যিশু সেনগুপ্তর সঙ্গে জুটি বেঁধে আজই মুক্তি পাচ্ছে কোয়েল মল্লিকের নতুন ছবি ‘ঘরে অ্যান্ড বাইরে’।
• মৈনাকের ছবিতে তো এই প্রথম কাজ?
হ্যাঁ। আসলে এত বছর ইন্ডাস্ট্রিতে থাকার পর, এখন মনে হয় নিজের পছন্দে কাজ করি। একটু বেছে বেছে।
• আপনি ছবি বাছতে পারেন, চরিত্র পছন্দ না হলে না বলতে পারেন। কারণ, আপনি রঞ্জিত মল্লিকের মেয়ে কোয়েল মল্লিক, আবার নিসপাল সিংহ রানের স্ত্রী…
দেখুন, ছবি করব বলে ছবি করতে আসিনি। হয়ে গেছে। সময় করিয়ে নিয়েছে। আর হ্যাঁ, আজ আমার এটা বলতে কোনও দ্বিধা নেই যে রঞ্জিত মল্লিকের মেয়ে বলে আমায় কোনও স্ট্রাগল করতে হয়নি। এমনকী, আমায় কোনও দিন স্ক্রিন টেস্ট অবধি দিতে হয়নি। আর রানে তো অসম্ভব সাপোর্টিভ।
• রানেকে বাংলা খাবার খাওয়াতে শেখালেন, না কি আপনি পঞ্জাবি খানার ভক্ত হয়ে গেলেন?
(প্রচন্ড হেসে) জানেন, রানেকে আমি ইলিশ মাছ খাওয়াতে শিখিয়েছি।
• আর আপনি রানের থেকে প্রোডাকশন শিখছেন না?
ওটা রপ্ত করতে সময় লাগবে।
• মানে, কোয়েল মল্লিক পরিচালনায় আসছেন না!
এখনই না। আরও সময় লাগবে।
‘ঘরে অ্যান্ড বাইরে’ ছবির একটি দৃশ্যে কোয়েল।
• কিন্তু এখন তো শোনা যায় আপনি সুরিন্দর প্রোডাকশনে চিত্রনাট্য, চরিত্র নিয়ে মতামত দেন। নতুন চিত্রনাট্য খোঁজেন।
আসলে ইন্ডাস্ট্রিতে এত দিন থাকা, এত কাজ করার পর নিজস্ব বোধ তৈরি হবেই। তবে ক্যামেরার পেছনে এখনই না।
• এই ছবির ট্রেলর দেখে মনে হচ্ছে আপনি আজকের চারপাশে দেখা কোনও এক মেয়ে…
মনে হচ্ছে, নাহ্? থ্যাঙ্ক ইউ! এটাই চেয়েছিলাম আমি আর মৈনাক। এমন এক মেয়ে যে কিন্তু বেশ ডাকাবুকো, ঝগড়ুটে আবার অন্য দিকে বেশ আবেগপ্রবণ।
দেখুন ছবির ট্রেলার:
• ‘ঘরে অ্যান্ড বাইরে’ নাকি প্রেমের গল্প নয়?
নাহ্, আসলে শুধু প্রেমের গল্প বলে এই ছবিটাকে ছেড়ে দিলে হবে না। আমাদের সকলের জীবনেই ছোটবেলার বন্ধুতা একটা বিশেষ জায়গা নিয়ে থাকে। এই ছবিতে এমন দু’জন মানুষ আছে যারা ছোটবেলার ঝড়বৃষ্টি, চাঁদসূর্যর দিন-রাত দেখেছে। ফুল ঝরতে, ফল ফলার গন্ধ শেয়ার করেছে। মনের কথা বলেছে অকপটে। কে কী ভাববে, কখনও ভাবেনি। অথচ, এই মানুষ দুটো এত কাছাকাছি থেকেও নিজেদের ভালবাসার কথা জানতে পারেনি! এই নিয়ে গল্প বলা। গল্প চলা।
ডাকাবুকো, ঝগড়ুটে আবার অন্য দিকে বেশ আবেগপ্রবণ একটি মেয়ের গল্প ‘ঘরে অ্যান্ড বাইরে’।
• এত রকম ভাবে তো ইন্ডাস্ট্রিতে গল্প বলা হচ্ছে। তবুও হাতে গোনা বাংলা ছবি বাজারে সফল। এক জন অভিনেত্রী হিসেবে কী মনে হয়?
আসলে ভাল ছবি, খারাপ ছবি— এ ভাবে বিচার করা যায় না। এ রকমও তো হয়েছে, ছবিটা দেখে মনে হল খুব ভাল। অথচ চলল না! আসলে এত বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে থেকে মনে হয় সব ছবির একটা নিজের ভাগ্য আছে। ছবিও যেন নিজের ভাগ্য নিয়েই আসে। হিসেব কষে, গল্প লিখে ছবি হিট করানো যায় না।
• এ তো দর্শনের কথা হল!
নাহ্, এটা বাস্তব! তবে এই ইন্ডাস্ট্রির জন্য প্রয়োজন আরও মৌলিক গল্পের। সাহিত্য এই ইন্ডাস্ট্রির নিঃসন্দেহে একটা বড় সম্পদ। তবে বাস্তবের গল্প, যা দেখে দর্শকের মনে হবে এটা আমারই তো কথা বা এ রকম একটা চরিত্রকে তো আমি আমার জীবনে দেখেছি, তাতেই কিন্তু অনেকটা কাজ হয়ে যায়।
• আজ প্রিমিয়ারে বাবা আসবেন তো?
হ্যাঁ। বাবা তো আজও আমার শিক্ষক। আজ অবধি কেরিয়ারে যা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাবার সঙ্গে পরামর্শ করে। হয়তো কোনও একটা বিষয় ভুল করেই ফেলতাম। বাবা এসে ঠিক রাস্তা বাতলে দিয়েছে। আমার বাবা-মা আমার এই ছোট দুনিয়ার অর্ধেক আকাশ।
• আর বাকি আকাশ কি রানের?
উত্তরের জায়গায় ঝর্নার মতো হেসে ফেললেন লজ্জায়।
আজও কোয়েল মল্লিক লজ্জায় লাল!