রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হতাশ করেছে, বললেন অনুপম রায়।
রবিবাসরীয় বিকেলে হঠাৎই রাজনীতিমনস্ক অনুপম রায়! তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘একটা সময় মনে হত, আদর্শ থাকলে তবেই রাজনীতি। এখন বহুদিন হল মনে হয়, সামান্য আদর্শ থাকলেও আর যাই হোক, রাজনীতি নয়।' বাবুল সুপ্রিয়র দলবদলই কি এমন ভাবনার হেতু? আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করতেই ক্ষোভ উগরে দিলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী, ‘‘আমি কোনও ব্যক্তি বিশেষের আচরণে ব্যথিত নই। আমায় দেশ এবং রাজ্যের বর্তমানের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হতাশ করেছে। পরিণতবয়স্ক এবং পরিণতমনস্ক হওয়ার পরে রাজনীতিকে এক ভাবে জেনেছি, চিনেছি। ৩৯ বছরে পৌঁছে সেখানে বিরাট বদল দেখছি। এই বদল সত্যিই নিতে পারছি না। সেই জায়গা থেকেই মনে হচ্ছে, দেশ, রাজ্যের রাজনীতিতে আদর্শের আর কোনও জায়গা নেই।’’
অনুপমের আরও বিস্তারিত বক্তব্য, তিনি যে সমাজ বা রাজনীতি নিয়ে ভাবেন না, একেবারেই তা নয়। ‘পরিচয়’ মিউজিক ভিডিয়োতে তিনি এনআরসি-র বিরুদ্ধে মুখ খুলে মনে করিয়ে দিয়েছেন কবি চণ্ডীদাসের শ্বাশ্বত উচ্চারণ, ‘সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই’। সাম্প্রতিক ‘চাকা’ মিউজিক ভিডিয়োয় অনুপম সরাসরি গানে গানে বলেছেন, ‘কোভিড করল ব্যবসা বন্ধ রাজ্য জুড়ে ভোটের গন্ধ, নেতা-অভিনেতা টাকার লোভে সব সুদ্ধ নিয়ে ডোবে।' গীতিকার-সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক-গায়কের মতে, চলতি বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পরে তারকা, রাজনীতিবিদদের দু’বেলা দলবদল তাঁকে অবাক করেছে। তিনি এত দিন জানতেন, যিনি যে আদর্শে বিশ্বাসী আজীবন সেই আদর্শের হয়েই কাজ করবেন, কথা বলবেন। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ তাঁকে যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, আদর্শের বদল শুধুমাত্র সয়ের অপেক্ষা! তিনি এ সব দেখেশুনে অস্বস্তি বোধ করলেও যাঁরা এই পথে হাঁটছেন, তাঁরা কিন্তু স্বাভাবিক।
রাজনীতির এই হাল-হকিকৎ দেখে অদূর ভবিষ্যতে এই দুনিয়ায় কি পা রাখবেন অনুপম? ‘‘আজ পর্যন্ত আমায় কোনও রাজনৈতিক মঞ্চ ডাকেনি। আমিও কোনও কালেই এই বিষয়ে আগ্রহী নই। তার থেকেও বড় কথা, সব কাজ সবার জন্য নয়। সুন্দর হলেই তিনি অভিনয়ে পোক্ত হবেন, এমন আশা করা যেমন ভুল, তেমনই রাজনীতিমনস্ক হলেই রাজনীতি জানবেন, এটাও ঠিক নয়। আমি গানের জন্য জন্মেছি। শেষ দিন পর্যন্ত শিল্পীসত্তা আঁকড়েই বাঁচব’’, স্পষ্ট জবাব অনুপমের।