মিটু নিশানায় অমিতাভ ও সাজিদ। ফাইল চিত্র
জন্মদিনে তিনি বলেছিলেন, ‘‘কোনও মহিলাই যেন দুর্ব্যবহার বা অবাঞ্ছিত আচরণের শিকার না-হন। বিশেষ করে তাঁর কর্মক্ষেত্রে।’’ নীরবতা ভেঙে এ ভাবেই গত কাল শিরোনামে এসেছিলেন অমিতাভ বচ্চন। আজ তাঁকেই নিশানা করলেন হেয়ার স্টাইলিস্ট স্বপ্না ভাবনানি। ‘#মিটু’ নিয়ে স্বপ্না টুইটে লিখেছেন, ‘‘এটা সব চেয়ে বড় মিথ্যে। স্যর, ‘পিঙ্ক’ মুক্তি পেয়ে চলেও গিয়েছে। আপনার আন্দোলনকারী ভাবমূর্তিটাও দ্রুত উধাও হয়ে যাবে। আপনার সত্যিটা শীঘ্রই সামনে আসবে। আশা করি, আপনি (দুশ্চিন্তায়) হাত কামড়াচ্ছেন, কারণ নখ আর অবশিষ্ট নেই।’’
এ দিন সমালোচনার মুখে পড়ে ‘হাউসফুল ৪’-এর পরিচালনার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সাজিদ খান। তাঁর নামে অভিযোগকারিণীদের মধ্যে রয়েছেন অভিনেত্রী সালোনি চোপড়া এবং এক সাংবাদিক। সাজিদ বলেছেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় এবং আমার পরিবার, ‘হাউসফুল ৪’-এর প্রযোজক, ও তারকাদের উপরে চাপ সৃষ্টি হওয়ায় আমি নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে সরে দাঁড়াচ্ছি। তবে সত্যিটা আমি প্রমাণ করব।’’ সাজিদের বোন এবং পরিচালক-কোরিওগ্রাফার ফারহা খানও আজ ভাইয়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। ফারহার বক্তব্য, ‘‘আমাদের পরিবার অত্যন্ত খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আমার ভাই যদি সত্যি এমন কিছু করে থাকে, তার জন্য ওকে দুঃখপ্রকাশ করতেই হবে। যে মহিলাই দুঃখ পেয়ে থাকুন, আমি পাশে আছি।’’
সাজিদের এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ‘হাউসফুল ৪’ থেকে সরে দাঁড়ান নানা পাটেকর। ক’দিন আগেই ছবিটির শুটিং করেছেন তিনি। আজ নানার ছেলে মল্লার বলেন, ‘‘নানাসাহেব কারও অসুবিধে সৃষ্টি করতে চান না।’’ নানাকে নিয়ে শোরগোল শুরু হতে তনুশ্রী দত্তের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ওই ছবির আর এক অভিনেতা অক্ষয় কুমারের স্ত্রী টুইঙ্কল খন্না। তখন তনুশ্রী টুইঙ্কলকে প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘‘আপনার স্বামী কেন নানার সঙ্গে কাজ করছেন?’’ এ দিন সাজিদকে নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন অক্ষয়ও।
সাজিদের সম্পর্কিত ভাই এবং বলিউডের আর এক পরিচালক-অভিনেতা ফারহান আখতার বলেছেন, ‘‘সাজিদের আচরণ নিয়ে এ ধরনের কথা পড়ে কতটা আঘাত পেয়েছি, কতটা হতাশ হয়েছি, বলে বোঝাতে পারব না। আমি জানি না কী ভাবে ক্ষমা চাওয়া উচিত, তবে ওঁকে এ জন্য দুঃখপ্রকাশ করতেই হবে।’’
তার জবাব দিতেই যেন অক্ষয় আজ বলেন, ‘‘তদন্ত না-হওয়া পর্যন্ত হাউসফুল ৪–এর শুটিং বাতিল করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি প্রযোজকদের। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমি সে সব লোকের সঙ্গে কাজ করব না।’’ সরব অভিনেত্রী বিপাশা বসুও। ‘হামশকলস’-এ সাজিদের সঙ্গে কাজ করেছিলেন তিনি। এখন বিপাশার দাবি, ‘‘মহিলাদের প্রতি ওঁর আচরণ খুবই বিরক্তিকর। প্রকাশ্যে অশোভন মশকরা করতেন।’’
এ দিন অভিযোগের কাঠগড়ায় ‘প্যার কা পঞ্চনামা’-র পরিচালক লব রঞ্জনও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিনেত্রী জানিয়েছেন, বিকিনি-দৃশ্যে তাঁকে কেমন দেখাবে, বুঝতে চেয়ে রঞ্জন তাঁকে পোশাক খুলে অন্তর্বাসে দাঁড়াতে বলেছিলেন। ওই অভিনেত্রীর দাবি, তিনি রোলটা পেয়েছিলেন। কিন্তু রঞ্জন তাঁকে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিরক্ত করতেন। শেষ পর্যন্ত ওই ছবির কাজ ছেড়ে দেন ওই অভিনেত্রী। লব রঞ্জন অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।