বলেছিল, তুই ডবলডেকার বাসের তলায় চাপা পড়ে মর

‘শুভ মহরত্’। আমি তখন অনেক ছোট। বলেছিল, পাঁচটার সময় আসিস। একটা চরিত্রে তোকে ভেবেছি, বাঙালি নয়, গুজরাতি চরিত্র। তোকে মানাবে।

Advertisement

অপরাজিতা আঢ্য

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৭ ১৩:৩৮
Share:

আজ ঋতুদার জন্মদিন। আলাদা করে মিস করছি, এমনটা নয়। আসলে ঋতুদার থেকে শেখা সব কিছুই তো প্রতিদিন বয়ে নিয়ে চলেছি।

Advertisement

প্রথম ‘বাহান্ন এপিসোড’-এর জন্য ডেকেছিল ঋতুদা। তখন যাইনি, বা তালেগোলে কাজটা হয়নি।

তারপর ‘শুভ মহরত্’। আমি তখন অনেক ছোট। বলেছিল, পাঁচটার সময় আসিস। একটা চরিত্রে তোকে ভেবেছি, বাঙালি নয়, গুজরাতি চরিত্র। তোকে মানাবে।

Advertisement

আমার তো যথারীতি দেরি হয়েছে। সাড়ে পাঁচটা, ছ’টার সময় গিয়েছি ঋতুদার বাড়ি। আমার এখনও মনে আছে, একটা উঁচু চৌকিতে বসে ঋতুদা, আর মেঝেতে চাটুজ্জে। মানে, আমাদের অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। আমাকে ঋতুদা বলল, তুই কি সব জায়গাতেই দেরি করে যাস? আমি বললাম, হ্যাঁ। আবার মুখে মুখে তর্কও করিস? আমি বললাম, হ্যাঁ। তখন বলল, আমার ছবিতে কাজ করলে তো এমন করা যাবে না। আমি তখন বলেছিলাম, আমাকে তা হলে নিও না তুমি।

আরও পড়ুন, বাঙালির জিয়া নস্ট্যাল, দেখা হবে ‘চিলেকোঠা’য়

এর পর প্রথম দিনের শুটিং। তার আগের সারা রাত ধরে ‘এক আকাশের নীচে’ শুটিং করে আমি তো বাড়িতে এসে ঘুমিয়ে পড়েছি। এ বার ঋতুদার ইউনিটের সবাই ফোন করছে। আমার তো ঘুম ভাঙছে না। আমার বর ডাকছে, তবুও ঘুমোচ্ছি। তারপর আমার বরকে ফোন করে ঋতুদা বলেছিল, হ্যাঁরে অতনু, অপরাজিতার কাছে আমার শুটিংটা কি শুটিং নয়? বর তখন ঠেলে পাঠিয়েছিল। শুটিংয়ে গিয়ে পৌঁছতেই আমাকে বলেছিল, তুই ডবলডেকার বাসের তলায় চাপা পড়ে মর। হা হা হা…। আমি বলেছিলাম, এমনি বাসের তলায় পড়লেই তো মরে যাব। ঋতুদার জবাব ছিল, তোর এত বড় চেহারা, ডবলডেকার বাসের তলায় পিষলেই ঠিক হবে। ঠিক এমনটাই সম্পর্ক ছিল আমাদের।

২০১৩। ‘সত্যাণ্বেষী’ ছবির শুটিংয়ে ডুয়ার্সে ঋতুপর্ণ ঘোষ।— ফাইল চিত্র।

ঋতুদার সঙ্গে খুব বেশি কাজের সুযোগ হয়নি। তবে প্রচুর শিখেছি। কী ভাবে কাঁদতে হবে, কী ভাবে হাসতে হবে…। ঋতুদা বলত, কোনও চরিত্রের কী রোগ থাকতে পারে, সেটা যখন বুঝতে পারবি তখন ভাল অভিনয় হবে। ঋতুদার সাজেশনগুলো খুব মিস করি।

আরও পড়ুন, চলচ্চিত্র উৎসবে মেয়েদের কুর্নিশ

আবার মান-অভিমানও ছিল। ‘চিত্রাঙ্গদা’ থেকে আমার খুব ভাল একটা সিন বাদ দিয়ে দিয়েছিল। ডাবিংয়ের সময় যখন জিজ্ঞেস করলাম, ওই ভাল সিনটা ডাব করব না? তখন কী যেন একটা বুঝিয়ে দিয়েছিল। পরে আবার চেপে ধরেছিলাম। তখন বলেছিল, তুই ওই সিনে আমার থেকেও ভাল অভিনয় করেছিস। তাই বাদ দিয়েছি। আমি রেগে গিয়ে বলেছিলাম, তোমার সঙ্গে আর জীবনে কাজ করব না, যাও। এটা কি আর কাউকে বলতে পারব?

অনেক পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছি। কিন্তু জানেন, ঋতুদা বড্ড অন্য রকম ছিল…।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement