ইউটিউব এখন ভারতের বিনোদন দুনিয়াতে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অনেক ভারতীয়ই এখন ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পাশাপাশি ইউটিউব ব্লগিংকেও বেছে নিচ্ছে তাদের কেরিয়ার অপশন হিসাবে। এই পেশাই তাদের এনে দিচ্ছে নাম, যশ আর অর্থ। এই মুহূর্তে ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইউটিউবারদের মাসিক আয় প্রায় কয়েক লক্ষ। ভারতীয় ইউটিউবারদের সম্পর্কে এই তথ্যগুলি জানেন কি?
‘বিবি কি ভাইনস’ ইউটিউব চ্যানেলের ক্রিয়েটর ভুবন বাম এখন ভারতীয় সোশ্যাল মিডিয়ার অন্যতম ‘হার্ট-থ্রব’। ২০১৫ সালে তিনি শুরু করেছিলেন তাঁর এই চ্যানেল। মূলত কমেডি কনটেন্ট নিয়েই তিনি ভিডিয়ো পোস্ট করেন চ্যানেলে। তাঁর পাশাপাশি ভাল গানও করেন এই উঠতি তারকা। ‘ওয়ার্ল্ড ব্লগারস অ্যাওয়ার্ড’-এ ভুবন পেয়েছেন ২০১৯ এর সেরা গ্লোবাল এন্টারটেইনার অ্যাওয়ার্ড।
তার কেরিয়ারের শুরুটা হয়েছিল বারে গান গেয়েই। আজ তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে প্রায় এক কোটি ৩০ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার। দিল্লিবাসী ভুবন ভারতের সেরা দশ ধনী ইউটিউবারদের মধ্যে একজন। দামী কোনও ক্যামেরা নয়, মোবইল ফোন হাতে নিয়েই এখনও তাঁর চ্যানেলের ভিডিও শুট করেন ভুবন। তিনি মনে করেন ওটাই তাঁর চ্যানেলের ইউএসপি।
ভারতীয় ইউটিউব জগতে অমিত ভাদানা অন্যতম জনপ্রিয় মুখ। ২০১২ সালে অমিত শুরু করেন তার ইউটিউব যাত্রা। আজ তাঁর সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা এক কোটি ৬০ লক্ষ ছাড়িয়াছে। মূলত কমেডি কনটেন্টের উপরেই ভিডিয়ো পোস্ট করেন অমিত। একে বারে দেশি স্টাইলে তুলে ধরেন দারুণ সব মজাদার কনটেন্ট। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ফলোয়ার সংখ্যা প্রায় দু’কোটি ৪০ লক্ষ।
ভার্চুয়াল দুনিয়ায় জনপ্রিয়তার প্রথম সারিতে আছেন সন্দীপ মহেশ্বরী। অন্ত্রেপ্রেনর, ফটোগ্রাফার, মোটিভেটর, মডেল এবং ইনস্পিরিশনাল স্পিকার সন্দীপ মহেশ্বরী ২০১২ সালে খুলছিলেন তাঁর ইউটিউব চ্যানেল। তাঁর চ্যানেলে রয়েছে প্রায় ২০০ উপর মোটিভেশনাল ভিডিয়ো, জীবন পরিবর্তনের ভিডিয়ো। এই চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা প্রায় এক কোটি ১৫ লক্ষ।
ইউটিউব জগতে অন্যতম পরিচিত মুখ আশিস চনচলানি। ২০০৯ সালে তিনি পা রেখেছিলেন ইউটিউব দুনিয়ায়। আজ তাঁর সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা প্রায় এক কোটি ৩৫ লক্ষ। তাঁর কমেডি ভিডিয়োগুলির মূল কনটেন্ট উঠে আসে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঘটে চলা নানা টুকিটাকি ঘটনা থেকেই। ‘ওয়ার্ল্ড ব্লগারস অ্যায়ার্ড’-এ আশিস পেয়েছেন ২০১৯ এর সেরা কমেডি ইনফ্লুয়েন্সার অ্যাওয়ার্ড।
ভারতের সেরা টেক ইউটিউবারদের তালিকায় শীর্ষে আছেন গৌরব চৌধরি। তাঁর ‘টেকনিক্যাল গুরুজি’ চ্যানেলে তিনি যাবতীয় টেক ও গ্যাজেট সম্বন্ধীয় তথ্য শেয়ার করেন। তাঁর এই চ্যানেলে এখন প্রায়এক কোটি ৪০ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার। এ ছাড়াও নিজের নামেই রয়েছে তাঁর আরেকটি চ্যানেল, যেখানে তিনি করেন নিজের ‘ডেইলি লাইফ ব্লগিং’। ‘ওয়ার্ল্ড ব্লগারস অ্যাওয়ার্ড-এ গৌরব পেয়েছেন সেরা টেক ইনফ্লুয়েন্সার অ্যাওয়ার্ড। ২০১৫ শুরু হয়েছিল ইউটিউবে তাঁর পথচলা।
টেক সম্বন্ধীয় ভিডিয়ো বানিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়েছেন রাকেশ কুমার। তাঁর চ্যানেল ‘ফ্যাক্টটেকজ’-এর সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা এক কোটি ১৪ লক্ষ ছাড়িয়েছে। তিনি এই চ্যানেলে বি়জ্ঞান সম্বন্ধীয় ভিডিয়ো পোস্ট করেন। তাঁর এই কনটেন্ট ইউটিউব দুনিয়ায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
কোটিতে সাবস্ক্রাইবার করার দৌড়ে এখন পিছিয়ে নেই কলকাতার ইউটিউবারাও। কিরণ দত্তের ‘দ্য বং গাই’ ইউটিউব চ্যানেলের সাবসক্রাইবার সংখ্যা প্রায় ১৯ লক্ষ ৩০ হাজার। তাঁর রোস্টিং ভিডিয়ো কনটেন্ট বেশ পছন্দ করছেন ইউটিউবের বাঙালি দর্শকমহল।
এ ছাড়াও ‘ওয়ান্ডার মুন্না’, ‘দ্য লেজি বং’ ইত্যাদি ইউটিউব চ্যানেলগুলি বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে বাংলা ইউটিউবের দুনিয়ায়। হিন্দি কিংবা ইংরেজি ভাষায় নয় বাংলাতেও ইউটিউব ব্লগিং করে সাফল্য পাওয়া যায় তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এরা।(ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)