অপরাজিতা আঢ্য। ছবি: সংগৃহীত।
মুম্বই গিয়ে একটি সমস্যায় পড়েছিলেন। তবে, সেই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে বিশেষ সময় লাগেনি। তখনই মুম্বইয়ের সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, নিজের হাতে গণেশমূর্তি গড়বেন। সেই ভাবনা অনুযায়ী এ বছর নিজের হাতে মূর্তি গড়ে গণেশের আরাধানা করছেন অপরাজিত আঢ্য। সেই গণেশমূর্তিকেই প্রতিবাদের মাধ্যম করে তুলেছেন তিনি।
সপ্তাহখানেক আগে থেকে গণেশমূর্তি গড়া শুরু করেন অপরাজিতা। গণেশমূর্তির পরনে চিকিৎসকের সাদা অ্যাপ্রন এবং গলায় স্টেথোস্কোপ। গণেশের কোলে একটি ছোট্ট হাতি। অভিনেত্রীর কথায়, “প্রথম থেকেই ভেবেছিলাম, নিজের হাতে মূর্তি গড়ব। এই পরিস্থিতিতে মনে হল, সবার আগে গণেশপুজো হয়। সমস্ত দেবতার পুজোর আগে গণেশের পুজো করতে হয়। মা আসার আগে তাঁর ছেলের কাছেই প্রার্থনা করি। গণেশই তো মানুষকে সিদ্ধি দেন, চেতনা দেন। মানুষের চৈতন্য হোক। তাই, এই প্রতীকী মূর্তি।”
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদী আন্দোলনে শামিল হয়েছেন অপরাজিতা। পথেও নেমেছিলেন অভিনেত্রী। তাই গণেশের কাছেও সেই প্রার্থনাই করছেন তিনি। তাঁর কথায়, “সবার আগে নির্যাতিতার বিচার চাইছি। দ্বিতীয়ত, আমরা সকলে যেন সুরক্ষিত থাকতে পারি। বিচার পেয়ে যেন আমরা জয়ের হাসি হাসতে পারি। আমাদের মধ্যে যেন ভয় জায়গা না করে নেয়। ঈশ্বরের কাছে চাইছি, আমাদের উপর যেন কিছু চাপিয়ে না দেওয়া হয়। পাড়ার দাদা-কাকা বা কোন নেতা কী বলবেন, সেটা নিয়ে যেন না ভাবতে হয়। সঠিক গণতন্ত্র কায়েম হোক, এটাই চাইছি। গণতান্ত্রিক সমাজের নামে প্রহসন যেন বন্ধ হয়। মেয়েদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে যেন কিছু না হয়।”
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদের পাশাপাশি ঝাড়গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা হাতি-হত্যার কথাও উল্লেখ করেছেন অপরাজিতা। সমাজমাধ্যমের দীর্ঘ পোস্টে তিনি লিখেছেন, “প্রার্থনার চেয়ে বড় সত্যি আমার কাছে কিছুই নেই। তাই প্রার্থনা করি, এই সমষ্টিগত দুঃসময় যেন কাটিয়ে উঠি আমরা। অন্ধকার যেন নিপাত যায় অতীব নির্লজ্জতায় সিদ্ধিরূপী, ন্যায়রূপী মহান আলোর সামনে! আমার গণপতির পরনে চিকিৎসকের পোশাক, তাতে ধর্ষকদের হাতের রক্ত-ছাপ; গণেশের কোলে সেই অন্তঃসত্ত্বা হস্তিনী, যার নৃশংস খুন মন থেকে মুছে ফেলতে পারি না কিছুতেই।”