প্রথম সপ্তাহে ‘পাঠান’ এবং ‘কিসি কা ভাই কিসি কি জান’, এই দুই ছবির ব্যবসার তুলনামূলক চিত্রটি কী রকম? ছবি: সংগৃহীত।
চার মাস অতিক্রান্ত। ইতিমধ্যেই মুক্তি পেয়েছে চলতি বছরের দুই প্রতীক্ষিত ছবি। এক দিকে রয়েছে শাহরুখ খান অভিনীত ‘পাঠান’। অন্য দিকে রয়েছে সলমন খানের ‘কিসি কা ভাই কিসি কি জান’। দুই মহাতারকার নিজস্ব অনুরাগী বৃত্ত রয়েছে। ছবি ভাল হোক বা খারাপ, প্রিয় তারকাকে তাঁরা সব সময়েই সমর্থন করেছেন। বক্স অফিসে ‘পাঠান’-এর ফলাফল দেখার পর অনেকেই ‘কিসি কা ভাই...’-এর উপর বাজি ধরেছিলেন। কিন্তু প্রথম সপ্তাহে এই দুই ছবির ব্যবসার তুলনা করলে অন্য চিত্র ধরা পড়বে।
প্রথম দিন: এখনও পর্যন্ত বক্স অফিসে চলতি বছরের সবথেকে বড় ওপেনার ‘পাঠান’। মুক্তির প্রথম দিনেই ছবিটি ব্যবসা করেছিল ৫৭ কোটি টাকার! সেখানে সলমনের ছবি কিন্তু অনেকটাই পিছিয়ে। ইদের মরসুমে ছবি এনেছেন সলমন। প্রথম দিন ছবি ব্যবসা করেছে ১৫ কোটি ৮১ লক্ষ টাকার। উল্লেখ্য, ২০১১ সাল থেকে ইদে সলমনের যত ছবি মুক্তি পেয়েছে প্রথম দিনের ব্যবসার নিরিখে এই ছবির ব্যবসার পরিমাণ কিন্তু সব থেকে কম।
দ্বিতীয় দিন: দিন যত এগিয়েছে ‘পাঠান’ নতুন নতুন নজির সৃষ্টি করেছে। দ্বিতীয় দিনে শাহরুখের ছবির ব্যবসা প্রথম দিনের কালেকশনকে ছাপিয়ে গিয়েছিল। ‘পাঠান’ ব্যবসা করেছিল ৭০ কোটি টাকার। ‘কিসি কা ভাই...’ কিন্তু ২৫ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার ব্যবসা করে।
তৃতীয় দিন: প্রায় ৪০ কোটি টাকার ব্যবসা করে শাহরুখ অভিনীত ছবিটি। রবিবার থাকায় ব্যবসা বেড়ে সলমনের ছবি ২৬ কোটি ৬১ লক্ষ টাকার ব্যবসা করে।
চতুর্থ দিন: শনিবার হওয়ায় চতুর্থ দিনে ‘পাঠান’-এর ব্যবসা বাড়ে ৩৫ শতাংশ। ছবি ব্যবসা করে ৫৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার। অন্য দিকে, সলমনের ছবির ব্যবসায় মারাত্মক পতন ঘটে। তাঁর ছবির ব্যবসা দাঁড়ায় ১০ কোটি ১৭ লক্ষ টাকায়।
পঞ্চম দিন: রবিবার, তাই ‘পাঠান’ এর ব্যবসা ১৪ শতাংশ বাড়ে। ছবি ব্যবসা করে ৬০ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার। সলমনের ছবিতে কিন্তু পতন অব্যাহত। পঞ্চম দিনে ছবির আয় মাত্র ৬ কোটি ১২ লক্ষ টাকা।
ষষ্ঠ দিন: সপ্তাহের শেষে দিকে ‘পাঠান’-এর ভাগ্যে জুটেছিল ২৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। এ দিকে ‘কিসি কা ভাই...’-এর পতন অব্যাহত। ২৬ এপ্রিল বুধবার ছবিটি বক্স অফিসে মাত্র ৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার ব্যবসা করেছে।
মুক্তির পর প্রথম ছ’দিনে দেশের বক্স অফিসে ‘পাঠান’ ৩০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যবসা করেছিল। সেখানে একই সময়ে ‘কিসি কা ভাই...’-এর ব্যবসার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৯ কোটি টাকা।
আগামী দিনে ‘কিসি কা ভাই...’ কেমন ব্যবসা করে, সে দিকে নজর থাকবেই। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল, সলমনের ছবির এই হাল কেন? অতিমারির পর বলিউডকে মূলস্রোতে ফিরিয়ে দিয়েছিল ‘পাঠান’। শাহরুখ সফল হওয়ার পর সলমনকে নিয়েও আশায় বুক বেঁধেছিল বলিউড। কিন্তু বোঝাই যাচ্ছে ‘পাঠান’-এর তুলনায় ‘কিসি কা ভাই...’ শত যোজন পিছিয়ে। এর কারণ কী?
মজার বিষয় ‘পাঠান’-এর পর সিদ্ধার্থ আনন্দকে ইতিমধ্যেই বছরের সবচেয়ে সফল পরিচালক বলা হচ্ছে। বলিউড ছাড়াও তাঁর কাছে দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি থেকে ছবি পরিচালনার প্রস্তাব আসছে। অন্য দিকে ‘কিসি কা ভাই...’ এর পারফরম্যান্স খারাপ হওয়ার জন্য ছবির পরিচালক ফারহাদ সামজিকে দোষারোপ করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, তাঁর হাতছাড়া হচ্ছে একাধিক ছবি।
সলমনের ছবিটি তামিল ছবি ‘ভীরম’-এর রিমেক। ফিল্ম বোদ্ধাদের একাংশের মতে, ইদানীং যেখানে বিষয়বস্তুই ছবিকে টেনে নিয়ে যায়, সেখানে দর্শক আর রিমেক ছবি দেখতে উৎসাহী নন। ‘পাঠান’-এ শাহরুখের লম্বা চুল যেখানে নতুন ফ্যাশনের সূত্রপাত ঘটিয়েছে, সেখানে সলমনের ছবিতে তাঁর দীর্ঘ চুল নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা শুরু হয়েছে। ছবির গানে অভিনেতাকে দেখে অনেকেই ‘শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপন’-এর সঙ্গে মিল খুঁজে পেয়েছেন। শাহরুখ-দীপিকা জুটিতে ভর করে ‘পাঠান’ বাজিমাত করেছিল। কিন্তু পূজা হেগড়ের সঙ্গে সলমনের রয়ায়ন একদমই জমেনি। উল্টে অনুরাগীরা তাঁদের ‘পিতা-কন্যা’ জুটি হিসাবে উল্লেখ করেছেন। মূলত ফ্যামিলি ড্রামা। সেখানে দক্ষিণী বাজারকে ধরার জন্য ভেঙ্কটেশের মতো মেগাস্টারকে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অহেতুক দক্ষিণী রেফারেন্স দর্শকরা ভাল চোখে নেননি।
জুন মাসে মুক্তি পাবে শাহরুখ অভিনীত ‘জওয়ান’। আবার নতুন নজিরের হাতছানি। শাহরুখকে টক্কর দিতে ভাইজানের আপাতত ‘টাইগার’-এর শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া উপায় নেই।