আমেরিকার বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা হারিয়েছেন অ্যাম্বার। ছবি: সংগৃহীত
কপর্দকশূন্য অ্যাম্বার হার্ড। প্রাক্তন স্বামী জনি ডেপের বিরুদ্ধে মানহানির মামলায় হেরে বিপুল অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিয়ে যাওয়ার আর কোনও উপায় দেখছেন না। দীর্ঘ বার্তায় ঘোষণা করলেন, আর পারছেন না।
‘অ্যাকোয়াম্যান’ অভিনেত্রী লিখেছেন, “আমার বিরুদ্ধে প্রাক্তন স্বামীর দায়ের করা মানহানির মামলার নিষ্পত্তির জন্য আমি অনেক চিন্তাভাবনা করলাম। এ বার এক কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রথমেই বলি, আমি এই পথে আসতে চাইনি। শুধু নিজের সত্যরক্ষা করতে আইনি সাহায্য নিয়েছি। কিন্তু সেটা করতে গিয়েই আমার জীবন ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। সমাজমাধ্যমে আমি যে অপমানের মুখোমুখি হয়েছি, তা নারীদের শিকার হওয়ার পরিবর্ধিত সংস্করণ। এখন, অবশেষে আমার কাছে এমন কিছু আছে, যে জন্য আমি ছয় বছর আগে ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। আর এই জটিলতার মধ্যে থাকতে চাই না।’’
অ্যাম্বার আরও জানান, আমেরিকার বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা হারিয়েছেন তিনি। ইংল্যান্ডের আদালতে অনেক বেশি সম্মানের সঙ্গে মামলা লড়া যায়। সেখানকার বিচারপদ্ধতিও সঙ্গত, সত্যনিষ্ঠ বলে তাঁর দাবি।
ভার্জিনিয়ার আদালতে জনির বিরুদ্ধে মামলা লড়তে গিয়ে সমস্ত সম্পত্তি এবং সঞ্চয় খোয়া গিয়েছে অ্যাম্বারের। তাঁকে হারিয়ে ১১৬ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়েছিলেন জনি, অথবা মামলা তুলে নিতে বলেছিলেন তাঁর বিরুদ্ধে। কিন্তু রাজি হননি অ্যাম্বার। কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল, মামলা চালিয়ে নিয়ে যেতে প্রাক্তন প্রেমিক তথা ধনকুবের ইলন মাস্কের কাছেও হাত পেতেছিলেন অভিনেত্রী। ইলন রাজি না হওয়ায় স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি বিক্রি করে এত দিন টানলেন তিনি। কিন্তু আর সম্ভব নয় বলে জানালেন। শুধু আর্থিক কারণে নয়, অ্যাম্বারের বক্তব্য, “জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে বিচার হলে আমি কোনও দিক দিয়েই দাঁড়াতে পারব না। হেনস্থা সয়ে আমি ক্লান্ত। যদি আমি বিশেষ আবেদনও জানাই, বিচারকও যদি বদলান, তবুও আমি নতুন করে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ সাজিয়ে আবার লড়তে পারব না। সেই মানসিকতা নেই, এ সবের মধ্যে থাকতে চাইছি না।”
তার বদলে নিজের মতো বাঁচতে চান অ্যাম্বার। সময় নষ্ট করে সব হারানোর চেয়ে তাঁর মতে সম্মান নিয়ে, ভাল লাগাটুকু নিয়ে জীবন কাটানো সুখের।
২০১৮ সালে জনির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা এবং গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ এনেছিলেন অ্যাম্বার। এর পরেই অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন জনি। অভিনেতা মিথ্যা বলছেন দাবি করে পাল্টা মামলা করেন অ্যাম্বারও। এই জোড়া মামলার শুনানিতে প্রাক্তন দম্পতির মধ্যে বিস্তর কাদা ছোড়াছুড়ি নজরে আসে। সক্রিয় ভূমিকা নেন দু’পক্ষের অনুরাগীরাও। তবে জনির আইনজীবী অ্যাডাম ওয়াল্ডম্যান এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে অ্যাম্বারের আনা গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ ‘ধাপ্পাবাজি’ ছাড়া আর কিছু নয়। এই বিবৃতিকে অবমাননা বলে উল্লেখ করে জনির আইনজীবীকেও প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এত দিন পর অ্যাম্বার তাঁর নিজের তরফের মামলাটি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানালেন।