যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির কৃতী ছাত্র স্বপন চৌধুরীর জীবন বদলে যায় অকস্মাৎ। তবলাই হয়ে ওঠে সাধনার মাধ্যম। ছবি স্বপন চৌধুরীর সৌজন্যে প্রাপ্ত।
পণ্ডিত নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মেঘ’-‘সোহিনী’র এলপি রেকর্ড হোক বা আলি আকবর খাঁ-সাহিবের নজরুল মঞ্চে শেষ অনুষ্ঠানে রাগ পিলুর সেই করুণ আর্তি— সহশিল্পী তিনিই। নিখিলের শেষ অনুষ্ঠানেও মঞ্চে পাশে ছিলেন পণ্ডিত স্বপন চৌধুরী। সম্প্রতি তাঁর মুকুটে যুক্ত হয়েছে নতুন পালক। সঙ্গীতনাটক অ্যাকাডেমির ‘ফেলো’ হয়েছেন তিনি (সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কারের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলবেন না, সেই সম্মান স্বপন পেয়েছেন বহু আগেই।)। স্বপনের আগে হাতে গোনা কয়েক জন বাঙালি এই সম্মান পেয়েছেন। ১৯৫৪ সাল থেকে এই ফেলোশিপ দেওয়া হচ্ছে। প্রথম বারের প্রাপক ছিলেন উস্তাদ আলাউদ্দিন খান। বাঙালি বলতে এই তালিকায় রয়েছেন গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, উদয় শঙ্কর, স্বামী প্রজ্ঞানানন্দ, দিলীপকুমার রায়, শম্ভু মিত্র, তারাপদ চক্রবর্তী, জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ, রবিশঙ্কর, শান্তিদেব ঘোষ, সত্যজিৎ রায়, উৎপল দত্ত, আলি আকবর, বাদল সরকার। শেষ বার কোনও বাঙালি এই পুরস্কার পেয়েছিলেন এক যুগেরও বেশি আগে, সৌজন্যে খালেদ চৌধুরী। সম্প্রতি ৭৮ পূর্ণ করেছেন স্বপন। আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি শিল্পী।
এখনও নিজেকে তবলার ছাত্র বলেন স্বপন। ছবি স্বপন চৌধুরীর সৌজন্যে প্রাপ্ত।
প্রশ্ন: আপনি খুব ভাল ছাত্র ছিলেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছেন অর্থনীতির মতো বিষয় নিয়ে। ভাল রেজাল্ট করেছিলেন। হঠাৎ করে কেন ঠিক করলেন তবলা বাজানোকেই পেশা করবেন?
স্বপন: আমার বাড়িতে গানবাজনার পরিবেশ ছিল। আমার মা নামকরা গায়িকা ছিলেন। মীরা ঘোষ। বিয়ের পর মীরা চৌধুরী। বাবা পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। গানবাজনা খুবই ভালবাসতেন। নিজেও গানবাজনা করতেন। আমার প্রথম গুরু বাবার এক বন্ধু। বাড়িতে দেখতাম মা গান করছেন, আমার গুরু তাঁর সঙ্গে সঙ্গত করতেন। সেই থেকেই আমি গানবাজনার প্রতি একটা টান অনুভব করতাম। ১৯৫০ সালে যখন আমার ৫ বছর বয়স, তখন নাড়া বেঁধে শিক্ষা শুরু হল। আমিও গানবাজনার জগতে আরও বেশি করে ঢুকে পড়লাম।
উস্তাদ আলি আকবর খাঁ-সাহিব এবং পণ্ডিত নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পণ্ডিত স্বপন চৌধুরী। ছবি স্বপন চৌধুরীর সৌজন্যে প্রাপ্ত।
প্রশ্ন: নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আপনার সখ্য সর্বজনবিদিত। কী ভাবে এই সখ্য গড়ে উঠল?
স্বপন: নিখিলদার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ১৯৫৬ সাল থেকে। তিনি সদ্য ফিরেছেন মাইহার থেকে। এর আগে আরও একটা ঘটনার কথা বলতে হবে। সেই সময় আলি আকবর খাঁ-সাহিব আমাদের বাড়ির খুব কাছে থাকতেন। ১৯৫৫-৫৬ সাল নাগাদ উনি মুম্বই থেকে ফিরে কলকাতায় থাকা শুরু করলেন। আলি আকবর স্কুল অফ মিউজ়িক প্রতিষ্ঠা করলেন লেক মার্কেটের কাছে। আমাদের যেখানে বাড়ি, তার কাছাকাছি উনি থাকতেন। যে হেতু আমি পাড়ার ছেলে এবং ওঁর মেজো ছেলে ধ্যানেশ আমার বন্ধু ছিল, আমরা একসঙ্গে খেলাধুলো করতাম, সে হেতু ওই বাড়িতে আমার যাতায়াত শুরু হয়ে যায়। সেই সময় নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরিচয়। আমি তো তখন তবলা বাজাচ্ছি। খাঁ-সাহিবের বড় ছেলে আশিসের সঙ্গে রিওয়াজ করতাম। সেই সুবাদেই নিখিলদা, সরণ রানিজি, চতুরলালজি, ডিএল কাবরা (ব্রিজ ভূষণ কাবরার দাদা)-র সঙ্গে আলাপ হয়। তখনই নিখিলদা এক দিন বলেন, ‘‘এসো না আমার বাড়িতে, একটু রিওয়াজ করব।’’ নিখিলদা আমার বন্ধু ছিলেন। এক অর্থে দাদাও ছিলেন। শুধু যে রিওয়াজ করব বা বাজাব এমনটা নয়। গভীর একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। একসঙ্গে খেতে গিয়েছি, ফিল্ম দেখেছি, ইন্ডিয়া-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট ম্যাচ দেখতে গিয়েছি ইডেন গার্ডেন্সে, আইএফএ শিল্ডের মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ফাইনাল দেখেছি— এ রকম বহু ঘটনা ঘটেছে। নিখিলদার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল দাদা-ছোট ভাই। নিখিলদার বাজনা সম্পর্কে বলব, উনি কখনও কম্প্রোমাইজ় করেননি। ওঁর বাজনার মধ্যে যে ধ্যান ছিল, সেটা উনি চিরকাল ধরে রেখেছেন। লোকজনের ভাল লাগবে কি না, তা নিয়ে ভাবেননি। নিখিলদার সঙ্গে বহু বাজিয়েছি, রেকর্ডিং করেছি, ট্যুর করেছি। ঘটনাচক্রে, নিখিলদার সঙ্গে শেষ যে অনুষ্ঠান ডোভার লেনে, সেটাতেও আমাকেই বাজাতে হয়েছিল। ১৯৮৬ সালের জানুয়ারি। এই ঘটনাটা সবাই হয়তো জানেন না, তাই এখানে বলতে চাই। অনুষ্ঠানের আগে নিখিলদা তানপুরা মিলিয়ে খানিক ক্ষণ চুপ করে বসে থাকতেন। তার পর নিজের যন্ত্র মেলাতেন। আর কারও সঙ্গে কথা বলতেন না। সে দিন গ্রিন রুমে গিয়ে দেখি নিখিলদা চুপ করে বসে আছেন। যন্ত্র বাক্সের মধ্যে। তানপুরাও বাঁধা হয়নি। আমার মনে হয়, এ রকম তো কখনও দেখিনি নিখিলদাকে। ওঁকে বললাম, কী হল? উনি বললেন, ‘‘আমার শরীরটা ভাল লাগছে না।’’ অনুষ্ঠানটা ছিল বিবেকানন্দ পার্কে। পিছন দিক দিয়ে নিখিলদাকে নিয়ে এলাম। রাস্তায় এসে খোলা হাওয়ায় খানিক দাঁড়িয়ে থাকার পর বললেন, ‘‘এ বার আমার ভাল লাগছে। চলো, যন্ত্র মেলাই।’’ আমি তখন ওঁকে বলি, ‘‘নিখিলদা আজ বাজাতে হবে না। লোকে আপনাকে ভালবাসে। সবাই বুঝবে। আমি গিয়ে ঘোষণা করছি।’’ তখন উনি বললেন, ‘‘না ভাই, এটা ঠিক নয়, আমরা তো শিল্পী। যদি কিছু হয়, তা হলে স্টেজের উপরই হবে।’’ এর পর একটা সময় হল, যখন মনে হল স্টেজেই উনি কোলাপ্স করে যাবেন। আমি সে সময় ওঁর হাত চেপে ধরে রাখি। অডিয়েন্স থেকে সবাই বলতে লাগলেন, কী হল…। তখন ওঁকে আবার বলি, ‘‘আপনি বলুন, আপনার শরীর ভাল লাগছে না।’’ উনি সেটা বলার পর দর্শকই বললেন, ‘‘আপনি সেরে উঠুন, আমরা আপনার বাজনা অনেক শুনেছি, আরও অনেক দিন শুনতে চাই।’’ গানবাজনার প্রতি নিখিলদার অন্য ধরনের ভালবাসা ছিল। নিখিলদা তার পর বেশি দিন থাকেননি।
উস্তাদ জাকির হুসেন যাঁকে শ্রদ্ধা করেন। ছবি উস্তাদ জাকির হুসেনের টুইটার থেকে প্রাপ্ত।
প্রশ্ন: আলি আকবর খাঁ-সাহিবের শেষ ডোভার লেনের অনুষ্ঠানেও তো আপনিই ছিলেন সহশিল্পী। প্রথম অনুষ্ঠান কবে হয়েছিল মনে পড়ে?
স্বপন: আমার ১১ বছর বয়স থেকে ওঁর সঙ্গে পরিচয়। সেই সময় থেকে আমাকে খাঁ-সাহিব দেখছেন। এর পর বহু বছর কাটল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছি। সে সময় খাঁ-সাহিবের অনুষ্ঠান ছিল তানসেন মিউজ়িক ফেস্টিভ্যালে। আমি দেখা করতে গিয়েছি। উনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘তুমি কি তবলা বাজাচ্ছ?’’ আমি বললাম, ‘‘বাজাচ্ছি, তবে মাঝখানে পড়াশোনার জন্য একটু ফাঁক পড়েছিল।’’ তখন উনি বললেন, ‘‘আমি তোমার বাজনা একটু শুনতে চাই আজকে। তুমি আজ বিকেলে এসো।’’ সে দিন বিকেলে বাজনা শোনার পর উনি ধ্যানেশকে বললেন, ‘‘তুমি শৈলেন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলো, তানসেনের অনুষ্ঠানে স্বপনই আমার সঙ্গে বাজাবে।’’ শৈলেনবাবু প্রথমে মেনে না নিলেও পরে রাজি হন। সেই বাজনাও জমেছিল খুব। সেটা ১৯৬৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর। মহাজাতি সদনে। সেই আমার প্রথম কোনও বড় অনুষ্ঠানে খাঁ-সাহিবের সঙ্গে বাজানো। তার পর থেকে ধীরে ধীরে তবলার জগতে ফিরে আসি। এই অভিজ্ঞতাটা আমি কোনও দিন ভুলব না। পরের দিকে অনেকেই বলেছেন, খাঁ-সাহিবের জন্যই নাকি স্বপন চৌধুরীর উন্নতি হয়েছে। এটা খাঁ-সাহিবকেও শুনতে হয়েছিল। তো উনি বলতেন, ‘‘তোমার মধ্যে যদি আমি কিছু না দেখতে পেতাম, তা হলে কি তোমাকে আমি ডাকতাম?’’ এর পর তো উনি আমাকে ক্যালিফোর্নিয়া নিয়ে গেলেন। বললেন, ‘‘তুমি আমার স্কুলটা দেখো।’’ আমার জীবনটাও বদলে গেল।
প্রশ্ন: গুরু বা শিক্ষক হিসাবে পরবর্তী প্রজন্মকে কী বলতে চাইবেন?
স্বপন: গুরু বা বিরাট মাপের তবলাবাদক হিসাবে নিজেকে মনে করি না। আমি তবলার এক জন ছাত্র। এবং ছাত্র হিসাবেই থাকতে চাই। কারণ, তাতে অনেক কিছু জানা যায়। অহং ভাব এসে পড়লে সমস্যা হয়। ছাত্র হিসাবে থাকতে পারলে মাঝেমধ্যে বেশ মজাও হয়! কখনও যদি স্টেজে ভুল করি, বা রিওয়াজের সময় ভুল করি, তখন মনে হয়, আমার গুরু সামনে থাকলে বলতেন, ‘‘এই ভুলটা তুমি করলে কী করে?’’ নিজেকে বিরাট কিছু মনে করলে এই ভাবটা আর আসবে না। ফলে আমি চাই এই ভাবটা যেন কখনও আমার মধ্যে না আসে। কারণ, সেটা এসে গেলে আমি আর এগোতে পারব না। এই বিষয়টা আমি গুরুর কাছ থেকে পেয়েছি। নিজে কতটা বিনম্র থাকলে তবে তবলার রং, তার রূপ দেখা যায়, তা আমি গুরুর থেকেই শিখেছি। নতুন ছেলেমেয়ে যারা গানবাজনা করছে, তারা খুবই প্রতিভাবান। তাদের জন্য আমার গর্ব হয়। অনেকে বলতেন, তবলা বিষয়টা আর থাকবে না। কিন্তু নতুনদের দেখে আমার এখন মনে হয়, তবলা থাকবে। আরও অনেক দিন থাকবে। নতুন ছেলেমেয়েদের বলতে চাইব, ভাল করে শেখা উচিত, আর বার বার গুরু বদল না করলেই ভাল। এক গুরুকে বিশ্বাস করে তাঁর কাছে শেখাটাই জরুরি। সেই সঙ্গে নিয়ম করে রিওয়াজ করা। খেয়াল রাখা, মনের মধ্যে যেন অহং ভাব না আসে। সোশ্যাল মিডিয়া বা এই প্রলোভন ছেড়ে তারা যদি মন দিয়ে রিওয়াজ করে, তা হলে তাদের ভবিষ্যৎটা ভাল হবে। ফলের দিকে না তাকিয়ে এখন পরিশ্রম করাটাই তাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
তিন প্রজন্ম। উস্তাদ আলি আকবরের ছাত্র পণ্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার এবং তেজেন্দ্রের পুত্র তথা ছাত্র ইন্দ্রায়ুধের সঙ্গে মঞ্চে স্বপন চৌধুরী। ছবি স্বপন চৌধুরীর সৌজন্যে প্রাপ্ত।
প্রশ্ন: ক্যালিফোর্নিয়াতে আপনার জন্মদিন পালন করা হচ্ছে বেশ ধুমধাম করে। দেশ থেকে অনেক শিল্পী এসেছেন…
স্বপন: ঠিক। এ বার আমার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে ক্যালিফোর্নিয়াতে একটা অনুষ্ঠান হচ্ছে। অনুষ্ঠানটা তিন বছর আগে পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু কোভিডের জন্য করা যায়নি। এখন আমি ৭৮ পার করেছি। ৭৫ বছর পেরনো উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানে ভারত থেকে বহু শিল্পী আসছেন। এর জন্য আমার খুব ভাল লাগছে। স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সবাই যে আসছেন, এই ভালবাসা দেখে আমি খুব আনন্দ পেয়েছি। উস্তাদ জাকির হুসেন, নীলাদ্রি কুমার, পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার, উস্তাদ সাবির খাঁ-সাহিব, কৌশিকী চক্রবর্তী, ইন্দ্রায়ুধ মজুমদার, মহেশ কালে, রাজেন্দ্র গঙ্গানি— এ রকম সব শিল্পী আসছেন। তিন দিন ধরে অনুষ্ঠান হচ্ছে। ইতিমধ্যেই হল ভর্তি। আমাকে এতটা ভালবাসা উজাড় করে দিচ্ছেন দেখে আনন্দ হচ্ছে। তিন দিন ধরে এত বড় মাপের ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠান আমেরিকাতে আদৌ কখনও হয়েছে কি না, মনে পড়ছে না। এটা আমার মস্ত বড় প্রাপ্তি।
প্রশ্ন: কলকাতাকে মিস্ করেন?
স্বপন: আরে ভাই, কলকাতাকে মিস্ না করে পারা যায়! কলকাতায় আমার জন্ম, কলকাতায় আমি মানুষ হয়েছি। কলকাতা আমার ভেতর জড়িয়ে আছে। নাটক, ফিল্ম, সাহিত্য— যার কথাই বলি না কেন, কলকাতাকে ভুলতে পারব না। এখন খুবই মিস্ করি। বিশেষ করে দুর্গাপুজো। প্রায় ৫০ বছর হল কলকাতার দুর্গাপুজো দেখিনি। প্রতি বছর আমি কলকাতা যাই। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকি। ওই তিন মাস আমি খুব আনন্দ করে কাটাই।
প্রশ্ন: বর্তমানে কৃত্রিম মেধা খুব উন্নতি করেছে। আপনি থাকেন ক্যালিফোর্নিয়ায়। ফলে এ সব অনেক কাছ থেকে দেখার সুযোগ পান। ‘আর্টিফিশিয়াল মিউজ়িক’ অন্যতম চর্চিত বিষয় বর্তমানে। এ বিষয়টি নিয়ে আপনার ভাবনা কী? যন্ত্র কি ‘সম’-এ ফেরা বোঝে?
স্বপন: হ্যাঁ। তুমি ঠিকই বলেছ। এখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স খুবই প্রসার লাভ করেছে। চ্যাটজিপিটি নিয়ে তো প্রায়ই পত্রপত্রিকায় প্রতিবেদন দেখি। কিন্তু আমার যেটা মনে হয়, মানুষের মস্তিষ্কে যে ভাবনাচিন্তা আছে, সেটা মেশিন কোনও দিনই নিতে পারবে না। একটা জায়গায় এসে থেমে যাবে। এই যে ফিলিংসটা, বা সাবজেক্টটা বুঝে যে আনন্দ, দুঃখ, কান্না— এই অনুভূতি বা ভালবাসা, এটা কোনও দিন মেশিনের পক্ষে ছোঁয়া সম্ভব নয়। আমি বিশ্বাস করি, ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে কৃত্রিম মেধা খুব বেশি দূর ঢুকতে পারবে না। আমার মনে হয় মানুষের কাছে ওরা হেরে যাবে।
প্রশ্ন: জীবনে কোনও আক্ষেপ আছে?
স্বপন: জীবনে কোনও আক্ষেপ নেই। বাবা-মা এবং গুরুদের আশীর্বাদে যা পেয়েছি, যথেষ্ট। ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা, এই তবলা, গানবাজনা নিয়েই যেন থাকতে পারি। আপনাদের একটা কথাই বলব, আনন্দে থাকুন, শান্তিতে থাকুন আর নিজের কাজটা করে যান।