বিচারের দাবিতে সঙ্গীতমহল। ছবি: সংগৃহীত।
শুরুতে একটু বিশৃঙ্খলা। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে মনোমালিন্য। সবটাই নাকি খ্যাতনামীদের নিরাপত্তার কারণে! যাঁদের জন্য এত কিছু সেই দেবজ্যোতি মিশ্র, রূপম ইসলাম, ইমন চক্রবর্তী, অনুপম রায়, লোপামুদ্রা মিত্ররাই এগিয়ে এসে মিলিয়ে দিলেন দুই পক্ষকে। কৌশিকী চক্রবর্তী, উজ্জ্বয়িনী মুখোপাধ্যায়, সপ্তক সানাই দাস, অনীক ধর, সাহেব চট্টোপাধ্যায় গানের পরিবর্তে স্লোগান তুললেন, ‘সব শিল্পীর এক স্বর, জাস্টিস ফর আরজি কর’ ।
পথে সঙ্গীতমহল।
এ ভাবেই দক্ষিণ কলকাতার একটি প্রথম সারির স্কুল থেকে গোলপার্ক পর্যন্ত প্রতিবাদী মিছিলে হাঁটলেন ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত, মনোময় ভট্টাচাৰ্য, অন্তরা চৌধুরী, পটা, রথীজিৎ ভট্টাচাৰ্য, অন্বেষা দত্তগুপ্ত এবং আরও অনেকে। এই মিছিলে পা মেলাতে দেখা যায়নি অদিতি মুন্সিকে।
মিছিলে পা মেলাতে মেলাতেই আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বললেন দেবজ্যোতি। তিনি কথাই শুরু করেন মেয়েদের রাত্রিকালীন কর্মক্ষেত্র নিয়ে। তাঁর সাফ জবাব, “কোনও বিভাজন নয়। ২৪ ঘন্টা মেয়েদের জন্য। বিভেদনীতি মানছি না।” কৌশিকীও গলা ছেড়ে স্লোগান তোলেন। ন্যায়বিচার ছাড়া আর কী দাবি তাঁর? প্রশ্ন রাখতেই প্রতিবাদী আওয়াজ শোনা গেল, “সত্যি সবার সামনে আসুক। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের সামনে নয়। আমরা জানতে চাই, প্রকৃত ঘটনা কী। আর চাই সব স্তরের মেয়েদের নিরাপত্তা। কেউ যেন আর অত্যাচারের শিকার না হন।”
পথ চলায় সহশিল্পীদের পাশে পেয়ে কৃতজ্ঞ রূপম ইসলাম। তিনি বলেছেন, “১৪ অগস্টের রাত থেকে দেখছি। সব স্তরের মানুষ স্বেচ্ছায় পথে নেমেছেন। এই প্রতিবাদে আমিও শামিল। নির্যাতিতা যেন ন্যায় পান।” এই প্রতিবাদী মিছিল নিয়েও নানা মতামত উঠে আসছে।
মিছিলে পা মেলান মীর আফসার আলি, শুভ্রজিৎ দত্তও। মীরের আশ্বাস, “এখনকার বোনেরা আর অবলা নন। তাঁরা সম্পূর্ণা। ভাইদের হাতে রাখি বেঁধে তাঁদের নিরাপত্তা চাইতে হবে না।” তিনি আরও যোগ করেছেন, “বোনেরা এগিয়ে যাক। ভাইয়েরা পিছনে আছেন।” গানের দুনিয়ার মানুষেরা মিছিল শেষ করেন গান দিয়ে। ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে’, ‘পথে এবার নামো সাথী’, ‘আগুনের পরশমণি’ শুনতে শুনতে মিছিলের শেষে ধীর পায়ে হেঁটে চলা এক প্রবীণা বলেন, “এঁরা আছেন, এঁদের গান আছে বলেই কলকাতা এখনও কলকাতাতেই।”