bollywood

ঈর্ষান্বিত রাজেশ খন্না নাকি অমিতাভের সাফল্য ও জনপ্রিয়তা দেখে হতাশায় কেঁদেও ফেলেন

রাজেশ খন্না তখন খ্যাতির মধ্যগগনে। তাঁর প্রতিটি মুহূর্তের মূল্য আকাশছোঁয়া, সে সময় অমিতাভ নামের একজন লম্বা যুবক বলিউডে পা রাখলেন নায়ক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২১ ১৩:২৩
Share:
০১ ২১

বলিউডি নায়কদের মধ্যে প্রথম সুপারস্টার তিনি। আমৃত্যু তিনিই ছিলেন সুপারস্টার। কিন্তু রাজেশ খন্না চোখের সামনে দেখেছেন তাঁর সুপার স্টারডমের মৃত্যু। তিলে তিলে টের পেয়েছেন, একদিন যাঁরা তাঁকে নায়কের আসনে বসিয়েছেন, পরে তাঁরাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তাঁর থেকে।

০২ ২১

বলিউডে রাজেশ খন্নার মসনদ ধীরে ধীরে চলে যায় অমিতাভ বচ্চনের কাছে। রাজেশকে নিয়ে উন্মাদনা চরমে পৌঁছেছিল ভক্তদের মধ্যে। বিশেষ করে তাঁকে নিয়ে মহিলা অনুরাগীদের উত্তেজনা ছিল তীব্র।

Advertisement
০৩ ২১

দূরদূরান্ত থেকে মহিলারা এসে অপেক্ষা করতেন তাঁর বাড়ির সামনে। এক লহমার জন্য তাঁর দেখা পেতে দীর্ঘ প্রতীক্ষাতেও নারাজ হতেন না তাঁরা। লিপস্টিকের দাগে ভরে যেত সুপারস্টারের গাড়ি। প্রাসাদের মতো বাড়িতে পৌঁছত রক্ত দিয়ে লেখা অসংখ্য চিঠি।

০৪ ২১

রাজেশ খন্নার কেরিয়ারে ১৮০টি ছবির মধ্যে শতাধিক ছবিতে তিনি একক নায়ক। তাঁর ফ্লপ ছবিও জুবিলি-সাফল্য পার করত বক্স অফিসে। রাজেশ খন্নাকে ছবিতে নেওয়া মানে প্রযোজক কার্যত নিশ্চিন্ত।

০৫ ২১

রাজেশ খন্না তখন খ্যাতির মধ্যগগনে। তাঁর প্রতিটি মুহূর্তের মূল্য আকাশছোঁয়া, সে সময় অমিতাভ নামের একজন লম্বা যুবক বলিউডে পা রাখলেন নায়ক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে।

০৬ ২১

রাজেশ খন্নার সঙ্গে প্রথম থেকেই গভীর বন্ধুত্ব ছিল জয়া বচ্চনের (তখন জয়া ভাদুড়ি)। দু’জনে অভিনয় করছিলেন ‘বাওর্চি’ ছবিতে। সে সময় জয়ার সঙ্গে আলাপ হয়েছে অমিতাভের। জয়ার সঙ্গে দেখা করতে প্রায়ই ‘বাওর্চি’-র সেটে আসতেন অমিতাভ। শোনা যায়, জয়াকে নাকি অমিতাভের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে নিষেধ করতেন রাজেশ। কারণ তাঁর মনে হত, অমিতাভের কোনও দিন কিছু হবে না।

০৭ ২১

দীর্ঘ দিন স্ট্রাগল করার পরে একটু একটু করে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা তৈরি করে নেন অমিতাভ। রাজেশের সঙ্গে তিনি প্রথম কাজ করলেন ‘আনন্দ’ ছবিতে। দর্শকদের মনে হল, এ বার এমন একজন এসেছেন যিনি টক্কর দিতে পারেন রাজেশ খন্নার সঙ্গে।

০৮ ২১

দু’জনকে আবার একসঙ্গে নেওয়া হল ‘নমকহারাম’ ছবিতে। এই ছবির শ্যুটিংয়ের সময় রাজেশ খন্না সুপারস্টার। সেটে আসতেন নিজের সময় মতো। বেরিয়েও যেতেন তাঁর ইচ্ছা মতোই। ছবিতে অমিতাভের দৃশ্যগুলি আগে শ্যুট করা হয়েছিল। পরে রাজেশ সময় দিলে তাঁর অংশগুলি ক্যামেরাবন্দি করা হয়েছিল।

০৯ ২১

পাশাপাশি অমিতাভের শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা মুগ্ধ করেছিল পরিচালক-প্রযোজকদের। তাঁর ব্যক্তিত্বও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের ‘নমকহারাম’-এর শ্যুটিং যখন শুরু হয়, তখন অমিতাভ ছিলেন সেকেন্ড লিডে। প্রধান নায়ক রাজেশ খন্না। কিন্তু মুক্তির পরে দেখা গেল অমিতাভ চলে এসেছেন মূল আলোকবৃত্তে।

১০ ২১

এই ছবি থেকেই দু’জনের সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু। ‘নমক হারাম’-এর পরে ‘জঞ্জীর’ ছবি থেকে অমিতাভের সুপারস্টারডমের যাত্রার সূত্রপাত। পাশাপাশি রাজেশও নিজের অস্তিত্ব সংকট নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।

১১ ২১

অমিতাভের নিয়মানুবর্তিতা নিয়ে যখন আলোচনা হত, তখন রাজেশ বলেন, ‘‘আমি আমার মুডের চাকর নই। যখন আমার ইচ্ছে হবে, তখন আমি কাজ করব। আমি সুপারস্টার। কেরানি নই, যে সময় মেনে কাজের জায়গায় যাব।’’

১২ ২১

এখানেই শেষ নয়। অমিতাভের উদ্দেশে রাজেশের তির্যক মন্তব্যবাণের ধারা দীর্ঘ ছিল আরও। ‘লাওয়ারিশ’ ছবিতে ‘মেরে অঙ্গনে’ গানের দৃশ্যে অমিতাভকে শাড়ি পরতে দেখে রাজেশ বলেছিলেন, তিনি কোনও দিন ছবিতে শাড়ি পরবেন না।

১৩ ২১

কিন্তু তারকার কুর্সি যে ইতিমধ্যেই হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে, সেটা রাজেশ আরও একবার টের পান ১৯৮২ সালে। সে বছরই মুক্তি পায় অমিতাভের ‘শক্তি’ ছবিটি। ছবির মহরতে আমন্ত্রিত ছিলেন রাজেশ খন্নাও।

১৪ ২১

মহরতে উপস্থিত উৎসাহী দর্শকরা রাজেশকে দেখে অটোগ্রাফ নিতে ভিড় করেন। তখনও সেখানে অমিতাভ ছিলেন না। কিন্তু যেই তিনি সেখানে হাজির হলেন, পুরো ভিড়টাই তাঁকে ছেড়ে চলে গেল অমিতাভের দিকে। তখনও তাঁদের রাজেশের অটোগ্রাফ নেওয়াই হয়নি!

১৫ ২১

ঘনিষ্ঠ মহলের খবর, সে দিন মহরৎ থেকে বাড়ি না ফিরে রাজেশ বান্দ্রায় নিজের অফিসে গিয়েছিলেন। সেদিন তাঁর চোখের জলও নাকি বাধ মানেনি। ‘শক্তি’ সুপারহিট হওয়ার সব ক্রেডিট রাজেশ খন্না দিয়েছিলেন দিলীপকুমারকে। এ ভাবেই বার বার অমিতাভের প্রতি তাঁর ঈর্ষান্বিত মন প্রকাশিত হয়ে পড়ত।

১৬ ২১

এ সময় সব দিক থেকেই রাজেশ খন্নার জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। দুই মেয়েকে নিয়ে তাঁর স্ত্রী ডিম্পল তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। ছবি প্রযোজনা থেকে রাজনীতি, সব কিছুতেই ব্যর্থ হন তিনি।

১৭ ২১

ব্যর্থতা বা কেরিয়ারে ওঠানামা এসেছে অমিতাভের জীবনেও। একটা সময়ের পরে তাঁর কাছে থেকে সাফল্য ক্রমে দূরে সরে গিয়েছে। রাজনীতি এবং প্রযোজনার ক্ষেত্রে তাঁরও অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। কিন্তু ব্যর্থতা থেকেও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন বিগ বি।

১৮ ২১

শোনা যায়, একসময় তিনি নিজে গিয়ে যশ চোপড়ার কাছে কাজ চেয়েছেন। তার পরই যশ চোপড়া ‘মহাব্বতেঁ’ প্রযোজনা করেছেন। এর পর অমিতাভের কাছে এসেছে কেবিসি সঞ্চালনার সুযোগ।

১৯ ২১

কিন্তু নিজের দুঃসময়ে কাউকে পাশে পাননি রাজেশ। তিনি যেচে কাজ চাইতে কারও দরজায় যাননি। এমনকী, তাঁর জামাই অক্ষয়কুমারও সে সময় কাজ করছিলেন অমিতাভের সঙ্গেই। কেরিয়ার এবং ব্যক্তিগত জীবন, সব দিক থেকেই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ছিলেন তিনি।

২০ ২১

শোনা যায়, অমিতাভকে দেখার পরে রাজেশেরও টেলিভিশনে কাজ করার ইচ্ছে হয়েছিল। ‘বিগ বস’-এর জন্য তাঁকে অফারও করা হয়েছিল। তাঁর চাহিদা অনুযায়ী, পারিশ্রমিকের অঙ্ক ছিল কেবিসি-তে অমিতাভের প্রাপ্য টাকার সমান। কিন্তু তাঁর পরিবারের সদস্যদের আপত্তিতে নাকি তিনি শেষ মুহূর্তে এই শো থেকে সরে দাঁড়ান।

২১ ২১

অন্ধকারে চলে যাওয়া পর্দার ‘আনন্দ’ আর আলোয় ফিরতে পারেননি তাঁর ‘বাবুমশাই’-এর মতো। তাঁর কেরিয়ার লম্বা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু অমিতাভ তাঁকে ছাপিয়ে গিয়েছেন। অন্তত সেরকমই মনে করেন দর্শক ও অনুরাগীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement